প্রশ্নটা দেখে অনেকে আঁতকে উঠবেন যে, পাইছিরে আরেক আওয়ামীলীগের দালাল! লন্ডনের সুপরিচিত এক মুফতি সাহেবতো ফতোয়াই দিয়ে দিলেন যে, যারা আওয়ামীলীগ করে তাদের সকল জাহান্নামে যাবে।যদিও আরেকটি প্রশ্নের উত্তর তিনির কাছে অনেকে জানতে চাইছে যে, যারা কনজারবেটিভ দল করে তারা কি তাহলে জান্নাতে যাবে?
আমরা আসলে কোরআনের গাইডেন্স ভুলে গিয়ে মনগড়া হিদায়াত নামা শুরু করে দিয়েছি। যার ফলে ফিতনা কেবল বাড়ছেই।হজরত মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তায়ালা ডাইরেক্ট নির্দেশ দিলেন যেন তিনি ফেরাউনকে হিদায়েতের পথে ডাকেন।মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতস্ত বোধ করলেন, বললেন যে, মাবুদ মানবে কি মানবেনা তাতো পরের কথা কিন্তু আমাকে যে জিন্দা ছাড়বেনা এই আশংকায় কাঁপছি। মহান আল্লাহ তায়ালা অভয় দিয়ে বললনে- যান আপনি তাকে ঈমানের দাওয়াত দিন। পরে দেখা যাবে কি হয়। আল্লাহ তায়ালার সাহস ও নির্দেশ পেয়ে মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দাওয়াত দিলেন।কিন্তু সে মানতে অস্বীকার করলো। পরিণামে নিপতিত হলো বিরাট আজাবের ভিতর।
বাংলাদেশের ইতিহাসের পুরো অধ্যায় জুড়ে আছে বিরাট একটি কালো দাঘ। জাতির ভিতর বিভক্তি এনে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল। বিএনপি জামাতি ইসলামের তসবিহ ছিলো ভারতীয় দালাল, ব্রাক্ষ্মণ্যবাদের দোসর।আর আওয়ামীলীগের তসবিহ ছিলো রাজাকার আলবদর, স্বাধীনতা বিরোধী, বঙ্গবন্ধুর খুনী। ফলাফল কি দাড়িয়েছে? রাজনৈতিক হানাহানি চুড়ান্ত পর্যায়ে।একদল আরেকদলকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার মরণপণ লড়াই। যে লড়াইর গ্লানী আজ বাংলাদেশ আর বইতে পারছেনা সইতেও পারছেনা। একটি দেশের স্থিতিশীলতার প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো রাজনৈতিক সমঝোতা। একমাত্র ক্ষমতার পালাবদল ছাড়া তারা কোন প্রকার আদর্শ কিংবা দেশ ও জাতির স্বার্থে বিন্দুমাত্র বোঝাপড়ায় তারা যায়নি। আমরা শোনেছি যখন হজরত মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব তাফসির পেশ করতেন। তখন দু তিনটি আয়াত পড়ে বাকি যা পড়তেন তা হলো আওয়ামীলীগের চৌদ্দগোষ্ঠীকে উদ্ধার করণ। জিন্দা মুর্দা কেউ বাকি থাকতোনা। সবাইকে দোজখের শেষ গহীনে ফেলে দিয়ে জামাত শিবির বিটএনপিকে জান্নাতুল ফেরদাউসে পৌছিয়ে দিয়ে থামতেন।
এটাকি আমাদের আকাবির আসলাফের তরীকা ছিলো? মুজাদ্দিদে আলফেসানী সৈয়দ আহমদ সিরহিন্দী বাদশাহ আকবারের দ্বীনে এলাহীর বিরুদ্ধে কিভাবে লড়াই করে ছিলেন? শাহ ওলীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভীর তৎকালীন ফিতনার মোকাবেলার পদ্ধতি কি ছিলো আমরা তলিয়ে দেখেছি? বাংলার মাটিতে নাস্তিক মুর্তাদ বলে যতবার নাম নেয়া হয়েছে তার সিকি ভাগ যদি মুফাহামাত সমঝোতার কথা হতো তাহলে আজ এই বিপদ এতো ভয়াবহ রূপ ধারণ করতোনা। একটি দেশের গলার ভিতর আমাদের বসবাস। বঙ্গোপসাগরে ঝাপ দেয়া ছাড়া আমাদের যাবার জায়গা কই? তাহলে প্রতিবেশী দেশের সাথে ভাল সম্পর্ক তৈরী না করে কেন জামাত বিএনপি প্রক্সিওয়ারে সহযোগিতা করতে গেল? অনেকে বলবেন-ভারত আমাদের বিরুদ্ধে বেশী করেছে। দুশমনি লেগেই রাখতো। আমি বলবো যে ভারত তো চাইবে আমাদের অস্তিত্ব শেষ করে দিতে। এর ভিতর বাঁচতে হলে আমাদের কর্মকৌশল ঠিক করা উচিৎ নয় কি? স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দি পরও কোন বোঝাপড়া নেই। এখন তো সবকিছু সুদূর পরাহত বলে মনে হচ্ছে। আমাদের এই হিংসাত্বক প্রতিবাদের পথ ও পদ্ধতি কি বয়ে নিয়ে এসেছে এখন? লন্ডন হাসিনা আসলে আপনারা জুতা মিছিল করেন। পঁচা ডিম ছুড়ে মারেন। তাতে কি লাভ হচ্ছে? তার ক্ষতিই বা কি হয়েছে? বরং পরিস্থিতি যাচ্ছে খারাপের দিকে।
এইসব ছেলেমানুষী রাজনীতি আমাদের কোন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে তা কি ভেবে দেখছেন? কাউকে প্রতিহিংসার শিকারের সুযোগ কেন দিবেন? শুধু যদি ক্ষমতার লড়াই হয়, কুরসির যুদ্ধ হয়, তাহলে এই যুদ্ধে আপনারা পরাজিত হয়েছেন পরাভুতও হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দেশের স্বাধীনতা যদি বিপন্ন হয়ে পড়ে তখন আপনি কি করবেন? তাই আল্লাহকে ভয় করুন। নাস্তিক মুর্তাদ ভারতীয় দালাল তসবীহ ছেড়ে সমঝোতায় আসুন। আসুন জালিমের প্রতি ভালবাসা দিয়ে জয় করে নেই তাকে। একসাগর রক্তের বিনীময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা কি আমরা পদ আর ক্ষমতার কারণেই জলাঞ্জলি দিয়ে দেবো? না তা হতে পারেনা। এই ভুল থেকে ফিরে না আসলে ইতিহাসের শ্রেষ্ট ভুলের মাশুল আমাদের গুনার জন্য তৈরী থাকতে বলে আগাম সতর্ক বানী জানিয়ে দিলাম।