সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ:
তিনি শালীনতার সাথে নারীকে আচ্ছাদনের সাক্ষাৎকারটি একজন বিশ্ব বরেন্য ইসলামিক স্কলার হিসাবে এমন একটি সময়ে আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমে দিলেন, যখন পর্দাকে আধুনিক বিশ্বে বন্দিশালা,জুলুম ও ভয়ংকর করে দেখানো হচ্ছে। দেশে দেশে নিষিদ্ধের পায়তারা করে ভীতিকর করে তুলা হচ্ছে। সারা পৃথিবী যেন তৃষ্ণার্ত ছিল পর্দা নিয়ে ইসলামি শরিয়তের মৌলিক পরিভাষ্য শুনার জন্য। সাক্ষাতকারটি কালের কন্ঠ মূলত সিএনএন থেকে এনে ছেপেছে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এর সিনিয়র সাংবাদিক ডয়চে ভেলে। পুরো সাক্ষাৎকারটি ইংরেজিতে নেয়া। সে ক্ষেত্রে ‘দৈনিক কালের কন্ঠ’ অনুবাদেও কিছুটা কাট ছাট করেছে।
[বাংলাদেশের কোন শীর্ষ ফকিহ বা ফতোয়া বোর্ড সেটা খেলাফে শরিয়াহ না হওয়াতে কোন আনুষ্টানিক কথা বলেন নি। তা হলে আপনি কে, ধর্ম গেল গেল বলে অর্ধমের চিৎকার করছেন। শরিয়তের মৌলিক বক্তব্য নিয়ে ‘জাহেল মৌলভী’র মতো চেচামেচি করছেন। জ্ঞানপাপী না হয়ে আমাদের জ্ঞান অন্বেষণকারী হওয়া উচিত। পক্ষে বিপক্ষে যৌক্তিক এবং শরীয়া আলোচনা হওয়া উচিত ছিল। তাতে করে নিজেদের এলেমের শান হত। ইসলামের মৌলক বিষয় নিয়ে গালি গালাজ আর ব্যঙ্গ বিদ্রোপ করেতো কেবল ব্রেইনটাকে ডেমেজ করছ।]
তবুও কালের কন্ঠে ছাপা হওয়া অনুবাদ সাক্ষাৎকারটি নিয়ে একটি চমৎকার পর্যালোচনা লিখেছেন, তরুন মুহাদ্দিস, সম্পাদক,লেখক মুফতি Saber Chowdhury
আলোচ্য বিষয়-
১. ভূমিকা
২. সাক্ষাৎকারের মূল বক্তব্য।
৩. দু’টো সুন্দর দিক
৪. বিধানাবলীকে সহজভাবে দেখানোর প্রয়োজনীয়তা
৫. ফুটনোট-১ :
৬. শালীনতার সাথে আচ্ছাদিত করার অর্থ
৭. উৎকটতা ও তার সীমা
৮. ফুটনোট-২ : পর্দার সাথে নারীদের বাইরে বিচরণ ও
শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গী
৯. শাড়ির দ্বারা পর্দা করা হওয়া না হওয়া।
বি. দ্র. : কমেন্টে সাক্ষাৎকারটি দিলাম। যারা এখনো পড়েন নি, এ রিভিউটি পড়ার আগে সাক্ষাৎকারটি পড়ে নিতে পারেন।
★ভূমিকা-
সাক্ষাৎকারটা পুরোটা বারবার পড়েছি। কয়েকজন মিলে রীতিমত পর্যালোচনাও করেছি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে তিনি শরীয়তের দৃষ্টিতে
পর্দার মূল থিমটি তোলে ধরেছেন। তবে, তাঁর বক্তব্যের এক জায়গায় কিছুটা এবং আরেক জায়গায় আমার বেশ অনেকখানি খটকা লেগেছে।
মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ সাহেবের বক্তব্যে আপত্তি উঠানোর মত যোগ্যতা ও অধিকার কোনটাই আমার মত পাবলিকের নেই।কিন্তু আমাকে যেহেতু এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট একটা চিন্তা-বিশ্বাস ও আমল নিয়ে থাকতে হবে, সেহেতু আমার জানাকে, আমার চিন্তাকে যাচাই করে পরিশুদ্ধ করার দরকার আছে। লেখার শেষদিকে শুধুমাত্র এ উদ্দেশ্যেই আমার খটকার বিষয় দুটোও তুললে ধরবো।
