শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ দুপুর ১২:০৬
Home / অনুসন্ধান / চেতনার বাতিঘর ব্রাহ্মণাবাড়িয়া জামিয়া ইউনুছিয়া এবং কিছু কথকথা

চেতনার বাতিঘর ব্রাহ্মণাবাড়িয়া জামিয়া ইউনুছিয়া এবং কিছু কথকথা

12549112_1961052027452545_328975548117111991_n

মুনশি আবু আরফাক

ভূমিকা : গত ১১ জানুয়ারি ২০১৬ ঈসায়ি সোমবার সন্ধ্যা থেকে ৫ ঘণ্টব্যাপী মারকাজে ইলমী রাসূল সা.’র ইশারায় যুগশ্রেষ্ঠ সমাজ সংস্কারক আল্লামা ইউনুস দেওবন্দী রাহ. কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাদরাসায় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী এবং পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক অতর্কিত বর্বর হামলা, ভাংচুর ও নির্মম হত্যাজজ্ঞের ঘটনা ঘটে। পরদিন মঙ্গলবার দিনবর চলে আগত শোকাহত মানুষের উপর আক্রমণ। এমনকি দুপুর ১২.১৫ মিনিট থেকে জামিয়ায় সমবেত শোকাহত তৌহিদী জনতার উপর চলে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা-গুলি, পুলিশ কর্তৃক গুলি বর্ষণ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপসহ নির্যাতন নিপীড়ন ও অত্যাচার। যার বিবরণ পেশ করলে ২৬ মার্চের ভয়াল কালো রাতের ইতিহাসকে হার মানাবে। এমনই এক পরিস্থিতিতে কে বা কারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুর সম্রাট ওস্তাদ আলা উদ্দিন খাঁ হল ভাংচুর করে। তথাকথিত সাংস্কৃতিতে বিশ্বাসী একদল ধর্মান্ধ ধর্ম বিরোধী নাস্তিক উঠেপড়ে লেগে যায় কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে। তারা সস্কৃতি বিশ্বাস করে না। তারা মিছিল মিটিং, প্রবন্ধ-নিবন্ধসহ বিভিন্নভাবে আক্রমণ করতে থাকে কওমী মাদরাসার ছাত্র এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিরুদ্ধে। চলমান প্রবন্ধে এসম্পর্কে কিছু লেখার প্রয়াস আছে।

জামিয়া ইউনুছিয়া কি?
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি জেলার নাম। বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশের নাম। মুসলমানদের ঈমান ও আমলকে ধ্বংস করার জন্য ইসলামের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত একদল ইসলাম বিদ্ধেষী ইয়াহুদী নাসারা তথা পশ্চিমা গোষ্ঠী ইসলামের বিরোদ্ধে কাজ করে আসছে। এই মিশনকে সামনে নিয়ে ইংরেজরা ভারত উপমহাদেশে তৈরি করে গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে। ভণ্ড গোলাম আহমদের অনুসারীরা সরলমনা মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করার পয়তারায় লিপ্ত হলে এর মোকাববেলায় তাওহীদে এলাহীর বার্তাবাহক হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আগমণ করেন আল্লামা ইউনুছ দেওবন্দী রাহ.। হযরতে আগমণে দ্বীনের দিশা পায় সরলমনা মুসলামনগণ।
মুসলমান সন্তানদেরকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে আনুমানিক ১৯১৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র কান্দিপাড়ায় প্রতিষ্ঠা করেন জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত জামিয়া তার স্বমহিমায় বিদ্যমান আছে এবং জাতির বৃহত্তর খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে।

alauddin-khaসুর সম্রাট ওস্তাদ আলা উদ্দিন খাঁ কে?

ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সমগ্র ভারত উপমহাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী পরিচিত করেছেন যিনি, তিনি হলেন তিতাস পাড়ের সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ। বিশ্ব বরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জন্ম ১৮৬২ সালে নবীনগরের শিবপুর গ্রামে। তিনি সঙ্গীতের প্রথম তালিম গ্রহণ করেন বড় ভাই সঙ্গীত সাধক ফকির আফতাব উদ্দিন খাঁর কাছে। পরে বাংলার জনপদে ঘুরে ঘুরে তিনি খুঁজে পান লোক সুরের ভাণ্ডার। কলকাতার সঙ্গীত সাধক গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য ওরফে নুনো গোপালের শিষ্যত্বও গ্রহণ করেন। অমৃত লাল দত্ত ওরফে হাবু দত্তের কাছে তিনি বাশি, পিক্স, সেতার, মেন্ডোলীন, ব্যাঞ্জো প্রভৃতি যন্ত্রে দক্ষতা অর্জন করেন। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের পরে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ মাইহারের রাজদরবারে সঙ্গীত গুরুর আসন লাভ করেন। বিশ্ববিখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয় শঙ্করের সসাথে তিনি বিশ্ব ভ্রমণে বের হন ১৯৩৫ সালে। এসময়ে তিনি ইংল্যান্ডের রাণী কর্তৃক ‘সুর সম্রাট’ খেতাব প্রাপ্ত হন। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ১৯৫২ সালে সঙ্গীত একাডেমী পুরস্কার, ১৯৫৮ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কার, ১৯৭১ সালে পদ্ম বিভূষণ, ১৯৬১ সালে বিশ্ব ভারতী প্রবর্তিত দেশিকোত্তম খেতাবপ্রাপ্ত হন। ১৯৭২ সালে ৬ নভেম্বর এই সঙ্গীত সাধক পরলোক গমন করেন।

জামিয়া ও সুর সম্রাট
ঐশি গ্রন্থ আল কুরআন এর সর্বপ্রথম অবতীর্ন আয়াত- “পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।” রাসূলে আরাবী সা.’র হাদীস হাদীস- “ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা সকল মুসলমান নর নারীর উপর ফরজ।” কুরআন এবং হাদীসের বর্ণিত বিধান অনুযায়ী দ্বীনি ইলম অর্জন করা ফরজ। যার মাধ্যমে মানুষ তার নীতি নৈতিকতা, উত্তম চরিত্র, ধর্মীয় ও সামজিক বিধিমালা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা অর্জন করতে পারবে। অপর দিকে শরিয়তের বিধানে গান বাধ্য হারাম, তার চর্চা ও নিষেধ।

indexগান-বাদ্য

গান বাজনা শ্রবণ করার নিয়তে রেডিও, টেপ রেকর্ডার, চেঞ্চার, ক্যাস­েট, মিউজিকসামগ্রী প্রস্তুত করা, ক্রয়-বিক্রয় করা ,যৌতুক বা উপহার স্বরুপ দেওয়া ইত্যাদি গুনাহে জারিয়াহ। গান-বাজনা করা ও শুনা কবীরা গুনাহ ও হারাম। গান শিক্ষা করা বা শিক্ষা দেওয়ার জন্য হারমুনিয়াম, বাঁশি বা বাদ্যযন্ত্র ক্রয় করা, বিক্রয় করা ইত্যাদি গুনাহে জারিয়া। গান বাজনা বা নৃত্য শিক্ষা করা বা দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা, এতে উৎসাহ দেয়া বা যেকোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা করা গুনাহে জারিয়াহ। (সূত্র. গুনাহ জারিয়াহ ৩৩, ৩৪ পৃ)

