রামকৃষ্ণ মিশনের কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে ‘আইএসের পাঠানো’ পত্র প্রসঙ্গে
ইমরান চৌধুরী::
গত বুধবার, অর্থাৎ ১৫ জুন ঢাকার গোপীবাগে রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সম্পাদক স্বামী সেবানন্দকে হত্যার হুমকি দিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। মিশন ও মিডিয়া দাবী করেছে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করা আইএস বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি হিন্দু আশ্রমের এক কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এই বিষয়টার দেখভাল স্বভাবতই বাংলাদেশের পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত। বড়জোর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে পারেন।
ভারতের চলমান তৎপরতা কি ১৯৪৭ ও দ্বিজাতিতত্ত্ব সম্পর্কে আমাদের নতুন করে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করছে?
আমরা দেখছি, অত্যন্ত অস্বাভাবিক দ্রুততায় ভারতের সরকারী পর্যায় থেকে এই কথিত চিঠির ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া এসেছে। ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। ইসরাইলের যেভাবে পৃথিবীর সকল ইহুদীর প্রতি দায়বদ্ধ, তেমনি ভারত বিশ্বের সকল হিন্দুর প্রতি দায়বদ্ধ থাকার কথা নয়। কারণ ভারত কোন বিশেষ ধর্মের দেশ নয়। সাংবিধানিকভাবে ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র, এবং তাদের ধর্মনিরপেক্ষতার উৎকৃষ্টতা নিয়ে তারা হররোজ বড়াইও করে। বাংলাদেশের চলমান ঘোলাটে পরিস্থিতিতে এক শ্রেণীর হিন্দু কতৃক ভারতকে এদেশে হস্তক্ষেপ করতে দাওয়াত দেয়া, এবং হিন্দুদের উপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার ও ভারতীয় হাইকমিশনের অস্বাভাবিক দৌড়ঝাঁপ প্রমাণ করে ১৯৪৭ সালে ভারত থেকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দুটি ভূখণ্ডের আলাদা হওয়া ছিল সঠিক, এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। কারণ সাংবিধানিকভাবে ঘোষিত ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির পাসবান হবার পরও ভারত বিদেশের মাটিতে যেভাবে হিন্দু সম্প্রদায়কে নিয়ে নামা মার্গের কর্মকাণ্ডে মেতে রয়েছে, তাতে প্রমাণ হয় চরিত্রগতভাবে ভারত একটি হিন্দু রাষ্ট্র। ১৯৪৭ সাল যদি আমরা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন না হতাম, তাহলে সমগ্র ভারতে সংখ্যালঘু এবং আধুনিক শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা আমরা যে আর্থসামাজিক ভাবে ঝুঁকির মধ্যে থাকতাম, তা ভারতই এখন আমাদের শিখিয়ে দিচ্ছে।
আলোচিত চিঠি- একটি নম্র ময়নাতদন্ত
যাহোক, স্বামী সেবানন্দকে যে উড়োচিঠি পাঠানো হয়েছে তার বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে অনালাইনে এসেছে। এসব দেখে আমার মনে কিছু বিষয়ে ঘোরতর সন্দেহের উদ্রেক ঘটেছে।
প্রথমত, হাতে লেখা চিঠিটি একটি বাংলা লেটার হেড প্যাডে লেখা যার শীর্ষে লেখা ‘ইসলামিক স্টেইট বাংলাদেশ (আইএস) (গোপন এজেন্ট)’। লেটার হেড প্যাড এবং নামের উপস্থাপনার ভঙ্গি, দুটোই বাড়াবাড়ি রকমের হাস্যকর ও শিশুতোষ। মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বে আইএস যতোগুলো প্রমাণিত সহিংসতা ঘটিয়েছে, তার কোনটিই তার পূর্বে ঘোষণা দিয়ে করেনি, কোনোরূপ লেটার হেড প্যাড ব্যবহার করা তো দূরে থাক। বস্তুত, হুমকি দিয়ে চুরি করা বা খুন করা এগুলো উপমহাদেশীয় বাণিজ্যিক ও চটুল সিনেমার প্লট ছাড়া বাস্তব জীবনে কখনো দেখা যায়নি।
