শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ৯:২৫
Home / আন্তর্জাতিক / জার্মানিতে গড়ে উঠছে প্রথম মুসলিম কবরস্থান

জার্মানিতে গড়ে উঠছে প্রথম মুসলিম কবরস্থান

Kaborভুপার্টাল শহরের ইহুদি কবরস্থানের কাছে দাঁড়িয়ে একটি তৃণভূমির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন সামির বুয়াইসা, এখানেই এটি স্থাপন করা হবে৷ কিছুটা গর্বের সুর শোনা যায় মরক্কান বংশোদ্ভূত সামিরের কণ্ঠে৷

২০১৪ সালের গোড়ার দিকে একটি নতুন আইন পাশ হওয়ার কথা৷ এই আইনের বলে জার্মানিতে প্রথম মুসলিম কবরস্থান তৈরি করা হবে৷ খ্রিষ্টান ও ইহুদি কবরস্থানের কোল ঘেঁষেই প্রতিষ্ঠিত হবে এটি৷ প্রস্তুতিপর্ব শুরু হয়ে গেছে৷ আশা করা যায় বছর দুয়েকের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে কাজটা৷

নতুন প্রজন্মের চিন্তা-ভাবনা

সামিরের মা-বাবা এসেছেন মরক্কো থেকে৷ সামির নিজে দ্বিতীয় প্রজন্মের সন্তান৷ বসবাস করছেন ভুপার্টালে৷ শহরটির ৩৪০০০০ অধিবাসীর প্রায় ১০ শতাংশ ইসলাম ধর্মের অনুসারী৷ সামির জানান, ‘‘আমাদের মা-বাবা ছুটি হলেই ছোটেন পুরোনো স্বদেশের উদ্দেশ্যে৷ আমাদের প্রজন্মকে সেভাবে টানে না পূর্বপুরুষের দেশ৷”

বিভিন্ন দেশ থেকে আসা তথাকথিত অতিথি শ্রমিকরা বছরে অন্তত একবার ছুটিতে দেশে যান৷ সামির ৪/৫ বছরে একবার বেড়াতে যান মরক্কোতে৷ এর ফলে সেখানে সমাহিত আত্মীয়স্বজনের কবর পরিচর্যা করা কঠিন হয়ে পড়ে৷

‘‘আমরা বিশ্বাস করি মৃত্যুর পর অন্য এক জীবন এগিয়ে যায়৷ প্রয়াতরা কোনো না কোনোভাবে পরিবারের মধ্যে জড়িয়ে থাকেন৷ সে জন্য তাঁদের কবরটা কাছে হলে ভাল হয়৷” জানান সামির৷

জার্মানিতে সমাহিত হতে চান অনেক মুসলমান

এ কারণে জার্মানিতে জন্ম নেওয়া অনেক মুসলমান মৃত্যুর পরও এখানে সমাহিত হতে চান৷ কিন্তু ধর্মীয় ঐতিহ্য ও দায়দায়িত্বের কারণে সবসময় তা সম্ভব হয় না৷ যদিও ভুপার্টালের নগর কবরস্থানে মুসলমানদের জন্য আলাদা একটি জায়গা রাখা হয়েছে৷

কিন্তু বিশেষ করে একটি বিষয় মুসলিমদের মনে ভীতির সঞ্চার করে৷ এই প্রসঙ্গে সামির বলেন, ‘‘আমাদের ধর্মে রয়েছে অনন্তকালের অধিকার৷” একটি কবর সীমিত সময়ের জন্য হতে পারে না৷ কিন্তু জার্মান কবরস্থানগুলিতে একটি কবরের জায়গা ২৫ বছরের জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়৷ পরে আত্মীয়স্বজনরা এই সময়সীমা বাড়াতে পারেন৷

তবে মুসলমানদের আলাদা কবরস্থানে কবর দিতে হলে খরচ কিছুটা বেশি হবে৷ তবে এই কবরস্থানের অর্থায়ন কী ভাবে হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ খরচের অনেকটাই বহন করা হবে দানের টাকায়৷ ভুপার্টালের ১৫টি মসজিদ সমিতি এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে ইচ্ছুক৷ নগর কর্তৃপক্ষ খরচে অংশ গ্রহণ না করলেও বিষয়টিকে উদার দৃষ্টিতে দেখছে৷ কেননা মুসলিম সম্প্রদায় এখানকার সমাজে সম্পৃক্ত হওয়ার ব্যাপারে বিশেষ অবদান রাখছে৷ ভুপার্টালে ধর্মীয় বৈচিত্র্যের এক ঐতিহ্য রয়েছে৷ বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক সহাবস্থান, সহনশীলতা ও সংলাপের প্রচলন রয়েছে৷ ভুপার্টালের ইন্টিগ্রেশন দপ্তরের প্রধান হান্স-ইউর্গেন লেমার বলেন, ‘‘আমার জানা মতে, ভুপার্টালের মতো আর কোনো শহর নেই, যেখানে এত ধরনের ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস৷ এছাড়া বার্লিনের পরই সবচেয়ে বেশি কবরস্থান রয়েছে আমাদের শহরে৷ এদিক দিয়েও ধর্মীয় বৈচিত্র্য লক্ষণীয়৷”

সৌজন্যে : ডিডব্লিউ

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...