পূর্ব প্রকাশের পর
যুদ্ধ একটি বাণিজ্য এ যুগে
ইরাক ইরান যুদ্ধ হয়েছে আশির দশকজুড়ে৷ ইরাক সুন্নী ইরান শিয়া৷ ইরাকে তখন সাদ্দাম হোসাইন৷ লৌহমানব৷ কিছুটা স্বৈরচারী৷ সমজাতন্ত্রী৷ রাশাপন্থী৷ বাআছী৷ হিজবুল বাআছ বা বাথপার্টির লোক সাদ্দাম৷ কুর্দী হত্যা করেছে সাদ্দাম এবং গণহত্যা৷ সাদ্দামের খাহেশ ছিলো কুয়েতও দখল করবে এবং তিনি মনে করতেন কুয়েত ইরাকের প্রদেশ৷ এই দখলদারি মানসিকতায় ক্ষতি হয়েছে মুসলিম উম্মাহর৷ কুয়েত দখলকে কেন্দ্র করে আমেরিকা ঘাটি করে মধ্যপ্রাচ্যে৷ সোদী আরব তাদের বিগবসকে ডেকে আনে৷ তখন রাজতন্ত্রী শাসক মালিক ফাহাদ বিন আব্দিল আজীজ ক্ষমতায়৷ তিনি খাদিমুল হারামাইন আশশারিফাইন লকব ধারণ করতেন৷ কিন্তু যে জাজিরাতুল আরব থেকে নবীজী ইহুদী নাসারাদের ইখরাজ ও বহিস্কার করার ওয়াসিত করলেন সেই কুচক্রীদের তিনি ডেকে এনে কি খেদমত করলেন মুসলিম উম্মাহর!
কথিত আলকায়েদা নেতা উসামা বিন লাদেনের পরিবারের সাথে বুশের ব্যবসা ছিলো৷ কিন্তু বিন লাদেন বিপ্লবী৷ সংগ্রামী এবং দেশত্যাগী৷ কখনো সুদানে কখনো আফগানের গুহায়৷ সেই বিন লাদেন আরব ভূমি থেকে ইহুদী নাসারামুক্ত করতে আহবান করে সন্ত্রাসী খেতাব পেলেন৷ বিন লাদেন মোট এগারো বার মৃত্যু বরণ করেন৷ পাকিস্থানের এবোটাবাদের গুলি খেয়ে সাগরে ভেসে ভেসে কোথায় তিনি তা কেউ বলতে পারে না তবে আগামীতে তিনি আবার জীবীত হলেও তাজ্জাব হওয়ার কিছু নেই৷ মিডিয়া তাকে হিরো বানিয়ে আবার জিরো বানায়৷ জীবিত বা মৃতু তা আমেরিকার শাসকরা জানে৷ কোন সাগরের তলায় তার মরাদেহ তা তারাই বলতে পারবে৷ প্রয়োজনে আবার বলবে এইতো মোল্লা ওমর ও বিন লাদিন সৌদী জোটের কর্ণধার৷ সৌদী প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানকে কখন টেরর বলে বলা যাচ্ছে না৷ তবে বেশী বাড়লে বলা হবে লাদেন শিষ্য মুহাম্মদ বিন সালমান!
তুরস্কের এরদোগান ও মুহাম্মদ বিন সালমান কি পারবেন রাশিয়ার মেকাবেলা করতে? হাইড্রোজেন ও ড্রোন হামলার প্রতিরোধ কী তৈয়ার করছে সৌদী বা তুরস্ক? অস্ত্র কোন দেশ থেকে কেনে এই মুসলিম দুই দেশ? সন্ত্রাসের সংজ্ঞা কী তা নির্ধারণ না করে সবাই সন্ত্রাস দমন নামে আস্ত্র পরীক্ষার গিনিপিগ বানাচ্ছে ঐতিহ্যের সিরিয়াকে৷ সিরিয়ায় সকালে রাশিয়া বিকেলে আমেরিকা এবং সন্ধ্যায় সৌদী তুর্কী বোমা মারবে৷ এটি তি তাহলে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের প্রাথমকি মহড়া? রাশিয়ার সাথে চীন কি থাকবে? ব্লক তো সমাজতন্ত্রের৷ আমেরিকার সাথে কে থাকবে?
মুসলিম বিশ্বের অবস্থান কী হবে এই বিশ্ব যুদ্ধে?