আলোচনায় বুঝা গেল, সুর সম্রাট ওস্তাদ আলা উদ্দিন খাঁ’র সকল কর্ম শরিয়ত বিরুধী এবং হারাম। তার পক্ষাবলম্ভন, শিক্ষা গ্রহণ সবই নাজায়েজ। সুর সম্রাট ওস্তাদ আলা উদ্দিন খাঁ কেমন মায়ের সন্তান,  যার মা তার সন্তানকে এমন খারাপ ও মন্দ কর্মের শিক্ষা দিয়েছেন। দুঃখ তার ও তার মা বাবার জন্য, যার সন্তান জগত বিখ্যাতগুনাহের উৎস।.ইতি পূর্বে সুর সম্রাটের শিক্ষদের আলোচনা হয়েছে। তার কয়েক জন শিষ্যে বিখ্যাতশিষ্যরা হলেন পন্ডিত রবি শংকর, পন্ডিতনিখিল ব্যানার্জী, বসন্ত রায়, পান্নালালঘোষ, তিমির বরণ, ইন্দ্রনীল, শ্যামগাঙ্গুলী,শরণ রানী, খাদেম হোসেন খান, নিখিলবন্দ্যোপাধ্যায়, ফুলঝুড়ি খান প্রমুখ।.আশ্চার্য আমি সুর সম্রাট আলা উদ্দিনের শিক্ষক এবং ছাত্রের অধিকাংশ হিন্দু। তার কর্ম খারাপ তার শিক্ষায় শিক্ষা গ্রহণ করে হাজার হাজার মানুষ ধর্মদ্রোহী হয়েছে। নাস্তিক হয়েছে ঈমান হারিয়েছে। তার পর ও এক শ্রেণীর বিকৃত মনা মানুষ সমাজের কান্দা মানুষ, অর্থ ও পদের লোভে ধর্মীয় বিধি বিধান না বুঝে সুর সম্রাট আলা উদ্দিন বা আলা উদ্দিন সংগিতাঙ্গনের জন্য মায়া কান্না করে। তারা নাস্তিক তারা ধর্মদ্রোহী তারা যুগের মালাউন।

Brahmanbaria_Clash_Dead_Pic_3শহীদ হাফিয মাসউদুর রহমানআওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী

গত ১১ জানুয়ারী ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইউনুছিয়ায় সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৬ঘণ্টাব্যাপী ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস ও আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী কর্তৃক স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা, ভাংচুর, গুলি ও বোমা বর্ষণ, দেশী দা, চাপাতিসহ অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত বাহিনী জামিয়াতে হামলা করে। রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে মাদরাসার মাদানী ছাত্রবাসের তালা ভেঙ্গে ছাত্রবাসে প্রবেশ করে ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস ও তাপস চক্রর্বতী। হিফয বিভাগের ছাত্র মাহফুজের ভাষ্যমতে, “পুলিশ ছাত্রবাসের তালা ভেঙ্গে ভিতরে ডুক শিশু ছাত্রদের নির্যাতন করে। কিছু ছাত্র আত্মরক্ষার জন্য ছাদে উঠে। আমি ও মাসুদ ভাই ছাদে উঠি। পুলিশ আমাকে গুলি করে। মাসুদ ভাইকে গুলি করে। মাসুদ ভাই শুয়ে পড়ে। পুলিশ বলে, ভান ধরেছ! লাঠি দিয়ে মাসুদ ভাইকে মারে। কিছুক্ষণ পর লাথি মেরে চার তলার ফ্লোর থেকে ফেলে দেয় এবং ,শত বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে দিলাম।”

12508952_1660983137516444_2499755804781227257_nসন্ত্রাসী কে?
অস্র থাকে আওয়ামীলীগ, যুব লীগ, ছাত্র লীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, পুলিশ লীগ, কলেজ-ভার্সিটির সোনার ছেলেদের হাতে। কিন্তু নিরস্ত্র কওমী ছাত্রদের উপর পুলিশ কর্তৃক জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস ঘোষণা- “উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাঁড়ে চাপাতেই” সরকারের এই মিথ্যাচার। অস্ত্রের ঝনঝনানি চলে কলেজ সার্ভিটি বিশ্বাবিদ্যালয়ে নেতৃত্ব দেয় আওয়ামীলীগের উচ্চপদস্থ নেতৃবৃন্দ। হল দখল করে চর দখলের মত।

