আব্দুল আজীজ আল-হেলাল::

এক লোক তার স্ত্রীর কাছে কসম করে বললো। “যদি তোর সাথে আমি আগে কথা বলি তবে তুই তালাক।”
স্ত্রী ও অভিমান করে কসম করলো, “যদি আমি আগে কথা বলি তবে আমার অমুক গোলাম আযাদ।”
দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হয়ে যায়, কেউ কারো সাথে কথা বলে না।
ফলে সংসার অচল। স্বামী আগে কথা বললে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে।
সুতরাং সংসারকে রক্ষা করতে স্বামী ভীষন চিন্তায় পড়ে গেল।
অপর দিকে স্ত্রী আগে কথা বললে তার মূল্যবান গোলামটি আযাদ হয়ে যাবে,
সুতরাং সেও গোলাম হারাতে রাজী নয়।
লোকটি কসম করার জন্যে আফসোস করতে লাগলো এবং পেরেশান হয়ে আলেমদের কাছে গেল কিভাবে স্ত্রীর সাথে কথাও বলা যায় এবং তালাকও না হয়।
সকল আলেম একবাক্যে বলে দিলেন স্ত্রীর সাথে কথা বললে তালাক হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। আবার স্ত্রী আগে কথা বললে গোলাম আযাদ হওয়া ছাড়া কোন পথ নেই। সুতরাং হয় স্ত্রীর তালাক, না হয় গোলাম আযাদ এ দুই পথ ছাড়া আর কোন পথ নেই।
আলেমদের এ ধরণের বক্তব্য শুনে লোকটির পেরেশানী আরও বেড়ে গেল। অবশেষে তার মনে পড়ে গেল ইমাম আবু হানিফা (রহঃ)-এর কথা। ইমাম আযম আবু হানিফা (রহ) লোকটির সকল কথা শুনে বললেন, “যাও, তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে কথা বল। কোন ভয় নেই, তোমার স্ত্রীর তালাক হবে না।
একথা শুনে উপস্থিত সকল আলেম বিস্মিত হয়ে পড়লেন।
সকল আলেম বলতে লাগলেন, “ইমাম আবু হানিফা (রহ)-কে আমরা সবার চেয়ে জ্ঞানী বলে জানতাম। অথচ তিনি এ নীতি-জ্ঞানহীন ফতোয়া দিলেন কিভাবে! তালাকের কর্ম হওয়ার পরও কিভাবে তালাক হয় না?’
আলেমগণ অবশেষে তার কাছে এসে এরূপ ফতোয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। ইমাম আযম আবু হানিফা (রহ) জবাব দিলেন, “স্বামীর কসম খাওয়ার পর পরই স্ত্রী স্বামীকে সম্বোধন করে কসম খাওয়াতে স্ত্রীর কথা বলা হয়ে গেছে। সুতরাং এখন স্বামী কথা বললে স্ত্রীর পরে কথা বলা হবে। সুতরাং তালাক হবে না। স্বামী কথা বলার পর স্ত্রীর কথা বললে তাতে স্ত্রীরও গ্যোলাম আযাদ হবে না।’
ইমাম আবু হানিফা (রহ)-এর জ্ঞানের এ গভীরতার সবাই মুগ্ধ হলেন। তাদের আর কোন কথা শুনা গেল না।
(আল-এফাযাতুল ইয়াউমিয়্যাহ, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-২৩৫)
Komashisha