★তাঁর পুরো আলোচনার কেন্দ্রীয় বক্তব্য হল- বিভিন্ন দেশে পর্দার জন্য যে প্রচলিত হিজাব, বোরকা বা এ জাতীয় কাপড়ের বিশেষ ভঙ্গি গড়ে উঠেছে এ ব্যাপারে শরীয়তের কোন বাধ্যবাধকতা নাই; বরং শরীয়ত নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য একটা সতর নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। (তিনি পর পুরুষের সামনে মহিলার সতর কী হবে তা বিস্তারিত বলেছেন।) এখন এ অঙ্গ গুলো যে ধরণনের বা যে ডিজাইনের কাপড় দিয়েই ঢাকুক সমস্যা নেই। শর্ত হলো ঢাকার পর গোপন অঙ্গগুলো যেন উৎকটভাবে প্রদর্শিত না হয়।
“শালীনতার সাথে নিজেকে আচ্ছাদিত করা”-র দ্বারা তিনি এটাই বুঝিয়েছেন। এবং এ ব্যাখ্যা ভিতরে তিনি নিজেই দিয়েছেন। আমাদের দৃষ্টিতে শরয়ী পর্দার এ ব্যাখ্যা ১০০ ভাগ সঠিক।
★দু’টো সুন্দর দিক- হযরত মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ সাহেবের এই সাক্ষাৎকারে দু’টো বিষয় বিশেষভাবে ভালো লেগেছে-
১. তিনি পর্দার বিষয়টিকে অত্যন্ত পজেটিভ
ভঙ্গিতে তোলে ধরেছেন। প্রকাশ ভঙ্গিটা এমন হয়েছে, যে কোন পাঠকের কাছে মনে হবে- পর্দা আসলে অত্যন্ত স্বভাবজাত একটি মানবিক বিষয়।ভদ্রতা ও শালীনতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এবং বাস্তবেও তাই।
২. আরেকটি ব্যাপার দেখিয়েছেন- পর্দা আসলে এককভাবে নারীর উপর কোন বাড়তি চাপ নয়; ভব্যতা ও শালীনতার দাবি অনুয়ায়ী নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দা রয়েছে। তবে গঠনগত ও মনোগত ভিন্নতার কারণে দু দলের পর্দার সীমারেখার মধ্যে যৌক্তিক ব্যবধান রাখা হয়েছে।
কোন ধরণের অঙ্গহানী না করে এরকম সহজ ভাষায় সহজতার সাথে ইসলামের বিধানগুলোর বাস্তবতাকে মানুষের সামনে তোলে ধরার দরকার আছে।
এভাবে বলার দ্বারা :
-যারা আন্তরিকতার সাথে পর্দা মেনে চলছেন পর্দার ব্যাপারে তাদের মনে প্রশান্তি বাড়ে।
-যারা মানেন তবে ভেতরে একটা উশখুশ রয়েছে তাদের এ উশখুশ দূর হয়।
-যারা মানেন না তারা মানতে আগ্রহী হন। ভেতরে তাড়না অনুভব করেন।
-যারা ভয় পান, একে যৌক্তিক মনে হওয়ার দ্বারা তাদের ভয় দূর হয়।
-ইসলাম বিদ্বেষীরা পর্দার ব্যাপারে যে ভীতি তৈরী করে তাদের সে পথ বন্ধ হয়। সর্বকালেই ইসলামের বিধানগুলোকে এরকম করে তোলে ধরার দরকার ছিল ও আছে।
★বিধানাবলীকে সহজভাবে দেখানোর প্রয়োজনীয়তা- কেউ ভাবতে পারেন, ইসলামের বিধান তো বিধানই। কঠিন হোক সহজ হোক মানতে হবে।