তাছাড়া আইএস যেভাবে আধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় বিচরণ করছে, সেখানে মান্ধাতার আমলের হাতে লিখে পরওয়ানা পাঠানোর সেকেলে পদ্ধতি তারা কেন ব্যবহার করতে গেলো? তাছাড়া কোন খুনে চিঠি হাতে লিখতে যাওয়াতে অন্য ঝুঁকিও আছে। এর দ্বারা আসল অপরাধী সনাক্ত করার কাজ অপেক্ষাকৃত সহজ হয়ে যায়। ইমেইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর গোষ্ঠী আইএসের নামে বাংলা লেটার হেড প্যাডে বাংলা হাতের লেখা চিঠি যে একটি বানোয়াট ব্যাপার, তা নির্ণয় করা বোধ করি খুব বেশি কঠিন নয়।
এর ফলে আমি যদি কেবল এই অংশটির ময়নাতদন্ত করতে যাই, তাহলে আমার কাছে প্রতিভাত হচ্ছে, এটা মোটেই আইএসের কাজ নয়। বরং এটা এমন কারো কাজ যার জন্য বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী দ্বারা আক্রান্ত, এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংকটের মুখে দেখতে চাওয়ার গরজ আছে।
দ্বিতীয়ত, চিঠির এক স্থানে কথিত গোপন এজেন্ট লিখছে, “তোর মা কালীর দোহাই- তুই ভারতে চলে যা”। এটা কোন পরিপক্ক মেজাজের ব্যক্তির কথার সুর যেমন নয়, তেমনি আইএসের মতো সংগঠনের সদস্য কতৃক এক পৌত্তলিক দেবীকে মা সম্বোধন করে সম্মান দেখাতে যাওয়াও স্বাভাবিক নয়। এর দ্বারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়, যে হয় আইএসের এই গোপন এজেন্ট পশ্চিমবঙ্গের বাংলা সিনেমার একজন বড় ভক্ত, আর নয়তো তিনি ব্যক্তিগতভাবে কালীর ভক্ত। কারণ এমনিতেই এখানে কালীর নাম আসেনা। রামকৃষ্ণ মিশন কালীর উপাসক নয়। এদের দর্শন মূলত কালীর সহিংস প্রতিমূর্তির সাথে খাপ খায় না।
তৃতীয়ত, রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্দেশ্যে প্রেরিত এই উদ্ভট চিঠিতে মিশনকে হিন্দু ধর্ম প্রচার করার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে স্বামী বিবেকানন্দ কতৃক প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ মিশন মূলত হিন্দুদের একটি সেবামূলক সংস্থা। এই সংস্থা ব্রাহ্ম সমাজের মতো ধর্ম প্রচারক নয়। তাছাড়া হিন্দু ধর্মে তাত্ত্বিকভাবে ধর্ম প্রচারের কিছু নেই। প্রচারের সাথে প্রসারের প্রসঙ্গ জড়িত। কিন্তু অন্য ধর্ম থেকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরকরণের তেমন কোন কাঠামোবদ্ধ পদ্ধতি আছে বলে আমার জানা নেই।
ফলে দেখা যাচ্ছে, আইএসের এই গোপন এজেন্ট হিন্দু ধর্ম বা রামকৃষ্ণ মিশন সম্পর্কে কোন গবেষণা না করেই চিঠিটি লিখেছে। বস্তুত, যে সংগঠনে ইউরোপের শহুরে ছেলেপেলেরা পর্যন্ত আকৃষ্ট হচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে, সেই সংগঠন এতোটা আকাঠ তা ভাবা যায়না। এর দ্বারা প্রতীয়মান হয়, এমনকি এই চিঠিও আসলে মূল বিষয় নয়, বরং চিঠিটিকে ব্যবহার করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করাই মূল উদ্দেশ্য। এবং আমরা দেখতে পাচ্ছি, চাঞ্চল্য এতোটাই সৃষ্টি হয়েছে যে, ভারত পর্যন্ত এই শিশুতোষ চিঠি নিয়ে হৈচৈ শুরু করে দিয়েছে।
চতুর্থত, এরপরই দেখা যাচ্ছে কথিত গোপন এজেন্ট এই মাসের ২০ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে সেবানন্দকে খুন করার এলান করে এমনকি খুনের মাধ্যমও বলে দিয়েছে! খুনের মাধ্যম হবে চাপাতি! মনে হচ্ছে, এটা আইএস নয়, এদেশের কোন গ্রাম্য গুন্ডা আরেক গুণ্ডাকে ফাঁকা হুমকি দিচ্ছে! খুনের তারিখ জানিয়ে দেয়ার বিষয়টি নাহয় মানলাম, কিন্তু চাপাতির কথাও বলতে হবে! তাছাড়া আইএসের মতো সংগঠনের জন্য আধুনিক কোন আগ্নেয়াস্ত্রের নাম নেয়াই তো অধিক যুক্তিযুক্ত। এখন যদি কেউ বলতে চায় শামে হামভি আর ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করা আইএস এখন সব ফেলে চাপাতির দিকে ঝুঁকেছে, তাহলে তা স্বতন্ত্র ব্যাপার!
