ধর্মে অবিশ্বাসী হিসেবেই প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পরিচিত ছিল টনি ব্লেয়ার। এ সময় তিনি বলতেন, ‘আমরা ঈশ্বরের না।’ অথচ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছাড়ার পর রীতিমত ধর্ম চর্চা শুরু করেছেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সাবেক এই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশ্বাসী থাকার জন্য তিনি এখন নিয়মিত কুরআন শরীফ থেকে আয়াত পাঠ করেন!
প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার কয়েক মাস পর থেকে টনি ব্লেয়ার খ্রিস্টান ক্যাথলিক ধর্ম চর্চা শুরু করেন। পরবর্তীতে ধর্ম চর্চা জারি রাখার জন্য এবং বিশ্বের বর্তমান অবস্থাকে বোঝার জন্য তিনি কুরআন পাঠ শুরু করেন বলে জানিয়েছেন টনি ব্লেয়ার। অবজারভার ম্যাগাজিনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে বিশ্বাসী হিসেবে টিকে থাকা বেশ কঠিন।
তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন কুরআন থেকে পড়ি। আমি মূলত পড়ি কারণ এটি অত্যন্ত শিক্ষামূলক এবং বিশ্বকে বোঝার জন্যও আমি এটাকে পড়ি।
এর আগে ব্লেয়ার মুসলিম বিশ্বাসকে ‘সুন্দর’ মন্তব্য করে বলেন, নবী মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন ‘একটি অত্যন্ত সভ্য শক্তি’।
অবশ্য ২০০৬ সালে এক বক্তব্যে টনি ব্লেয়ার জানিয়েছিলেন, কুরআন শরীফ একটি লিখিত বই যেখানে অনেক কিছু সন্নিবেশ করা হয়েছে। সেখানে বিজ্ঞান ও জ্ঞানের কীর্তন রয়েছে এবং কুসংস্কারকে ঘৃণার কথা বলা হয়েছে। এটি খুবই বাস্তব সম্মত এবং নিশ্চিতভাবে এটি প্রকাশের সময় থেকে অনেক পরের বিষয় যেমন রাষ্ট্র পরিচালনা, ধর্ম ও নারীদের নিয়ে লেখা হয়েছে। এ সময় তিনি সেই সকল জিহাদিদের সমালোচনা করেন যারা কুরআনকে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার জন্য ব্যাখ্যা করছে।
কসোভো, সিয়েরা লিওন বা ইরাকে যুদ্ধে জড়ানোর সঙ্গে টনি ব্লেয়ারের ধর্ম বিষয়ক চিন্তা কাজ করেছিল কিনা অর্থাৎ আধ্যাতিকভাবে তিনি এ বিষয়ে কোন কিছু জানতে পেরে কাজ করেছেন কিনা জানতে চাইলে বেশ উষ্ণ কণ্ঠে তিনি বলেন, এর থেকে বানোয়াট ও উদ্ভট আর কিছু হতে পারে না। বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে সামরিক সিদ্ধান্ত ছিল। এর সাথে আমার ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই।
টনি ব্লেয়ার প্রধানমন্ত্রী থাকা কালে ব্রিটেন আমেরিকার সঙ্গী হয়ে ইরাক যুদ্ধে জড়িয়ে পরে। এ ছাড়াও তার সময় কসোভো ও সিয়েরা লিওনেও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ব্রিটিশরা। অনেক সমালোচক বলে থাকেন টনি ব্লেয়ার খ্রিস্টান ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এমন কাজ করেছেন। আবার অনেকে বলে থাকেন, টনি ব্লেয়ার আধ্যাত্মিক নির্দেশ পেয়ে এই কাজ করেছেন। কিন্তু এ সকল সমালোচকদের কথাকে উড়িয়ে দিয়ে টনি ব্লেয়ার জানান, গোয়েন্দা তথ্য ও সামরিক সিদ্ধান্ত অনুসারে যুদ্ধগুলোতে জড়িয়েছিল ব্রিটেন। ডেইলি মেইল।
সৌজন্যে : দৈনিক ইত্তেফাক