একে সহজ কইরা দেখানোর কী আছে! জানায়া দিলাম, এবার মানলে মানো, লাভ হবে। না মানলে নাই, জাহান্নামে যাবে। এদেরকে এতো নম নম কইরা বোঝানোর কী দরকার! আমি বলি- দরকার আছে। দরকার না থাকলে কুরআনুল কারীমে হেকমতের সাথে দাওয়াত দেওযার কথা বলা হতো না। আর আলী রা.ও বলতেন না- ‘‘মানুষের সাথে কথা বলো তার জ্ঞান ও আকল অনুযায়ী।তোমরা কি চাও যে মানুষ আল্লাহ ও
তাঁর রাসূলকে মিথ্যেবাদী বলুক?’’ বিশেষত সাক্ষাৎকারটি যখন গ্রহণ করছে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা। বিশেষত যখন বিশ্বজুড়ে পর্দাকে বন্দিশালা, জুলুম ও ভয়ংকর করে দেখানো হচ্ছে।
★ ফুটনোট-১ : শালীনতার সাথে আচচ্ছাদিত করার অর্থ- তিনি বলেছেন- শালীনতার সঙ্গে নিজেকে আচ্ছাদিত করলে হিজাবের প্রয়োজন নেই।কথাটা শুনে, বিশেষত ‘হিজাবের প্রয়োজন নাই’ শুনে মেজাজ খারাপ হয়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন আসবে-
শালীনতা তো একটা ব্যাপক শব্দ। পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড, রুচি, জ্ঞান, মানসিকতা, ও দীনদারির পরিমাণ অনুযায়ী একেক জনের কাছে এর একেক ধরণের সীমারেখা হবে। কঠোর সতর্কতার সাথে শরীয়তের অনুশাসন মেনে চলে এমন ফ্যামিলির কাছে শালীনতার সীমানাটা যত বিস্তৃত হবে ইংরেজী শিক্ষিত- আমরা যাদেরকে আল্ট্রামডার্ন বলি-তাদের কাছে অবশ্যই ততটা বিস্তৃত হবে না। আরো ছোট হয়ে আসবে। উংগা-তোংগা লারেলাপ্পা কোন ডিজাইন না হয়ে মোটামুটি ভদ্র পোশাক হলেই তারা বলবে এটা শালীনতার সাথে ঢেকে চলা। এজন্য তাঁর এ বক্তব্য থেকে প্রত্যেকে নিজের বোঝ অনুযায়ী নানা রকমের অর্থ গ্রহণ করবে। এতে করে পর্দার বিষয়টি বিকৃত হয়ে যাবে। একজন আলেম হিসেবে তাঁর উচিত ছিল সুনির্দিষ্টভাবে দ্ব্যর্থহীন শব্দে শরয়ী পর্দার কোন সংজ্ঞা ও পরিচয় পেশ করা। এভাবে বলে কাজটা তিনি ঠিক করেন নি। আমি মনে করি- প্রশ্নটা যত লম্বা উত্তরটা ততই ছোট।
তিনি তো ‘‘শালীনতা’’ শব্দটা বলেই থেমে যান নাই; সাথে সুনির্দিষ্টভাবে বলে দিয়েছেন-যে কোন কাপড় দিয়ে নারী তার সর্ব অঙ্গ ঢেকে নিবে। এমনভাবে ঢাকবে যেন সতরের অঙ্গগুলো উৎকটভাবে প্রকাশিত না হয়। শরীয়ত তো এটাই বলে। এভাবে ঢেকে নেবার পর কি প্রচলিত এ হিজাবের কোন দরকার আছে? আপনিই বলুন। কেউ আবার জিলবাবের কথা আনতে পারেন। দেখুন, কেউ যদি শরীরে চাটাই পেঁচিয়ে বের হয় তখনও কি তাকে জিলবাব দিয়ে ধরা হবে? জিলবাবও কিন্তু বলা হয়েছে ঐ ‘ঔৎকট্য’-কে ঢাকবার জন্যই। মূল কথা এইটাই, ঢেকে রাখা এবং ঔৎকট্য’-কে চাপা দিয়ে রাখা।
★উৎকটতা ও তার সীমা- এ পর্যায়ে এসে বলা যেতে পারে- উৎকটতার সীমা কতটুকু? কতটুকু হলে বলা যাবে এটা উৎকট আর এটা উৎকট নয়?