পঞ্চমত, বেচারা গোপন এজেন্ট এবার চিঠিতে স্বামী সাহেবকে ভালো মন্দ খেয়ে নেবার নসিহত দিচ্ছে! বিশ্বাস করুন, এটা দেখে আমার মনে হয়েছে এই চিঠি কোন গ্রাম্য গুণ্ডাও নয়, বরং এক্সজুনায়েদ টাইপের সদ্য গুপ্তকেশ গজানো কোন আলালের ঘরের দুলাল বখে যাওয়া শহুরে কিশোরের কথা। সত্যিকারের আইএস নেতারা এই চিঠি দেখলে হার্টফেল করতো। এরচেয়ে মোক্ষম স্যাটায়ার হতে পারেনা আইএসকে ব্যঙ্গ করতে!
ষষ্ঠত, চিঠির প্রথম দিকে লেখা আছে, “মনে রাখিস আমার বাবা গরু চুরি করতো”। এই পর্যায়ে এসে চিঠিটির বস্তুনিষ্ঠতার সম্ভাবনা আরও নেমে যায়। মানবিক মনস্তত্ত্বের নিরিখে কোন অপরাধী নিজেকে অপরের সামনে ছোট করে দেখাতে চায় না। বরং মানুষের মনে আতংক সৃষ্টিতে নিজেকে মিছামিছি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তুলতেও পিছপা হয়না। যারা ইউরোপ, আমেরিকার সাথে লড়ছে, তারা তাদের দলে এমন এক গরু চোরের ছেলেকে নেবে, যে কিনা পিতার এই পরিচিতি নিয়ে গর্ব করে, এ হতেই পারেনা। সঠিক হোক, বা বেঠিক হোক, আইএস কিন্তু একটি আদর্শিক যুদ্ধেই লিপ্ত। এধরণের যুদ্ধে তারা স্পিরিটেড তরুণদেরই টানবে, ঘিলুহীন কোন পাগলকে নয়।
সপ্তমত, চিঠিতে কথিত গোপন এজেন্ট নিজের পিতার নাম উল্লেখ করেছে মরসব আলী হিসেবে। মরসব নামের কোন আরবী, ফার্সী বা বাংলা শব্দ নেই। তবে পশ্চিমবঙ্গে কোন উৎসবকে মোচ্ছব বলে অভিহিত করার চল আছে। মোচ্ছবই সম্ভবত মরসবের কাছাকাছি একটি শব্দ!
এই প্রসঙ্গে বিগত শতকের চল্লিশের দশকের একটি মজার ঘটনার কথা মনে পড়লো। তখন পাকিস্তান আন্দোলন তুঙ্গে। এর পক্ষে বিপক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চলমান। কলকাতার মুসলিম মালিকানাধীন পত্রিকাগুলো যেমন পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে প্রচারণা চালাত, তেমনি হিন্দু মালিকানাধীন পত্রিকাগুলোও এর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাত। হিন্দুদের পত্রিকাগুলো জাতীয়তাবাদী মুসলিমদের বিভিন্ন ভুয়া সভার কথা ছাপাত। জাতীয়তাবাদী মুসলিম মানে, যেসব মুসলিম ভারতের বিভক্তির বিরুদ্ধে। যাহোক, এধরণের বেশিরভাগ খবরই ছিল ভুয়া। প্রায়ই এসব পত্রিকা কোন মুসলিম কর্মচারীর কাছ থেকে মুসলিম নাম নিয়ে পত্রিকায় জাতীয়তাবাদী মুসলিমদের কথিত সভার কথা ছাপাত। একদিন দেখা গেলো অমৃতবাজার পত্রিকায় এমন এক জাতীয়তাবাদী মুসলিমদের সভার কথা ছেপেছে, যাতে অতিথি ছিলেন মাওলানা ওলাদুজ্জেনা (ধর্ষণজাত সন্তান), কাজী ফাসেক, ফিতনা গাজী ইত্যাদি। বলা বাহুল্য, সেদিন অমৃতবাজারের সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার যার কাছ থেকে মুসলিম নাম জানতে চেয়েছিলেন, সেই ব্যক্তি ইচ্ছা করেই তাকে এমন সব নাম বলেছিলেন যার প্রকাশ ঘটলে অমৃতবাজারের ল্যাঙট খুলে যাবে।
রামকৃষ্ণ মিশনে পাঠানো চিঠিতে মরসব আলীর নাম দেখে আমার সেই ঘটনার কথা মনে পড়লো! কে জানে, কেউ ইচ্ছা করেই এমন অলীক নাম পত্র লেখককে সরবরাহ করেছিলো কিনা! তবে এটা নিশ্চিত যে, যেই চিঠিটা লিখুক না কেন, সে মুসলিম তো নয়ই, এমনকি মুসলিম সমাজের সংস্পর্শেও নেই!
