শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৫:৫৭
Home / কবিতা-গল্প / কারো পা ছুঁয়ে সালাম

কারো পা ছুঁয়ে সালাম

ccebeee4f5aa395a2756a4763b7e539dজীম হামজাহ ::

কারো পা ছুঁয়ে সালাম করাটা যদিও আমি পছন্দ করি না,তারপরও সামাজিকতার স্বার্থে তার সাথে আমিও শাশুড়ির পা ছুয়ে সালাম করে দু’জন একসাথে ওঠে দাঁড়ালাম।শাশুড়ি আমাকে কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন,’বাবা তোমার হাতে তুলে দিলাম।আমার মেয়েকে দেখে রাখিও।’

কথা আর এগুলো না।মা,মেয়ে গলাগলি করে কাঁদতে লাগলেন।আমি তাদেরকে কান্নারত অবস্থায় রেখে চুপচাপ গিয়ে গাড়িতে উঠে বসি।কিছুক্ষণ পর মধ্য বয়সী এক লোক তাকে কোলে করে নিয়ে আমার ডানপাশে বসিয়ে দিলেন।গাড়িতে উঠার সময় মরার কান্না জুড়ে দিল।
গাড়ি ছাড়ার পর কান্না আওয়াজটা একটু কমছে বটে তবে অবিরাম কাঁদছে।পেছনের সিটে বসে আমার শালি তিনটি কী সব কানাঘুষা করছে আর হাসছে।আমি সেদিকে তেমন কান দিলাম না।
অনেক দূর গিয়েও যখন দেলাম তার কান্না থামছে না, ননস্টপ কেঁদে যাচ্ছে।বিরক্ত হয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে শালিত্রয়কে বললাম-আর পারছি না।তোমাদের টেপটা একটু থামাও।উঠার সময় থেকে নিয়ে সেই এক ক্যাসেটই চলছে।
মধ্যখান থেকে এক শালি তুরতুর করে বলল-আমাদের বলছ কেন? তোমার টেপ তুমি সামলাও।বলেই হাসতে হাসতে একে অপরের ওপর লুটিপুটি খাচ্ছে।
আমি আর কোন কথা বাড়ালাম না।
দু’জনে বিয়ে করেছি।সে বিয়ে করছে আমাকে আমি বিয়ে করছি তাকে।তো,আমি কাঁদছি না,সে কাঁদবে কেন? আচ্ছা মেনে নিলাম এটা নিয়ম।মেয়েরা বিয়ের সময় একটু কাঁদে।তাহলে এই নিয়মটা এতোক্ষণ পালন করতে হবে এটা আবার কোন নিয়ম?
মনে মনে অফ সুইচ খুঁজছি কিন্তু পাচ্ছি না।তার পিঠে হাত বুলিয়ে বললাম-লক্ষ্ণিটি আমার কাঁদে না,কাঁদে না।কাজ হল না। একটু স্লো হলেও কাঁদছেই,কাঁদছে।যে ভাবে হোক তার কান্না আমাকে থামাতে হবে।
হঠাৎ মাথায় একটা বুদ্ধি এলো।ড্রাইবারের দিকে তাকালাম।এমন ভাবে গাড়ি চালাচ্ছে,মানুষ না রোবট কিছুুই বুঝতে পারছি না।একটা দুকান দেখতে পেলাম।ড্রাইবারকে বললাম,ড্রাইবার ভাই,ড্রাইবার ভাই গাড়িটা থামান।
গাড়ি থেকে নেমে দুকান থেকে দু’টা ললিপপ নিয়ে উঠলাম।একটা বাড়িয়ে দিয়ে বললাম-এইবার কান্না থামাও।দেখো তুমার জন্য ললিপপ নিয়ে এসেছি।কান্না থামাবে দূরের কথা ললিপপের দিকে একবার তাকিয়েও দেখলো না।ও বুঝছি।এই নাও ছিলে দিয়েছি,এবার খাও।চু,চু।হাতে ধরিয়ে দিতেই সেটা ছুড়ে নিচে ফেলে দিল।আমি অবাক!
ও বুঝছি,বুঝছি তুমি কলা খাইবা,কলা! ঠিকাছে ঠিকাছে সামনে কলার দুকান পেলে তুমার জন্য আস্ত এক কাঁদি নিয়ে আসবো।
ড্রাইবার ভাই,ড্রাইবার ভাই,সামনে কলার দুকান দেখলে গাড়িটা একটু থামায়ো।
ড্রাইবারও কম যায় না।ফুল ভলিয়মে গান ছেড়ে, দিল গাড়ির গতি বাড়িয়ে।
গান বাজছে-
তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে
হৃদয়ের কোঠরে রাখবো
আর হৃদয়ের চোখ মেলে তাকিয়ে,
সারাটি জীবন ভরে দেখবো।
আমি নেই নেই নেই রে…

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাও পাবেন ৫% সুদের গৃহঋণ

কমাশিসা: সরকারি চাকরীজীবিদের মত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদেরও গৃহ নির্মাণে ৫ শতাংশ ...