আওয়ামীলীগ ও ইসলাম
বাংলাদেশ একটি ইসলামী রাষ্ট্র। শতকারা ৯০ ভাগ মুসলমানদের এই দেশে ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে অথবা ইসলামের বিরুদ্ধে আইন করলে মুসলমানরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করবে, এটাই স্বাবাবিক। আর উলামায়ে কেরাম জাতির ধর্মীয় নেতা হিসেবে এর নেতৃত্ব দিবেন- এটাই কাম্য। কিন্তু ধর্ম বিদ্ধেষী নাস্তিক আওয়ামীলীগ ধর্মীয় আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে সময়ে সময়ে এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের প্রাণের স্পন্দন উলামায়ে হক্কানীকে কারাগারে নিয়ে অসহ্য নির্যাতন-নিপিড়ণ করে। তাদের উপর অত্যাচারের স্টিমরোলার চলে।
আল্লামা শামসুদ্দিন কাসেমী রাহ., আল্লামা আজিজুল হক রাহ., আল্লামা মুফতী আমিনি রাহ., আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী দা.বা., আল্লামা মুফতী মোহাম্মদ ওয়াক্কাস দা.বা.’র মাঝে উল্ল্যেখযোগ্য।
আওয়ামীলীগের মন্ত্রী, এমপি ও নেতা-কর্মীরা ইসলামী আন্দোলনের জন্য উলামায়ে কেরামকে দায়ী করেন, কিন্তু যাদের কারণে উলামায়ে কেরাম তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হন, তাদেরকে দায়ী বা দোষী সাবস্ত করে না।
গত ১১ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়ায় হামলার আদেশদাতা হলেন আওয়ামীলীগ নেতা ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর আসনের এমপি র আ ম উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী এবং মসৎ ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী এড. সায়েদুল হক এমপি। কিন্তু আওয়ামীলীগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক যুগশ্রেষ্ঠ কুলাঙ্গার আল মামুন সরকার জেলা আওয়ামীলীগের সভায় বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বড় হুযুর মুসলমানদের প্রাণের স্পন্দন রাহবারে উম্মাহ আল্লামা মনিরুজ্জামান সিরাজী দা.বা. কে এর উস্কানিদাতা ঘোষণা করে।
শুধু কি তাই! বাংলেদেশের ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামীলীগ যত কাজ করেছে, তার সিংহভাগই ইসলাম বিরোধী, ধর্ম বিরোধী।
বাংলাদেশ স্বাধীণতা লাভ করে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীণতার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে অবদান রাখে ভারত। আর আমেরিকা হল ইসলামের চরম শক্র। বাংলাদেশের আওয়ামীলীগ বা মুজিব প্রজন্ম হল হিন্দু এবং ইংরেজদের ক্রসে তৈরি। তাই বাংলাদেশের আওয়ামীলীগের কাজ হল ইসলাম বা ধর্ম বিরোধী।
হিন্দুরা ভারতে বিভিন্ন সময় মুসলমানদের উপর আক্রমণ করে, ইংরেজরা বিশ্ব মুসলিম নিদনে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের আওয়ামীলীগও ছলে বলে কলে কৌশলে সে মিশনই বাস্তবায়ণ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আপনাদের বিশ্বাস না হলে গভীর নজরে আওয়ামীলীগের কাজ প্রত্যক্ষ করুন, বাস্তবতা আপনাদের সামনে সূর্য়ের আলোর মত জ্বলজ্বল করবে।