চৈন্তিক বিশ্ব যুদ্ধ অনেক আগ থেকে শুরু হয়েছে৷ এবার এটম বোম বা হাইড্রোজেন বোম মেরে আধুনিক সভ্যতা শেষ করার আয়োজন চলছে৷ পৃথিবী কি আবার তীর তরবারির যুগে ফিরে যাবে? সিরিয়ায় কি “আলমালহামাতুল কুবরা” শুরু হতে যাচ্ছে! হাদীসে বর্ণিত আলমালহামাতুল কুবরা নিয়ে পড়া যেতে পারে৷ এইসব যুদ্ধ বন্ধ হতেই হবে মানুষের স্বার্থে৷ যুদ্ধবাজ যদি কোনো ধর্ম হয় তাকে ফিরাতে হবে৷ যুদ্ধবাজ তোনো দেশ হলে তাকেই রুখতে হবে৷ যুদ্ধ মানুষকে শান্তি দেবে না৷ পৃথিবীকে ধবংস করবে এইযব যুদ্ধ নাটক৷ যুদ্ধ সাদ্দামকে শান্তি দেয় নাই৷ গত সাড়ে তিন দশকে আফগানিস্থানে যুদ্ধ চলছে৷
আফগানে কি কোনো শান্তি ফিরে এসেছে?
আমেরিকার কিছুটা লাভ হয়েছে৷ তার বিরোধী শক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ণকে ভাঙ্গতে পরেছে৷ সহযোগীতায় মুসলিম বিশ্বের তারুণ্য যারা জেহাদের নেশায় ছুটেছে আফগানে৷ মোল্লা ওমর ভিন্ন৷ তিনি শরীয়াহ চেয়েছেন এবং তিনি দেশপ্রমেকি শাসক৷ তিনি কি বেঁচে আছেন না লোকিয়ে? নবীজী তিন দিন লোকিয়ে ছিলেন হিজরতের সময়৷ আমীরুল মুমিনীনদের কত দিন লোকিয়ে থাকার অনুমতি আছে তা যুগের ফকীহগন বলতে পারবেন৷ যদি ইন্তেকাল করেন তাহলে মোল্লা ওমর রাহিমাহুল্লাহ৷ বিন লাদিন ও মোল্লা ওমর পর্ব শেষ৷
পৃথিবী নতুন পর্ব দেখবে হয়তো৷ প্রতি এক দশকে পৃথিবী নতুন নাটক দেখে৷ টুইনটাওয়ার একুশ শতকের প্রথমে৷ দ্বিতীয় দশকে আরব বসন্তের বিষক্রিয়া মিসর ও সিরিয়ায়৷ সিসি ও কসাই বাশশার আল আসাদ৷ ইরান নাটকের অভিনেতা এবার৷ তালেবান পতনে পর্দার আড়ালে ছিলো মঞ্চের, এবার সিরিয়ায় ড্যান্স দিচ্ছে কালো কাপড়ে আচ্ছাদিত হয়ে৷ পৃথীবীতে যুদ্ধ নাটকগুলোর যবানিকাপাত হওয়া সময়ের দাবি কিন্তু যুদ্ধ একটি বাণিজ্য এ যুগে৷
যুদ্ধ ও শান্তির কথা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান পরাজিত হয়ে ছিলো৷ আমেরিকা এটম বোমায় ধ্বংশ করে হিরোশিমা ও নাগাসাকি৷ জাপান ও জার্মান শক্তি এটমের কাছে হেরে যায়৷ পৃথিবী এটমের যুগে প্রবেশ করে৷ তীর তরবারি বন্দুকের যুগ শেষ৷ পৃথিবী এখন হাইড্রোজেন বোমায় প্রবেশ করেছে৷ ড্রোনের যুগে বর্তমান পৃথিবী৷ জাপান যুদ্ধের নয়া কৌশলে এগোতে থাকে৷ আর নতুন যুদ্ধ নয় উন্নত হতে হবে সম্পদে৷ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে শিল্পে৷ জাপান সফল তার নতুন ভিশন মিশনে৷ জাপান পরিশ্রমী৷ জাপান এখন যুদ্ধ নিয়ে বেশী চিন্তা করে না৷ চীনও পৃথিবীতে এগিয়ে আছে প্রয়োজন ছাড়া যুদ্ধ নিয়ে চুপ থাকে৷
