বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৫:২২
Home / অনুসন্ধান / সালাহ উদ্দীন জাহাঙ্গীরের চিন্তা

সালাহ উদ্দীন জাহাঙ্গীরের চিন্তা

লাবিব আব্দুল্লাহ::

সমকামিতা কখনোই মানুষের স্বাভাবিক যৌনচাহিদা নয়। কেননা সৃষ্টিজগতের আর কোনো প্রাণীর মধ্যেই এমন অস্বাভাবিক যৌনাচার দেখা যায় না। এটা যদি ‘প্রকৃতি’র কোনো ধরনের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক চাহিদা হতো, তাহলে সৃষ্টিজগতের অন্য যে কোনো প্রাণীর মধ্যেও এমন অস্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত হতো। কিন্তু ‘প্রকৃতি’ তা করেনি। ‘প্রকৃতি’ বংশবিস্তারের যৌনতায় বিশ্বাসী, অসুস্থ যৌনতায় নয়।

যৌনতার একটি মূল কারণ হচ্ছে বংশবিস্তার। কিন্তু সমলিঙ্গের সঙ্গে যৌনতায় বংশবিস্তারের কোনো সম্ভাবনাই নেই। তাহলে এ ধরনের যৌনতাকে কীভাবে প্রাকৃতিক বলা হবে? ‘প্রকৃতি’ কোনোভাবেই নিজের হাতে নিজের ধ্বংস হোক, এমনটা কামনা করে না। অথচ সমকামে ‘প্রকৃতি’র স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হতে বাধ্য।

সমকামিতা এক ধরনের অসুস্থতা, একপ্রকার রোগবিশেষ। এবং এ রোগ মোটেও জন্মগত নয়, জন্ম থেকে কেউ সমলিঙ্গের প্রতি যৌনাকাঙ্ক্ষা নিয়ে জন্মায় না। সমলিঙ্গের কারো দ্বারা নিপীড়িত হওয়া বা উদ্বুদ্ধ হওয়া, দীর্ঘদিন নারী সংসর্গে না থাকা, সঠিক বয়সে বিয়ে না করা, অধিকহারে সমলিঙ্গের মাঝে বসবাস করা, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসনের তোয়াক্কা না করা, যৌনতায় নতুন অ্যাডভেঞ্চার তালাশ করা, কোনো কারণে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি ঘৃণা, ক্ষোভ, ভয় বা তাচ্ছিল্য পোষণ করা, অতিরিক্ত পর্ন মুভি দেখা বা অধিক পরিমাণে যৌনবিষয়ক চিন্তা-ভাবনা মানুষকে সমকামে উদ্বুদ্ধ করে থাকে।

এসবই প্রাকৃতিক নয়, বিভিন্ন এ্যাক্সিডেন্টাল কর্মকাণ্ড। এসবের ফলে মানুষ সমকামে জড়িত হতে পারে বটে তবে খুব সহজ কাউন্সিলিং বা ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে এ রোগ থেকে নিষ্কৃতি সম্ভব।

অনেক ছেলের মাঝে জন্মগতভাবে মেয়েলি স্বভাব থাকে, আবার অনেক মেয়েও পুরুষালি স্বভাবে জন্ম নেয়। এদের সমকামে ঝুঁকে পড়ার প্রবণতা অধিক। অনেক বিজ্ঞানমনস্ক এ কারণে সমকামকে জিনগত প্রভাব বলে তৃপ্তি পান।
কিন্তু তাদের এটাও বোঝা উচিত— অনেকেই চুরিবিদ্যায় পারদর্শিতার জিন নিয়ে জন্ম নেয়। তাই বলে সমাজ বা পরিবার কি তাকে চুরির স্বভাবের জন্য বাহবা দিবে? নাকি তাকে শোধরানোর চেষ্টা করবে?

একটি প্রশ্ন হতে পারে— এই মেয়েলি স্বভাবের ছেলেদের সমকামে ঝুঁকে পড়ার কারণটা তো তাহলে প্রাকৃতিক!
আমাদের সমাজে মেয়েলি স্বভাবের যেসব ছেলে থাকে তাদেরকে সাধারণত হাফ লেডিস, মাইগা, মাগি, বলদ, হিজড়া… ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। আবার পুরুষালি স্বভাবের মেয়েদেরও হিজড়া, বেটামানুষ, হাফ লেডিস বা এ ধরনের বিপরীতমুখী নামে ডাকা হয় এবং তাদের সঙ্গে সেই সুলভ আচরণও করা হয়। ফলে দেখা যায়, নিজের বিপরীতমুখী স্বভাবের চেয়ে মানুষের বলার দ্বারা তার মাঝে বিপরীত লিঙ্গের আচরণ আরও প্রকটভাবে ফুটে উঠতে থাকে। পরিচিত-অপরিচিত সবার বলার ফলে নিজেকে একসময় সে আসলেই ‘হাফ লেডিস’ ভাবতে বাধ্য হয় এবং এ ধরনের মানসিক টর্চার তাকে ভিন্ন যৌনসংসর্গে উদ্বুদ্ধ করে। সুতরাং তার জন্য সমকামের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।

কিন্তু পরিবার বা বন্ধু-নিকটজনরা যদি তাকে ছোটবেলা থেকেই একজন পুরুষ ভাবতে সাহায্য করে, কিংবা মেয়েটিকে নারী ভাবতে সাহায্য করে, তাহলে যৌবন বয়সে তার স্খলন ঠেকানো সম্ভব। দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শও নেয়া যেতে পারে।

আরেকটি কথা খুব ভালো করে মনে রাখা উচিত— সমকাম এবং বলাৎকার কিন্তু এক জিনিস নয়। সমকাম হচ্ছে, একই লিঙ্গের দুজন মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যৌনসম্পর্ক।
আর বলাৎকার হচ্ছে, জোরপূর্বক বা ভয় দেখিয়ে কারো সঙ্গে যৌনতা সংক্রান্ত কর্ম সম্পাদন করা। এ ধরনের ঘটনা শিশুদের সঙ্গেই বেশি ঘটে থাকে।

সমাজ থেকে এই ঘৃণ্য অসুস্থতা চিরতরে দূর হোক।”

লেখক: চিন্তক, গবেষক, সমাজ সংস্কারক।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

সিলেটের পবিত্র মাটি আবারও কলংকিত হলো রায়হানের রক্তে!

পুলিশ ফাড়িতে যুবক হত্যা: সিলেটজোড়ে চলছে রহস্য! এলাকাবাসীর প্রতিবাদ!! সিলেট নগরীতে রায়হান নামক এক যুবকের ...