বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৫:৩৬
Home / আকাবির-আসলাফ / ত্রিমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা ও আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি

ত্রিমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা ও আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি

জুনাইদ কিয়ামপুরী::

dewbondদারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার আগে বিগত সাড়ে তের’শ বছরের ইতিহাসে মুসলিম উম্মাহর শিক্ষাব্যবস্থা কি ছিল? তা খতিয়ে দেখার দরকার!! অধুনা যত ক্বওমি মাদরাসা রয়েছে, সমস্ত কওমি মাদরাসার মূল ঐতিহ্যবাহী দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে যে উদ্দেশ্য কার্যকর ছিল, তা-ছিল বৃটিশ তথা ইংরেজদের আদর্শের বিরোধিতা করা। তাদের কৃষ্টি-কালচার, সভ্যতা-সংস্কৃতির করালগ্রাসী থাবা থেকে মুসলিম জাতিসত্তাকে হেফাজত করা।সর্বৈব জাগতিক শিক্ষার পরিবর্তে ইসলামি শিক্ষা ও আদর্শের চূড়ান্ত বিস্তার ঘটানো।এক কথায়; দারুল উলূমের প্রতিষ্ঠা, কারিকুলাম, পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, সবকিছুই ছিল মূলত ইংরেজি শিক্ষা-ও আদর্শের বিরোধিতার অনিবার্য ফল হিসেবে। ফলে প্রয়োজন ছিল, সূচনা থেকে শেষ পর্যন্ত সবগুলো ক্লাসের পাঠ্যক্রম ইসলামিয়াত ও ইসলামিয়াত বুঝতে সহায়ক বিষয়াদির আদলে সুবিন্যস্ত করা। মুসলিম সন্তানদের অন্তরে ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে ইসলামি জ্ঞান প্রক্ষিপ্ত করা।আলহামদুলিল্লাহ! দারুল উলূম দেওবন্দ তার উদ্দেশ্যে শতভাগ সফল হয়েছ।
এখন সেই প্রেক্ষাপট নেই, সেই প্রতিবেশও নেই।এখন আমরা আর পরাধীন নই।আমরা এখন স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক।সুতরাং এখন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা হবে সেই শিক্ষাব্যবস্থা, যা দেওবন্দ মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পূর্বে গোটা মুসলিম উম্মাহ যুগে -যুগে লালন করে আসছিল। আর সেই শিক্ষাব্যবস্থা ছিল ধর্মীয় ও জাগতিক শিক্ষার সমন্বিত রূপ। যে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে একই সঙ্গে একজন ব্যক্তি ডাক্তার এবং ইঞ্জিয়ার হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, আবার মুফতি মুহাদ্দিস, মুফাসসির হওয়ারও সুযোগ পেয়েছেন।এজন্যই পাকিস্তান হওয়ার পর মুফতি শফি রহ, বলেছিলেন, ” আমরা যখন ইংরেজ শাসনাধীন ছিলাম, তখন আমাদের মুসলিমদের জন্য ভারতে তিন টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল। ১) দারুল উলূম দেওবন্দ।২) নদওয়াতুল উলামা। ৩) আলিগড় কলেজ।
মূলত এ-তিনটি প্রতিষ্ঠান তিনটি শিক্ষাধারার পরিচয়বাহী।পাকিস্তান হওয়ার পর আমরা এখন স্বাধীন। এখন আমাদের জন্যে দেওবন্দি বা নদওয়ার শিক্ষাধারা চালু রাখার বাধ্যবাধকতা নেই।এখন আমাদের স্বাধীন দেশের শিক্ষাব্যবস্থাই কাম্য।”
দারুল উলূম দেওবন্দ কর্তৃপক্ষও এই বাস্তবতা বহু আগেই বুঝেছেন! আর বুঝেছেন বলেই পাঠ্যক্রমে প্রয়োজনীয় সংস্কার শনৈ শনৈ করে যাচ্ছেন। তবে বুঝতে হবে এ-কথা, বিশ্ব বিশ্রুত এই প্রতিষ্ঠানটি কিন্তু মুসলিম দেশের অন্তর্গত নয়, একটি স্যাকুলার বা হিন্দু প্রধান রাষ্ট্রের অধীন। তাই সংগত কারণে সেই প্রতিষ্ঠানে ইসলামিয়াত সর্বস্ব পাঠ্যক্রম থাকা যথাযথ বলেই মনে করি।তবে আমাদের বাংলাদেশে সেই শিক্ষাব্যবস্থাই চালু করা দরকার, যা ইংরেজ শাসনের আগে গোটা মুসলিম বিশ্বে চালু ছিল।

লেখক পরিচিতি: সুলেখক মুহাদ্দিস ও চিন্তক

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে জরুরী কিছু কথা!

কমাশিসা ডেস্ক: শুক্রবার ২৫সেপ্টেম্বার ২০২০. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আপনি যখন কওমি শিক্ষা সনদের স্বীকৃতির ...