তাছাড়া গরুর প্রসঙ্গ আনাটাও আমার কাছে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। সীমান্তে ভারত কতৃক বাংলাদেশী হত্যার সাথে গরু পাচারের বিষয়টি জড়িত। ভারতীয়রা সীমান্তে গরু ঠেলে দিলে বাংলাদেশীরা সেগুলো আনতে গেলে গুলি খেয়ে মারা পড়ে। এখানে দোষ ভারতীয়দের হলেও অনলাইনে পশ্চিমবঙ্গের অনেক সাম্প্রদায়িক হিন্দুকেই দেখি বাংলাদেশীদের গরুচোর বলে বিশেষণ দিতে। সন্দেহ হয়, এই লেখা কি পশ্চিমবঙ্গের কারো লেখা? বেচারা হয়তো জযবার বসে গরুচোর কথাটি টেনে এনেছে!
অষ্টমত, পত্র লেখক এখানে নিজেকে সেনাবাহিনীর বলে দাবী করছে! এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, পুরো বিষয়ে সেনাবাহিনীকে জড়াতে পারলে কাদের লাভ! কাদের প্ররোচনায় আগেও সেনাবাহিনীতে আল কায়েদা থাকার প্রচারণা চলেছে, সে সম্পর্কে বোধকরি আমরা সকলেই জ্ঞাত!
নবমত, আইএস তার আঁতুড়ঘরেই এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। গত সপ্তাহেই আইএসের নেতা বাগদাদীর নিহত হবার খবর ছড়িয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সাংগঠনিকভাবে বিশৃঙ্খল হয়ে যাবার কথা। অথচ, এই চিঠি পড়ে মনে হয়, কথিত এই গোপন এজেন্ট খোদ বাগদাদীকেই চেনে না!
উপরে আমি যেসব প্রশ্ন ও সিদ্ধান্ত দিলাম, সেসব নির্ণয়ে আমি কোন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেইনি। এসব নেহায়েতই আমার কাণ্ডজ্ঞান খাটিয়ে বের করা। ভারত একটি আঞ্চলিক পরাশক্তি। দেশটি নিরাপত্তা পরিষদ, নিউক্লিয়ার সাপ্লাই গ্রুপের মতো ওজনদার সংস্থায় প্রবেশ করতে চায়। সেমতে ধরে নেই, তাদের সক্ষমতাও কম নয়। কিন্তু খালি চোখে আলোচ্য এই চিঠির বানোয়াট হওয়াটা আমার কাছে স্পষ্ট হলেও ভারতের তাবদ পেশাদার সংস্থা এই সহজ বিষয়গুলো ধরতে পারলো না। এমনকি তারা এই চিঠির বস্তুনিষ্ঠতা যাচাইয়ে এতোই অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে যে, এই চিঠির খোঁজ খোদ নরেন্দ্র মোদী পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া হয়েছে। গতকাল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এই চিঠির প্রসঙ্গ তুলেছেন। এমন কাঁচা ভুলে ভরা চিঠিটি যে ভুয়া, এহেন সহজ বিশ্লেষণে উপনীত হতে না পারা ভারতের মতো দেশের জন্য লজ্জা ও দুঃখের বিষয় বটে।
এই যদি ভারতীয় সংস্থাগুলোর বিশ্লেষণী সক্ষমতা হয়ে থাকে, তবে আমার ভয় হয়, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে আছে! আর যদি তা না হয়ে থাকে, তাহলে এটাই বলা যায়, আমাদের বাংলাদেশী হিন্দু ভাইদের সামনে সত্যিই বড় বিপদ ঘূর্ণায়মান। ভারত তাদের খুব কাঁচাভাবে ব্যবহার করতে চাইছে। এবং এই বিপদজনক খেলা শেষে ভারত তাদের প্রয়োজনীয় রক্ষাকবচ দিতে ব্যর্থ হবে। সুতরাং, এখন হিন্দুদের সতর্ক হতে হবে। যারা ভেড়ার চামড়া গায়ে জড়িয়ে তাদের এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের মুখোমুখি খাড়া করাচ্ছে, সময় হলে তারা হিন্দুদের নিজ দেশে ঠাই দিতে রাজী হবেনা্…!
সুত্র:imranchoudhury.wordpress.com