ফ্রান্সের দ্বীপ কর্সিকার আজাক্সিও শহরে শুক্রবার একদল উগ্রপন্থি একটি মসজিদ ভেঙে ফেলেছে এবং সেখানে থাকা বেশ কয়েকটি কোরান পুড়িয়ে দিয়েছে।
বড়দিন উপলক্ষে নেয়া কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটলো। চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ভয়াবহ হামলার পর থেকেই নান কারণে দেশটির মানুষের মধ্যে ভীতি বিরাজ করছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার নিন্দা জানানো হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মানুয়েল ভলস তার টুইটার বার্তায় একে ‘অমার্জনীয় নোংরামি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
আজাক্সিও শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতব্যাপী মুখোশধারী কিছু যুবকের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশের সংঘর্ষে দমকল বাহিনীর দুই সদস্য এবং পুলিশের এক সদস্য আহত হওয়ার পর থেকেই শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
এক বিবৃতিতে তারা আরো জানায়, পুলিশ এবং অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর সদস্যদের সমর্থনে শুক্রবার সন্ধ্যায় এলাকাটিতে জড়ো হয় প্রায় দেড়শ যুবক।
বার্তা সংস্থা এফপি জানিয়েছে, স্থানটিতে জড়ো হওয়া যুবকেরা ‘আরবরা বের হয়ে যাও, এটা আমাদের দেশ’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।
স্থানীয় কর্মকর্তা ফ্রাঁসোয়া লালানে জানান, তারা পাশেই অবস্থিত একটি মসজিদের কাচের দরজা ভেঙে মসজিদটি তছনছ করে দিয়েছে এবং সেখানে থাকা কোরানসহ অন্যান্য ধর্মীয় বই পুড়িয়ে ফেলেছে। প্রায় ৫০টি ধর্মীয় বই রাস্তায় ছুড়ে ফেলা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ফ্রান্সে মুসলিমদের সংগঠন ‘দ্য ফ্রান্স কাউন্সিল অব দ্য মুসলিম ফেইথ’ বড়দিনকে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের জন্য একটি পবিত্র দিন আখ্যায়িত করে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, এ বছর মুসলিমদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদের (স.) জন্মদিন এবং খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন বা বড়দিন একইসঙ্গে পালিত হয়েছে। কোরানে যিশুখ্রিস্টকে হযরত ইসা (আ.) নামে পরিচিত করা হয়েছে।
ঘটনাটিকে ‘বর্ণবিদ্বেষ এবং অহেতুক ভীতির লক্ষণ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নার্দ কাজনিউ। কর্সিকাতে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলারও নিন্দা জানান তিনি।
চলতি বছরই আঞ্চলিক নির্বাচনে কর্সিকাতে প্রথম জাতীয়তাবাদি সরকার ক্ষমতায় আসে