রশীদ জামিল:
অনেকদিন আগে একবার বলেছিলাম, বাংলাদেশে দু’টি চেতনা বহমান। একটি হল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। অন্যটি দেওবন্দের চেতনা। এককথায় দু’টিই ছিল স্বাধীনতার চেতনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল পাকি খেদাও আন্দোলন। দেওবন্দের চেতনা ছিল ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলন। আজকাল দু’টি চেতনাকেই যাতনায় পরিণত করা হচ্ছে! আমিই শুধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ঠিকাদারী করব! আর কেউ করতে পারবে না! দেওবন্দের নামে শুধু আমিই স্লোগান দেব, আর কাউকে দিতে দেয়া হবে না। কঠিন ব্যারাম!
কোনো সন্দেহ নাই নামাজ ইসলামের প্রধান ইবাদত। কিন্তু কেউ যদি ভাবে ‘নামাজই ইসলামের একমাত্র ইবাদত’, তাহলে সে যে পরিমাণ বুদ্ধিমান, দারুল উলুম দেওবন্দ আহলে হক্ব উলামায়ে কেরামের অন্যতম ঘাঁটি হলেও কেউ যদি ভাবে, ‘দেওবন্দই আহলে হক্ব’র একমাত্র ঠিকানা’, তাহলে সেও সেই পরিমাণ বুদ্ধিমান! কারো পছন্দ হলে হল, নাহলে নাই, এটাই সত্যকথা। এই সত্য মাথায় থাকলে কামড়া-কামড়ির কারণ ছিল না।
আমি দেওবন্দকে ভালোবাসি। তারমানে এটা কেনো হবে যে, আমিই একা ভালোবাসবো! আর কারো ভালোবাসার অধিকার থাকতে পারবে না! সবকিছুতে আমি এবং আমরাই কেনো? তাঁরা এবং অন্যরা হলে সমস্যা কী!
বাংলাদেশে কি দারুল উলুম দেওবন্দের কোনো সাব এজেন্সি আছে? আমার জানা নাই। থাকলে জানা থাকত। মৌলিকভাবে দেশের (প্রায়) সবগুলো কওমি মাদরাসাই ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের চেতনা লালন করে(বলে দাবি করা হয়!) এই অর্থে সবাই যদি দেওবন্দের নামে স্লোগান দিয়ে আরাম পায়, তাতে আমার কষ্ট পাওয়ার দরকার কী! আমি কেনো ক্ষুব্ধ হব? বিক্ষোব্ধ এই ‘আমি’ আমার। তিনি এবং তাঁরাও আমার। শরীর যদি আমার হয়, হাঁটুটা কি পাশের বাড়ির? কোপটা যখন মারতে যাই, বিবেক তখন কোথায় যায়?
চেতনার চর্চা চলুক উদারতান্ত্রিক চলনে,
ইত্তেফাক মা’আল ইখতেলাফের অনিবার্যতায়।