সম্প্রতি ইউরোপে একের পর এক হামলার উদ্দেশ্য যদি খ্রিষ্টান ও মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে থাকে, সেই ষড়যন্ত্র বানচাল করতে রবিবার এক অভিনব উদ্যোগ দেখা গেলো৷ ফ্রান্স ও ইটালিতে অসংখ্য মুসলিম গির্জায় প্রার্থনা করলেন৷
গত মঙ্গলবার ফ্রান্সের রুয়্যাঁ শহরে ৮৫ বছর বয়স্ক গির্জার যাজককে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল চরম ইসলামপন্থি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ দুই কিশোর৷ সেই ঘটনার পর শহরের খ্রিষ্টান সমাজের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে এগিয়ে এলেন মুসলিমরা৷ রবিবার গির্জায় প্রার্থনাসভায় উপস্থিত ছিলেন মুসলিম সমাজের প্রায় ১০০ প্রতিনিধি৷ রুয়্যাঁ শহরের আর্চবিশপ ডোমিনিক ল্যব্র্যাঁ সব খ্রিষ্টানদের নামে তাঁদের ধন্যবাদ দেন৷
দক্ষিণের নিস শহরেও দেখা গেল একই দৃশ্য৷ স্থানীয় ইমাম ওটামান আইসাউয়ি এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ক্যাথলিক মাস বা প্রার্থনায় অংশ নেন৷ তিনি বলেন, আতঙ্ক ও বর্বরতার জবাব হলো ঐক্য৷
ফ্রান্সের বর্দো শহরে নোত্র দাম গির্জায় স্থানীয় ইমামের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানাতে গিয়ে রেভারেন্ড জঁ রুয়ে বলেন, এমন এক দিনে মুসলিমদের দেখানো উচিত, যে আমরা ইসলামের সঙ্গে কট্টর ইসলামপন্থি ভাবধারাকে মিলিয়ে ফেলি না, যেমনভাবে মুসলিমের সঙ্গে জিহাদিদের গুলিয়ে ফেলি না৷
স্বয়ং পোপ ফ্রান্সিস-ও এ দিন স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ইসলাম মানেই সন্ত্রাসবাদ নয়৷ তাঁর মতে, ইসলামের নামে হিংসার কথা বললে ক্যাথলিক ধর্মের নামে হিংসার কথাও বলতে হয়৷ পোপ মনে করিয়ে দেন, প্রতিদিন ইটালির সংবাদপত্রে অসংখ্য হিংসাত্মক ঘটনার খবর পড়েন তিনি৷ যারা এমন কাজ করে, তারাও ক্যাথলিক৷ উল্লেখ্য, ফ্রান্সের রুয়্যাঁ শহরে যাজক হত্যার ঘটনার নিন্দা করার সময়ে পোপ ‘ইসলাম’ শব্দটি মুখে আনেন নি৷ তাঁর মতে, সব ধর্মেই হাতে গোনা কিছু মৌলবাদী রয়েছে৷ ক্যাথলিক ধর্মও তার ব্যতিক্রম নয়৷
ইটালিতেও রবিবার রোম, মিলান, নেপলস ও পালের্মো-সহ একাধিক শহরে মুসলিমরা গির্জায় গিয়ে প্রার্থনাসভায় অংশ নেন৷
সৌজন্যে : ডয়েচে ভেলে