পরিষ্কার ভাবে বোঝা যাচ্ছে শিশু দুটির মা শুরু থেকে মিথ্যা বলে আসছে । নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তাদের লাশ মর্গে ফেলে দু’জনই চলে গেছে গ্রামের বাড়ি । যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় । নোংরা কোন ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে এ হত্যা কাণ্ডের পেছনে । হত্যাকাণ্ডের পর শিশু দুটির মা প্রথমে বাবার বন্ধুকে ফোনে ডেকে আনে বলে সংবাদে প্রকাশ পেয়েছে । বাবাকে কেন ফোন দেওয়া হয়নি ? বাবার আগে বাবার বন্ধু কি ভাবে বাসায় পৌঁছল ? নানান প্রশ্ন উঠে আসবে ।
বাবা-মার পরকীয়ার ফলে সৃষ্ট পারিবারিক অশান্তি, নির্যাতনের বলি হযে শিশুরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে । প্রতি বছর একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটে চলেছে । সামাজিক অবক্ষয় হিন্দি চ্যানেলগুলোর প্রভাব, মোবাইল,ফেসবুকের নোংরা ব্যবহারের শিকার হচ্ছে কোমল মতি শিশুরা । দিনকে দিন মানুষ বিবেক শূন্য হয়ে পরছে । ক্ষণিকের মোহ,আবেগের জন্য নিজ হাতে হত্যা করছে নিজের সন্তানকে । শিশুরা অসহায় হওয়ায় তাদের উপর নিযাতন করা সহজ হচ্ছে । ফেসবুক,মোবাইল এসব আমাদের সভ্য নয় অসভ্য করে তুলছে ।
সংবাদ পত্রের পাতা উল্টালে এমন সংবাদ প্রতি বছর উঠে আসছে । গত ১২ আগস্ট রাজধানীর ডেমরায় মায়ের পরকীয়া ছেলে জেনে ফেলায় মায়ের নিদেশে ছেলেকে হত্যা করা হয় । মিরপুরে মা হত্যা করান তার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে । পুরানো ঢাকায় মা তার ছেলেকে হত্যা করে বস্তায় ভরে খেলার মাঠে ফেলে রাখে । জুরাইনে পিতার পরকীয়া আর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মা,ছেলে, মেয়ে এক সাথে আত্মহত্যা করে । তারা মৃত্যুর পূর্বে ঘরের দেয়াল জুড়ে লিখে যে নির্মম সত্য প্রকাশ করে যায় সমাজের আর রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে । কিন্তু তাতে সমাজ বা রাষ্ট্রের প্রভাবশালীদের কিচ্ছু যায় আসেনি । কেউ কিছু করেনি । সেই কুলাঙ্গারটি থানা পুলিশ কোট সব ম্যানেজ করে নতুন করে বিয়ে করে সংসার করছে । এ লজ্জা সমাজের । এ লজ্জা আমাদের সকলের । এরকম অসংখ্য ঘটনার কথা আমাদের সকলের জানা তবুও আমরা মুখে কুলুপ এঁটে থাকি ।
এক একটা ঘটনা ঘটে আর আমরা বেলুনের মতো ফুসে উঠি আবার চুপসে যাই । শিশু হত্যা বন্ধের জন্য আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে ।
ইউনিসেফ, সেইভ দ্যা চিল্ডেন, প্লান্ট ইন্টারন্যাশনাল এইসব প্রতিষ্ঠানগুলো শিশুদের উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে । ইউনিসেফ, সেইভ দ্যা চিল্ডেন, প্লান্ট ইন্টারন্যাশনাল সেসব গাড়ী ব্যবহার করে তা দিয়ে একটি গ্রামের সকল শিশুর এক বছরের খাবার যোগান দেওয়া যায় । তাই এদের কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যাবে না । যা করার তা আপনাকে আমাকেই করতে হবে । ঘরে বাহিরে যেখানেই কোন শিশু নির্যাতনের খবর পাওয়া যাবে সংঙ্গে সংঙ্গে তা পুলিশকে জানাতে হবে । আশে পাশের দশ জনকে নিয়ে শিশুটির পাশে দাড়াতে হবে । আসুন সবাই হাত বাড়িয়ে দেই ।