ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক : কমাশিসা-র ক্রেস্ট পেলাম। আমি কওমি ঘরানার লোক। কওমি মাদ্রাসা মনেপ্রাণে ভালোবাসি। সে হিসেবেই হয়তো আমাকে এ ক্রেস্টটি দেয়া হয়েছে। আমি বিদেশে ১২ বছর লেখাপড়া করেছি। দেশে ফেরার পর কওমি মাদ্রাসা নিয়ে ভেবেছি অনেক। সংস্কারের স্বপ্ন দেখেছি। কথা না বলে কাজ করে উদাহরণ স্থাপনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু আকাবিরিনের ন্যায় পাহাড় সমান ধৈর্য না থাকায় আমার স্বপ্নের উদাহরণটি উড়ে গেছে দখিনা হাওয়ায়। এখন আর কওমি মাদ্রাসা নিয়ে ভাবি না। কওমি ঘরানার ওলামা-মাশায়েখ নিয়েও ভাবি না। তাই আকাবিরিনের সৃজিত সৌধে হাত না দেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ- এটাই হলো আমার বর্তমানের শ্লোগান।
ইসলামি শিক্ষা যুগোপযোগী করতে যারা অলিতে গলিতে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করে যাচ্ছেন তাদের সাথে মাঝে-মধ্যে অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। ডাকলে যাই। কমাশিসার পরিচালকবৃন্দকেও এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছি।
কওমী মাদ্রাসা থেকে ভালো আলেম বের হোক। ইলমে শারঈতে সিদ্ধ ইমাম বের হোক। যুগসমস্যার সমাধান দিতে পারেন এমন মুফতি বের হোক- এটা আমার প্রত্যাশা। আলেম-ডাক্তার, আলেম-প্রকৌশলী সৃষ্টি করার আল-আজহারি পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে সেই কবে। আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কুল্লিয়াতুততিব থেকে যারা বের হন তারা ‘না হাট কা না ঘাট কা। আরবিতে বলে لا في العير ولا في النفير । অতএব এ জাতীয় চিন্তা আমাকে আর আকৃষ্ট করে না।
কমাশিসাসহ কওমি মাদ্রাসা নিয়ে যারা ভাবেন তাদের কাছে আমার আবেদন- কওমি সিলেবাসকে প্রাচীন ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যান। কওমি সিলেবাসের কিতাবগুলোর বাংলা অনুবাদ বাজেয়াপ্ত করুন এবং পারলে অনুবাদকদের জেল জরিমানার ব্যবস্থা করুন। বর্তমান কওমি মাদ্রাসা থেকে আলেম তৈরি না হওয়ার অন্যতম কারণ হলো বাংলানির্ভর জ্ঞান চর্চা; যা আরবিনির্ভর ইলম চর্চাকে আহত করে বর্ণাতীতভাবে।
কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য আমার নসিহত- মুরুব্বীদের যথার্থ সম্মান করুন তবে জ্ঞানচর্চা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে তাদের কোনো পরামর্শ বাধা হয়ে দাঁড়ালে আদবের সাথে তা এড়িয়ে যান।