এটাও তো একটা ব্যাপক শব্দ। এখানে এসে আমি থামলাম। পরে ভাবলাম আমি নিজে যদি পর্দার সংজ্ঞা দিতে যাই তাহলে কী বলবো? কোন শব্দ দিয়ে বলবো? শব্দেরও তো একটা সীমাবদ্ধতা আছে। খুঁজলে দেখা যাবে সমকালীন অনেক উলামায়ে কেরাম সীমানা নির্ধারণ করতে গিয়ে
এ ধরণের শব্দই ব্যবহার করেছেন- টাইটফিট যেন না হয়, অঙ্গগুলোর উঁচা-নিচা ভাঁজ-ভোজ যেন বোঝা না যায় ইত্যাদি। এগলোর সাথে ‘‘শালীনতার সাথে আচ্ছাদিত করে রাখা যেন অঙ্গগুলো উৎকটভাবে প্রদর্শিত না হয়’’ কথাটা মিলিয়ে দেখুন। দুরকম মনে হবে না।
★ফুটনোট- ২ : পর্দার সাথে নারীদের বাইরে বিচরণ ও শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গী- ‘‘তিনি বলেছেন : যতটুকু দিয়ে তার শালীনতা বজায় থাকে এবং শরীয়তে যতটুকু বলেছে, সেটা করে বের হলে দুনিয়ার কোথাও বিচরণ করতে কোনরূপ সমস্যা হবে বলে আমার মনে হয় না।’’ এখানে এসে আমার একটু খটকা লেগেছে। এমনিতে কথাটা একেবারে নির্দোষ। তবে আমার খটকার জায়গাটা পরিস্কার করছি।
দেখুন, কথাটিকে আমরা দুভাবে বুঝতে পারি।
১.
নারীকে সবসময় ঘরের ভেতরেই থাকতে হবে। কোনভাবেই বাইরে বের হওয়া যাবে না- শরীয়ত এটা বলে না। এটা বললে তো পর্দার বিধান
দেওয়ারই প্রয়োজন ছিল না। বরং, বিধান হল প্রয়োজন হলে আই রিপিট, প্রয়োজন হলে সে প্রয়োজন অনুযায়ী দুনিয়ার যে কোন জায়গায়
শরীয়ত নির্দেষিত পর্দা নিয়ে বিচরণ করতে পারবে। অবশ্য শরয়ী সফর হলে সাথে মাহরাম লাগবে। (পর্য়াপ্ত নিরাপত্তা থাকলে এবং কোন বেকায়দা
অবস্থায় পড়ার আশংকা না থাকলে পর্দা রক্ষা করে শরয়ী সফরে সে মাহরাম ছাড়াও যেতে পারবে।) তো, এটা ভিন্ন বিষয়। এটাতো আছেই। এবং মূল প্রসঙ্গ না হওয়ায় মাহরামের এ বন্ধনীটি এখানে উল্লেখ না করাটা অযৌক্তিক কিছু নয়।
যাই হোক, প্রয়োজন অনুসারে নারী পর্দা করে দুনিয়ার যে কোন জায়গায় যেতে পারার ব্যাপারে শরীয়ত যে অনুমতি দিয়েছে এই সাধারণ বিধানটি বোঝানোর জন্যই তিনি এ কথা বলেছেন। প্রয়োজন ছাড়া নারী ঘরের বাইরে বের হবে না। সবসময় ঘরের ভেতরে থাকবে- ইসলামের এ নির্দেশের বিপরীতে গিয়ে তিনি নারীকে অবাধে বাইরে বিচরণ করার অনুমতি দিচ্ছেন না। হ্যাঁ, এতটুকু বলা যায়- তিনি তাঁর এ বক্তব্যের সাথে
শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে লিমিটযুক্ত ‘প্রয়োজন’-এর বন্ধনীটি যুক্ত করে দেওয়া দরকার ছিল।
২.
