খতিব তাজুল ইসলাম::
বাংলাদেশের একমাত্র কওমি অঙ্গনের বৃহ্ত্ত মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড হলো বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ। যাকে আমরা সংক্ষেপে বেফাক বলেই চিনি। বেফাক চাইলে এদেশে ইসলামি শিক্ষার আলো জ্বালানোর ক্ষেত্রে বিশেষ ও বিরাট ভুমিকা রাখতে পারে।কমবেশ প্রায় সাড়ে চারহাজার মাদ্রাসার প্রতিনিধিত্বকারী এই শিক্ষাবোর্ড যেন স্থবীর হয়ে আছে।বয়বৃদ্ধ্য বুজুর্গ আহমদ শফী দামাত বারাকাতুহুম হলেন সভাপতি।সভাপতি তিনি হতেই পারেন থাকতেই পারেন।বরকতি এই পদ তিনির জন্য খুবই মানানসই।বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের যেমন কোন কাম কাজ থাকেনা।তেমনি বেফাক সভাপতি শুভাসুন্দর হলে কারো কোন আপত্তি থাকার কথানা। তাহলে কাজ করবে কে? মহাসচিব? শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী! ভদ্রমহিলা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ডজনের অধিক উপদেষ্টা যারা দিনরাত তাকে সু ও কু পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।যে কারণে দেশ বার বার উলট পালট খাচ্ছে।
তাহলে আমাদের বেফাকের উপদেষ্টা মন্ডলী কারা? সহাকারি মহাসচিবগণর কাজ কি? দেশের চলমান অস্থির শিক্ষাব্যবস্থায় বেফাক কি কোন স্থীর স্থায়ী জনকল্যাণমুখী ইসলাম বান্ধব একটি সিলেবাস উপহার দিতে পারেনা? নতুন শিক্ষনীতির বিরুদ্ধে যত অভিযোগ তার চেয়ে বড় অভিযোগ আমার যে, যারা আমরা চিল্লাচিল্লি করছি আমরা সকলে মিলে কেন একটা আদর্শ শিক্ষা সিলেবাস প্রণয়ন করে জাতির সামনে পেশ করিনা?
হাজার হাজার মেধা আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। তাদের ডেকে এনে বেফাক কি পারেনা নিজেদের জন্য উন্নত যুগোপযোগী একটা কিছু করতে।আমাদের পরামরর্শ হলো বেফাক তড়িৎ একটি সম্মেলন বা সেমিনারের আয়োজন করুক। যেখানে সিলেবাস নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে।খসড়া প্রস্তাব প্রণয়ন করে ঘষা-মাজা করারপর চুড়ান্ত একটা সিদ্ধান্তে পৌছানো।শিক্ষাসিলেবাস হচ্ছে একটি চলমান প্রক্রিয়া। সময় ও যুগের চাহিদানুযায়ী তা পরিবর্তনশীল।বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্যাকুলার মার্কা ইসলাম বিধ্বংসী এই শিক্ষানীতির বিকল্প শিক্ষা সিলেবাস তৈরী করে অনিতবিলম্বে সকল কওমি মাদরাসায় তা চালুকরা সময়ের দাবী।দেশের আপামর জনগণকে কাছে টানতে হলে উপযুক্ত শিক্ষাসিলেবাসের বিকল্প নেই।মানুষ লাখ লাখ টাকা পকেটে নিয়ে ঘুরছে সন্তানদের ভাল একটা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়ে দিতে।দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো অভিভাবকগণ অসহায়।একদিকে স্যাকুলার সহ শিক্ষাপদ্ধতির তান্ডব! অন্যদিকে আলাদা আলাদা থাকলেও স্বীকৃতিহীন কওমি শিক্ষা। যে শিক্ষা দিয়ে বর্তমান চলমান রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে অবদান রাখার কোন সুযোগ নেই।কওমি মাদারাসা ছেলেদের ও মেয়েদের উভয়ের শিক্ষাটা যদি চলমান রাষ্ট্রীয় শিক্ষার সাথে সামান্যতন সম্পর্ক রাখতো তাহলে আশা করা যেতো স্যাকুলার শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে কার্যকরী উদ্যোগ হিসাবে তা ভুমিকা রাখছে বলে।
কিন্তু বেফাকের এই নীরবতা এই ঘুম কার স্বার্থে? বেফাক কি কোন কুফরের স্বার্থের শিখন্ডীর ভুমিকা পালন করে চলেছে? প্রজন্মদের ঈমান আক্বীদা আমল আখলাক সবই নষ্ট হচ্ছে আর বেফাক কর্তৃপক্ষ বসে বসে বাশি বাজাবেন।সময়ের সাহসী উপযুক্ত ও জরুরী উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমরা বেফাকের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে স্বকীয়তা বজায় রেখে প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নিন।স্বীকৃতিহীন শিক্ষা থেকে জাতিকে মুক্তি দান করুন।