হুমায়ূন কবীর ::
চুক্তি করে ওয়াজের বিনিময়ে টাকা নেয়া হারাম। চুক্তি করে যারা ওয়াজ করেন, তাদের ওয়াজ শুনাও উচিত নয়। আর চুক্তি না করলেও বিনিময়ের আশা নিয়ে ওয়াজ করে হাদিয়া গ্রহণ যায়েজ নেই। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, অনুসরল কর তাদের যারা তোমাদের নিকট প্রতিদান চায় না- কুরআন- ইয়াসিন ২১।
সুরা শুয়ারা, আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্থ রাসুল। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আমার আনুগত্য কর- ১০৭ ও ১০৮। আমি তোমাদের নিকট এর জন্য প্রতিদান চাই না, আমার পুরস্কার রয়েছে রাব্বুল আলামীনের নিকট সুরা শুয়ারা- ১০৯, ১২৭, ১৪৫, ১৬৪, ১৮০।
মাসয়ালা-
(১) ওয়াজে যারা চুক্তি করেন তারা ওয়াইজ নয়।
(২) চুক্তিকারী ব্যক্তির বিনিময় হারাম।
(৩) হারাম কাজে সহযোগিতাও হারাম।
(৪) হারাম গ্রহণকারী ব্যক্তির ওয়াজ শুনাও উচিত নয়।
(৫) এ জন্যই প্রচলিত ফ্যশনি ওয়াজে ফায়দা হয় না, ক্ষেত্রবিশেষ ফিৎনা হয়।
বিশেষ দৃষ্টি :
তারাবির হাদিয়া সম্পর্কে মুফতি সাহেবের ফাতওয়া- তারাবির হাদিয়া যায়েজ নেই। উনি যখন ওয়াজ করে দেদারসে হাদিয়া গ্রহণ করেন তখন আর হাদিয়া নাযায়েজের মাসয়ালা স্বরণে থাকে না।
এখন চলছে ওয়াজের সিজন বা মওসুম। মুসলমানরা ভক্তি শ্রদ্ধা সহকারে ওয়াজ মাহফিলে উপস্থিত হন দ্বীন সম্পর্কে জানার জন্য। ওয়াইজিনে কেরামকে দাওয়াত দিয়ে মাহফিলে আনা হয় দ্বীনের বাণী শুনানোর জন্য। কাজেই দ্বীন ধর্মের কাজ করে এমনিতেই টাকা নেয়া যায়েজ নেই। আর ওয়াজে চুক্তি করে টাকা নেয়া তো আরো সুস্পষ্ট জঘণ্য হারাম। যারা চুক্তিভিত্তিক ওয়াজ করেন, তাদের ওয়াজ শুনা ও তাদেরকে বাহবা দেয়া যায়েজ হবার কথা নয়; বরং হারাম কাজে উৎসাহ দেয়ার নামান্তর।
হাদিয়া :
একটা অপশন আছে- ওয়াজ মাহফিলের আয়োজনকারীরা মানুষকে দ্বীন ধর্মের কথা শুনানোর জন্য ওয়াইজকে দাওয়াত দিলেন। ওয়াইজ দাওয়াত গ্রহণ করে মানুষের আমল আখলাকের ইসলাহ বা পরিশুদ্ধ করার নিয়তে আসলেন, ওয়াজ করলেন। যাবার কালে আয়োজকরা বা লোকজনের যে কেউ ওয়াইজকে কিছু দান করলে তা এ হুকুমের অন্তর্ভুক্ত হবে না। এটার নাম হাদিয়া। তাই হাদিয়া তোহফা যে কেউ যাকে ইচ্ছা দিতেও পারেন, নিতেও পারেন। ইনশাল্লাহ এতে সওয়াবও হবে।
ছোটবেলায় ওয়াজ হলে শুনতাম ‘শেখছাব’ আসবেন ওয়াজ করতে। শেখছাবরা দুর পথ পাড়ি দিয়ে মানুষকে দ্বীন ধর্মের কথা শুনানোর জন্য সফর করতেন। ফিরে যাবার কালে মানুষ কিছু দিতে চাইলেও না না বলে অনিহা পেশ করতেন।
আর এখন…