জুনাইদ কিয়ামপুরী:
স্বীকৃতির ঘুর্ণাবর্তে পড়ে আমরা কেন ঐতিহ্য ভুলে যাচ্ছি? ইদানীং কওমি অঙ্গনে স্বীকৃতি নিয়ে প্রচণ্ড মাতামাতি হচ্ছে।স্বীকৃতির পক্ষে বিপক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরা হচ্ছে।সকলের কথাবার্তা থেকে অভিন্নভাবে একটি কথাই ফুটে ওঠছে, আর তা হচ্ছে আমরা স্বীকৃতি চাই। মতভিন্নতা হচ্ছে স্বীকৃতির ধরনধারণ নিয়ে। স্বীকৃতি আনার করণকৌশল নিয়ে।
কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি কার হাত ধরে আসবে? কীভাবে আসবে? স্বীকৃতি অর্জনে লাভ বেশি না ক্ষতি বেশি? ইত্যাকার নানা বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্ক চলছে। এই তর্কতদন্ত খারাপ নয়, যদি আমরা এর মাধ্যমে একটি ঐক্যসূত্রে পৌঁছতে পারি।তবে আক্ষেপ হয় এ-জন্য যে, স্বীকৃতির বিপক্ষে কথা বলতে গিয়ে আমরা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছি।সরকারের প্রজ্ঞাপনে যাদের নাম এসেছে, তাদের সবাইকে আমরা দালাল উপাধি দিচ্ছি।অন্যদিকে স্বীকৃতির পক্ষে কথা বলতে গিয়ে মান্যবর মহান বুযুর্গ শায়খুল ইসলাম হজরত আহমদ শফি হাফিজাহুল্লার ব্যাপারেও কূটমন্তব্য উদগীরণ করতে দ্বিধা করছি না।একজন তো বলেই ফেললেন, ‘আহমদ শফি সাহেব এখন আর রায় দিতে সক্ষম নন।এখন রায় দেয় উনার ডাইনের লোকটা’। স্বীকৃতির পক্ষে কথা বলার এখতিয়ার আপনার আছে।স্বীকৃতির দাবী উথাপনের অধিকারও আপনার আছে।কিন্তু এই দাবী তুলতে গিয়ে অন্যকে এট্যাক করার অধিকার তো আপনার নেই।
বহু আগে একটি ব্লগে কওমি বিরোধী একজনের লেখা পড়েছিলাম, দেখলাম সে আমাদের সম্পর্কে লিখেছে, ” ওরা দাবী করে কওমি মাদ্রাসা হচ্ছে আদর্শ মানুষ গড়ার কারখানা।তাদের একটি বিরাট অংশ ফেইসবুক চালায়।ফেইসবুকে তারা যেভাবে একে অপরকে গালিগালাজ করে, ঠুনকো বিষয় নিয়ে কামড়াকামড়ি করে, এগুলো পড়লে বুঝা যায় তাদের আদর্শের দৌড় কতদূর!” কথাটা গোটা কওমি অঙ্গনের প্রতি একটা প্রচণ্ড চপেটাঘাত মনে হয়েছে। কেন ভাই? একটু নিয়ন্ত্রিত হয়ে কি কথা বলতে পারি না? কমেন্ট করতে পারি না।কারো বিরুদ্ধে কিছু বলার আগে অন্তত ৩ বার ভাবুন।প্রথমবার ভাবুন: কেন লিখছেন? বিবেকের আদালতে উদ্দেশ্য যাচাই করুন।দ্বিতীয়বার ভাবুন: যা লিখতে চাচ্ছেন তা কি সন্দেহাতীত নিশ্চিত সত্য? তৃতীয়বার ভাবুন: লেখার শেষ ফলাফল কী? উপকার? না অপকার? এরপর কলম ধরুন।