তাঁর এ বক্তব্যের বাহ্যিক দিক থেকে কেউ এ মর্মও নিতে পারে- নারীকে সবসময় ঘরে থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। পর্দা নিয়ে চললে সে পুরুষের মতই দুনিয়ার সর্বত্র অবাধে বিচরণ করতে পারবে। এখানে কোন বাঁধা নেই। তিনি যেহেতু এ বক্তব্যের সাথে ‘প্রয়োজন’-এর বন্ধনী যুক্ত করেন নি এবং এ ব্যাপারে আর কোন ব্যাখ্যাও দেন নি তাই এখান থেকে এই ২য় মর্মটি নেবারও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আর এখানেই আমার খটকাটি।
কারণ, আমি দেখি- শরীয়তের মেজাজ হল নারী সর্বদা ঘরে থাকবে। বাইরে যাবে না। কেবল প্রয়োজন দেখা দিলে যেতে পারবে। (অবশ্য এ প্রয়োজনের সংজ্ঞা কি, কতটুকু প্রয়োজন দেখা দিলে বলা যাবে এটা গ্রহণযোগ্য প্রয়োজন। এর কারণে বাইরে যাওয়া যায়- এ ব্যাপারে আমার জানামতে এতোটা কড়াকড়ি আরোপ না করে বিষয়টা অনেকটা সুস্থ রুচির বিবেচনার উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।) বাই দ্যা ওয়ে, কথা হল নারী সর্বদা ঘরে থাকবে এটাই শরীয়তের দাবি।
وقرن فى بيوتكن ولا تبرجن تبرج الجاهلية الاولى ( سورة الاحزاب : 33)
অর্থ : ……..
عن عائشة، قالت: خرجت سودة بعدما ضرب عليها الحجاب لتقضي حاجتها….. فرآها عمر بن الخطاب، فقال: يا سودة، والله ما تخفين علينا، فانظري كيف تخرجين…. فقال: إنه قد أذن لكن أن تخرجن لحاجتكن
صحيح مسلم : 2170
অর্থ : পর্দার বিধান নাযিল হবার পর হযরত সাওদা রা. প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারার জন্য বাইরে বের হলেন। …
(হযরত উমর রা.এভাবে বাড়ির বাইরে বের হওয়ার কারণে আপত্তি জানালে সাওদা রা. এসে রাসূলুল্লাহ সাল্রাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নালিশ জানালেন। তখন ওহী এলো।) … এরপর তিনি বললেন : ( হে নারীগণ!) আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। (সহীহ মুসলিম : ২১৭০)
বলা বাহুল্য, ঘটনাটি যেহেতু পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পর ঘটেছে, তাই বাইরে বের হওয়ার অনুমতিটিও পর্দার সাথেই হবে। লক্ষ্যণীয়,
পর্দার সাথে বের হওয়ার অনুমতিটি কিন্তু অবাধ নয়; হাজত বা প্রয়োজনের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এরকম আরো অনেক দলীলের আলোকে
মুফতি শফী রহ. বলেছেন- পর্দার তিনটি স্তর রয়েছে। প্রথম স্তর হল : হিজাবুল আশখাস বা নারীর কায়ার পর্দা। অর্থাৎ নারীকে দেখাই যাবে না। ঘরে থাকবে।
উলামায়ে কেরামের একজন মুকাল্লিদ হিসেবে কুরআন ও হাদীসের আলোকে তাদের এ সিদ্ধান্তকে আমি মান্য করি। যেহেতু হযরত মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ সাহেবের আলোচ্য বক্তব্যটি থেকে এ ২য় মর্মটি নেবারও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, তাই আমার কাছে এ বক্তব্যটিতে কিছুটা খটকা লাগছে। অবশ্য প্রথম মর্মটি নিলে তখন আর কোন সমস্যা নেই। এবং প্রথমটির সম্ভাবনাই আমার কাছে বেশি মনে হয়। বাকি আল্লাহ তাআলা ভাল জানেন।
চলবে…