আমেরিকা যুদ্ধ নিয়ে বুশের যুগেই আছে৷ ইরাক ধ্বংশ করে সরি বলে৷ আফগানে সোনার খনি বা তেল গ্যাসের পাইপের প্রয়োজনে মুজাহিদ লালন পালন করে৷ রাশিয়ার সাথে সরাসরি যুদ্ধ না করে ভাড়া করা মুজাহিদ দিয়ে যুদ্ধ নাটক করে এবং মুজাহিদরা সচেতন হলে আমেরিকা তাদেরকে টেরর বলে এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধ দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধ ঘোষণা করে৷ প্রয়োজনে পৃথিবীকে প্রস্তর যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়৷ বুশ নামক দানবদের মুখে উচ্চারিত হয় পবিত্র যুদ্ধ বা ক্রুসেড৷ বুশরা নব্য বর্বর৷ রাশিয়া আরেক যুদ্ধবাজ দেশ৷ নব্বয় দশকে সমাজতন্ত্রের পতনের পর পৃথিবীতে রাশার নারীদের দেহ ব্যবসাও করে জীবন চালাতে হয়েছে এবং চরম অর্থ সংকটে ছিলো৷ কিন্তু দানব পুতিনরা ইরানের সাথে মিলে সিরিয়া ধ্বংস করছে৷ পুতিন নব্য ফারাও৷ ইরানের কথিত ইসলামী বিপ্লবের কালো চেহারা প্রকাশ্যে এলো সিরিয়ায়৷ শিয়া বিপ্লবকে ইসলামী বিপ্লব বলে রফতানিও শুরু করে ছিলো বিশ্বে৷ এই শিয়াজম রফতানীর ক্ষেত্রে সৌদী আরব প্রতিবন্ধক৷ আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধ যতই অবরোধ নাটক করুক পরিনামে দুস্ত পরস্পরে৷ আমেরিকা কখনই ইরানে আক্রমন করবে না৷ যার যার প্রয়োজনে জন্ম দেওয়া হবে আই এস আল কায়েদা জাতীয় রহস্যময় সংগঠন যারা কখনই ইসরাইলে আঘাত করবে না৷ যারা কালো কাপড়ে মুখোশ রাখবে৷ মুজাহিদরা মুখ ঢেকে যুদ্ধ করে কেন? সবাই খুরাসান বাহিনী দাবি করে৷ ইরানও কালো কাপড়ে গাউন পরিধান করে সুন্নিদের হত্যা করে৷ খুরাসান ইরানে৷ তারাও মাহদী আল মুনতাজারে বিশ্বাসী৷ সুররা মান রাআতে বিশ্বাসী৷
ইমাম মাহদী শব্দে ইমাম শব্দটি শিয়া মতবাদের প্রভাব৷ হাদীসে মাহদী দাজ্জালের প্রসঙ্গ এসেছে তা বিশ্বাস করতে হবে তবে যেভাবে মাহদী ও দাজ্জাল নিয়ে দাজ্জালিপনা করা হয় সেটি চিন্তার বিষয়৷ আধুনিক বিশ্বে যুদ্ধ বড় কৌশলের৷ আমেরিকা রাশিয়া তাদের অর্থনৈতিক প্রয়োজনে যুদ্ধের নানা ফ্রন্ট খোলেছে৷ অস্ত্র ব্যবসার বিষয় তো আছেই৷ নানা দেশের গোয়েন্দা সংস্থা তাদের প্রয়োজনে মুখোশ পরিধানকারী মৱজাহিদ জন্ম দেয় এবং এই মৱখোশধারী কথিত জেহাদীরা ইসলামকে হত্যার ধর্ম হিসেবে প্রমান করতে ছুরি দ্বারা মানুষ জবাই করে৷ ওডিও ভিডিও বার্তায় জেহাদ ছড়িয়ে দেওয়ার রহস্য অনেকেই বুঝে কিন্তু কিছুই চুপ পৃথিবী৷ কালো পোষাকে মুখে মুখোশের এই জেহাদকে ইসলামের নামে চালিয়ে ইসলামকে বদনাম করে মিডিয়া৷ ইসলামে জেহাদ ফরজ৷ আইন ও কিফায়া৷ কিন্তু বিনা শর্তে জেহাদ নয়৷ সৌদীর বর্তমান সামরিক জোট কি ইসরাইলেও লড়বে? যদি সিরিয়ায় সৌদী তুর্কী সামরিক জোট স্থল হামলা করে এবং ইসরাইলে আঘাতের সাহস না করে তাহলে জন্ম দেবে যুদ্ধের আরেক রহস্য৷ পৃথিবীর প্রতিটি যুদ্ধ একটি রহস্য৷ বাংলাদেশে জেহাদী সংগঠনও সেই রহস্য সিরিজের একটি ধাপ৷ আধুনিক পৃথিবীতে হুদায়বিয়ার সন্ধি নীতিও স্মরণ রাখতে হবে৷ এটমের সাথে যুদ্ধে তো এটম প্রয়োজন কিন্তু সৌদী আরব কি তা পারবে?
ইহুদী নাসারারা ড্রোন তৈয়ার করে আমরা মিলাদ কিয়ামের বহাছ নিয়ে চিন্তা করি এবং মিডিয়ায় চিৎকার করি তুই বাতিল, আমিই হক এবং একমাত্র হক! মনে রাখতে হবে “আলহাক্কু ইতাআদ্দাদু”৷ আমি হক তুমিও হতে পারো তা৷
চলবে….।