উপমহাদেশ থেকে ইংরেজ বিদায় ও তাদের দোষরদের কর্মকাণ্ড
কথায় বলে, নদী মরে গেলেও তার রেখা বদলায় না। ৮০০ বছর উপমহাদেশ মুসলমানদের শাসনের পর ব্যবসার নামে আগমণ করে বৃটিশরা। সরলমনা মুসলমানেরা তাদের আগমণের মূল্য লক্ষ্য বুঝতে পারেনি। চাটুকারদের চাটুকারিতার কারণে মুসলমানেরা রাষ্ট্র পরিচালনায় বর্থ্য হয় এবং ক্ষমতা কেড়ে নেয় ইংরেজরা।
এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা উপলব্ধি করতে পারে বিষয়টি। মুসলমানদের নেতৃবৃন্দ উলামায়ে কেরাম ইংরেজ বিতাড়িত আন্দোলনের ডাক দেন। সারা দেশের মুসলমান সজাগ হন এবং দেশ স্বাধীনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। তখন ইংরেজ সরকার মুসলমানদের মাঝে বিভক্ত তৈরির জন্য কাদিয়ানী, মওদূদী, রেজভী, বেরলভী মতবাদের জন্ম দেয়। এই প্রত্যেকটি মতবাদই ইসলাম ও ধর্ম বিরোধী কুফুরী মতবাদে বিশ্বাসী। তাদের সাথে রয়েছে শিয়া মতবাদ।
বর্তমান আওয়ামীলীগও ইংরেজদের রাজনৈতিক দুসর আকিদাগতভাবে এই সমস্ত কুফুরি মতবাদে বিশ্বাসী। অনেক বিষয়ে এদের থেকেও নিকৃষ্ট তথা নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসীও তাদের অনুসারী।
সময়ের দাবী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের ঐক্যমতের সীদ্ধান্তের প্রয়োজন যারা আওয়ামীলীগ করবে তাদের জানাযা নেই, মুসলমানের কবরস্থানে তাদের দাফন নেই, মুসলমানদের মসজিদ ও ঈদগাহে তাদের আগমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

8269031_origআওয়ামীলীগ কওমী মাদরাসার বিরোধী কেন ?
বাঙ্গালী জাতি জন্মসূত্রে মুসলমান তবে কর্ম সূত্রে বিজাতি। কথাটা অনেকের মনে আঘাত লাগলে লাগতেও পারে। আমি কিন্তু আঘাত দেয়ার জন্যই বলছি। ধর্মীয় শিক্ষা মুসলমানের জন্য ফরজ। আলিফ বা তা ছা, নবী করিম সা. বলিয়াছেন, অজুর ফরজ পাঁচটি, পাঁচ কালেমা ইত্যাদি বিষয় মুসলিম শিশুদের প্রথম শিক্ষা হওয়ার কথা। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মা-বাবা তাদের আদরের সন্তানকে সকালবেলা মক্তব-মাদরাসায় না পাঠিয়ে কিন্ডার গার্টেন, ইংরেজ মিডিয়াম প্রাইভেট স্কুলে পাঠায়।
এই সমস্ত সন্তারা কুরআন-হাদিস না পড়ার কারণে, পরিণত বয়সে মূল শিক্ষা না থাকার কারণেই ধর্মের প্রতি অবজ্ঞা প্রতদর্শন করে অথবা ইংরেজ সৃষ্ট বিভিন্ন কুফুরী মতবাদে বিশ্বাসী হয়।

কওমী মাদরাসা বিরুধিতা কার মিশন?
ইংরেজদের এদেশে আগমণকালে উপমহাদেশে হাজার হাজার কওমী মাদরাসা ছিল। কিন্তু তাদের টার্গেট ছিল, যদি কওমী মাদরাসা গুলি বন্ধ করে দেওয়া যায়, তাহলে মুসলমানের মূল আদর্শ শিক্ষাদীক্ষা থেকে মুসলমান সমজাকে দূরে সরএয় আনা যাবে আর তাতে করে বিজাতিয় কৃষ্টি-কালচার মুসলমানদের ভিতরে প্রবেশ করানো যাবে; এজন্য ইংরেজরা উপমহাদেশের অনেক কওমী মাদরাসা বন্ধ করে দেয়। ১৮৫৭ সালের আজাদী আন্দোলনে হাজার হাজার উলামায়ে কেরামকে হত্যা করা হয়। ১৮ নভেম্বর ১৮৫৭ সালে দিল্লীর জামে মসজিদের সামনে এক দিনে ২৭ হাজার উলামায়ে কেরামকে হত্যা করা হয়। যার ফলে তৎকালীন সময়ে কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার কাফন, জানাযা ও দাফনের জন্য উপযুক্ত লোক পাওয়া দুষ্কর হয়ে যেত।
আজ বৃটিশদের দালাল সরকার সেই এজেন্ডা বাস্তবায়ণ করার চেষ্টা করছে। তার প্রমাণ হল, গত কিছুদিন আগে সরকারের মন্ত্রী এড. কামরুল ইসলাম চট্টগ্রামের এক সভায় বলেছেন, “কওমী মাদরাসা ব্যাঙ্গের ছাতার মত এদেশে বেড়ে চলছে। এই মাদরাসাগুলির মাঝে নাকি জঙ্গীর ট্রেনিং হয়।”

