শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ১:০৫
Home / অনুসন্ধান / ইসলামী ঐক্যজোট ছাড়ছে ২০ দলীয় জোট!

ইসলামী ঐক্যজোট ছাড়ছে ২০ দলীয় জোট!

untitledকমাশিসা ডেস্ক :: দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময়ের রাজনৈতিক বন্ধু বিএনপির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চলেছে ইসলামী ঐক্যজোট। জোটকে কেন্দ্র করে অনেক দিনের চাপা ক্ষোভ থেকে দলটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দলের ত্রি-বার্ষিক কনভেনশনে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামী ঐক্যজোট। বুধবার রাত সাড়ে ১১ টায় শেষ হওয়া মজলিসে শূরার জরুরি-রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ১৯৯৯ সাল থেকে চলে আসা বিএনপি-ইসলামী ঐক্যজোটের দীর্ঘ দুই যুগের সম্পর্কের ইতি ঘটবে। বুধবার রাতে বৈঠক শেষে ইসলামী ঐক্যজোটের শীর্ষ কয়েকজন নেতা  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইসলামী ঐক্যজোটের শীর্ষ নেতারা জানান, বিএনপির ওপর ক্ষোভের বিষয়ে মজলিসে শূরার ২৭ জন সদস্যই একমত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই চাপা ক্ষোভ কাজ করেছে। তবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ভেঙে এসে পরবর্তী সময়ে ইসলামী ঐক্যজোটের রাজনৈতিক রোডম্যাপ কী হবে, এ নিয়ে বিতর্ক চলেছে বিরতিহীন দুই দিন বুধবার ও মঙ্গলবার।

islami jot_111395 copy

বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে মজলিসে শূরার সদস্যরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। আগের দিন মঙ্গলবারও দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে দলের ভেতরে। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে আলোচনা চললেও রাত আটটার দিকে বিরতি দিয়ে সাড়ে আটটার দিকে ফের বৈঠক শুরু হয়। রাজধানীর লালবাগের জামিয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা ভবনে রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকটি চলে।

রাতে বৈঠকশেষে একনেতা বলেন, বিএনপি ছাড়ার ঘোষণা দেবেন চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী। তার উপরেই দায়িত্ব পড়েছে ঘোষণা দেওয়ার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামী ঐক্যজোটের এক নেতা বলেন, বিএনপির ওপর ক্ষোভের বাইরে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ছিল সরকারি চাপের। তবে, সরকারের চাপের পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধার প্রাপ্তির বিষয়টিও ইসলামী ঐক্যজোটের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে।

শুরা সদস্য এই নেতা বলেন, ছাড়ার সিদ্ধান্তে আসার আগে প্রশাসনের সঙ্গেও ইসলামী ঐক্যজোটের কয়েকটি বিষয়ে সমন্বয় হয়েছে। এর মধ্যে বড় কাটারা মাদ্রাসার অবস্থান, পরিচালনার ভার, বের হয়ে এলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, বিকল্প ইসলামী জোট গড়াসহ নানারকম বিষয় সংশ্লিষ্ট ছিল।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন ইসলামী ঐক্যজোটের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা  তিনি বলেন, চাপ তো ছিলই। হেফাজতের ঘটনার পর থেকে ইসলামী ঐক্যজোটই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। হেফাজতের কর্মকাণ্ড সারাদেশে সাংগঠনিক রূপ নিতে ইসলামী ঐক্যজোটের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করতেও পারবেন না। এছাড়া, নেতাদের নামে অসংখ্য মামলাও রয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী ঐক্য জোট মিলিত হয়ে চার-দলীয় ঐক্য জোট গঠন করে। পরবর্তী সময়ে আরও দল যুক্ত হয়ে বর্তমানে ২০ দলীয় জোটে পরিণত হয়েছে। ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় এলে ভাঙনের মুখে পড়ে ইসলামী ঐক্যজোট। যদিও ওই বছরের নির্বাচনে মুফতি আমিনী ও মুফতি শহিদুল ইসলাম দলটির মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রথম চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের সঙ্গে মনোমালিন্যে জড়িয়ে পড়ে জোট ভেঙে পৃথক ইসলামী ঐক্যজোট গঠন করেন প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনী। শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ‘ইসলামী ঐক্যজোটের’ কোনও কার্যক্রম চালায়নি।

অন্যদিকে, চারটি দল নিয়ে মুফতি আমিনীর অংশটিই ‘দল হিসেবে’ শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায়। পাশাপাশি মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্ব বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট নামে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। অন্য গ্রুপটি পলাতক মুফতি ইজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে আছে। এটির কোনও কার্যক্রম নেই।

২০ দলীয় জোট ছেরে আসলে ভাঙনের মুখে পড়বে কিনা ইসলামী ঐক্য জোট এমন প্রশ্নের জবাবে ইসলামী ঐক্যেজোটের এক নেতা বলেন, ইসলামী ঐক্যজোট ভাঙবে না। তবে নেজামী সাহেব নেজামে ইসলাম নিয়ে ২০ দলীয় জোটে থাকবেন। তিনি কোনভাবেই বিএনপি ছাড়তে চান না। গত ২৬ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মাওলানা নেজামী। মনে হয় না, উনি শেষ পর্যন্ত বিএনপি ছাড়বেন। এই নেতা বলেন, আমরা ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ঐক্য চাই।

এদিকে, ইসলামী ঐক্যজোট সূত্র জানায়, দলটির নির্বাহী পরিষদের কাউন্সিল নিয়ে মঙ্গলবার থেকে দুদিনব্যাপী বৈঠক করছেন দলটির মজলিসে শূরার সদস্যরা। এতে দলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এরমধ্যে দলের নির্বাহী পরিষদ ৬১ সদস্যের পরিবর্তে ৮১ সদস্যের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, দলটির ভবিষৎ কর্ম পরিকল্পনাও নির্ধারণ করা হবে।

About Abul Kalam Azad

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...