12431345_540609006104238_1062470020_nকওমী মাদরাসার ছাত্রদের অবদান
যুগ যুগ ধরে কওমী ছাত্ররা এদেশের মুসলমানদের সন্তানদেরকে সহী কুরআন শিক্ষা, হাদিস শিক্ষা, ধর্মীয়, সামাজিক, দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণকর দ্বীনি শিক্ষা দিয়ে আসছে।সরকারী ফান্ড থেকে এর কোন ওয়াজিফার ব্যবস্থাও নেই। এমনকি কওমী মাদরাসার সন্তানরা গর্ব করে বলতে পারে, বাংলাদেশে যদি তারা না থাকত, তবে তোমারা হতে হারামজাদা! কারণ কওমী সন্তানরাই তো তোমার মা বাবাকে সহী পদ্ধিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। তোমাদেরকে হারামজাদা হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। আজও হাজার হাজার দ্বীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন, যার কোন ওয়াজিফা নেই বা ওয়াজিফার আশাও করেন না তারা।
কওমী মাদরাসার ছাত্রদের থেকে দেশপ্রেমী আর কেউ নেই। স্বাধীনতার পর দেশ নিয়ে যতবােই বিদেশী চক্রান্ত হয়েছে, কওমী মাদরাসার ছাত্ররাই তখন দেশ রক্ষার রাজপথে আন্দোলনে করেছে। যতদিন এদেশে কওমী মাদরাসার ছাত্ররা থাকবে, ততদিন পর্যন্ত কোন পরাশক্তি চোখ তুলে এদেশ নিরাপদ থাকার আশা করা যায়।
বুঝতে হবে, যারা কওমী মাদরাসার বিরোধিতা করে তারা ইসলাম, দেশ, জাতি ও মানবতার দুশমন।

মুসলিম হয়ে সুর সম্রাট আলা উদ্দিন প্রীতি
বিশিষ্ট লেখক ফরহাদ মাজহার লিখেছেন, সুর সম্রাট আলা উদ্দিনের হিন্দু শিক্ষক যদি জানতে পারতেন যে, আলা উদ্দিন মুসলমান; তাহলে তাকে গান শিক্ষা দিতেন না। তাই আলা উদ্দিন তার মুসলিম নাম পরিবর্তন করে হিন্দু নাম পরিচিত হতে বাধ্য হন। একজন মুসলিম মায়ের সন্তান গান শিক্ষা করতে হিন্দু পরিচয় ধারণ করতে হল, যে গান শিক্ষা শরিয়তের দৃষ্টগুন থেকে সম্পূর্ণ হারাম। এমনকি এই শিক্ষার জন্য অর্থ ব্যয়, পরামর্শ, জায়গা দান শরিয়তের পরিভাষায় নাজায়েজ ও হারাম।
আপনি মুসলিম দাবী করেন মসজিদ মাদরাসায় হামলা হলে আপনার ঈমানী জজবায় আঘাত আসেনা। হাজার হাজার যুবক যুবতীর জীবন নষ্টের কারিগর সুর সম্রাষ্ট আলা উদ্দিনের সঙ্গীতাঙ্গনে হামলা হলে আপনার কলিজায় আঘাত লাগে! আপনি কেমন মুসলমান!

উপসংহার
আসুন! মুসলমান হিসেবে জীবন-যাপন করি। কুরআন-সুন্নাহ, মসজিদ-মাদরাসা, আলেম-উলামাদের পথ অবলম্ভন করি। সত্য মিথ্যার দুটি পথ, সত্য পথই মুসলমানদের পথ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সত্য বুঝার তাওফিক দান করুন। আমীন।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...