শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সকাল ৭:০৯
Home / অনুসন্ধান / কওমী মাদরাসা শিক্ষা: প্রেক্ষিত সমাজ

কওমী মাদরাসা শিক্ষা: প্রেক্ষিত সমাজ

Komashisa-Logoএহসান বিন মুজাহির ::

(১ম পর্ব) : শিরোনাম যদিও ‘কওমী’ দিয়ে। শুরুটা কিন্তু ‘ইলম’ দিয়ে। প্রথমে ইলম সম্পর্কে আলোকপাত করবো বিধায় ইলম দিয়ে বক্ষমান নিবন্ধের প্রারম্ভিকা। ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর উপর ফরজ। দ্বীন শিক্ষাকে ইসলামে ইবাদত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আমরা মুসলমান জাতি হিসেবে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থাই আমাদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা। কারণ একমাত্র ইসলাম-ই বর্বর মানুষকে সোনার মানুষে পরিণত করতে পারে। যে শিক্ষার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তা’য়ালা ও রাসুলুল্লাহর (সা.) আদর্শ সর্ম্পকে অবগতি লাভ, শরিয়তের বিধি-বিধান সর্ম্পকে জ্ঞাত হওয়া, হক ও বাতিলের পার্থক্য নিরুপণ এবং অর্জিত জ্ঞানের আলোকে নিজের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গঠন করে মহান আল্লাহর সন্তুষ হাসিলের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করা যায় এটাই হলো ইসলামী শিক্ষা। ইসলামী শিক্ষাকে দ্বীনি শিক্ষাও বলা যায়। মানবীয় গুণাবলীর বিকাশ সাধনপূর্বক আল্লাহ প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী জীবনযাপন করার জন্য ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর অপরিহার্য কর্তব্য। ইসলামী শিক্ষা তথা ইলমে দ্বীন শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োাজনীয়া অনস্বীকার্য। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহপাক কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন, পড়তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। যিনি কলমের (ব্যবহার) শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানতো না। (সূরা আলাক: ১-২)।
মহান আল্লাহ তায়ালার এ নির্দেশ থেকেই বোঝা যায় ইসলামী শিক্ষার কতটুকু গুরুত্ব। ইলমে দ্বীন শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে কুরআনে কারিমে শিক্ষাবিষয়ক প্রচুর আয়াত রয়েছে। সূরায়ে জুমারের নয় নম্বর আয়াতে আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘যারা জানে আর যারা জানে না তারা উভয়ে কি সমান হতে পারে?
জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সত্যকে জানা, উপলব্ধি করা ও উদঘাটন করা যায়। মানুষের জন্যে আল্লাহর অবদানের শ্রেষ্ঠ দান হলো জ্ঞান। আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই জ্ঞানীরাই (ওলামায়ে কেরাম) আল্লাহকে ভয় করে’। -(সূরা ফাতির:২৮)
এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে ইলমে দ্বীনের জ্ঞানীদেরকে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, হে প্রভু আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন’। (সূরা তোহা-১১৪)
মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গুহায় প্রথম যে প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত হন তাও ছিল ‘ইকরা’ অর্থাৎ পড়। রাসূল (সা:) ইরশাদ করেন,‘আল্লাহ যার দ্বারা কল্যাণ কামনা করেন, তাকে দ্বীনের জ্ঞানদান করেন। (-বুখারী ও মুসলিম)
রাসূল (সা:) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনে পথ চলে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের পথে নিয়ে যান; ফেরেশতাগণ আনন্দে তার জন্য পাখা বিছিয়ে দেন। আকাশ ও পৃথিবীবাসীগণ, এমনকি পানির মৎস্যসমূহও তার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। নক্ষত্ররাজির মধ্যে পূর্ণচন্দ্র যেমন শ্রেষ্ঠ, আবেদদের মাঝেও আলেমগণ তেমনই শ্রেষ্ঠ। বিদ্বানগণ নবীদের উত্তরাধিকারী। নবীগণ ধন-দৌলতের অধিকারী ছিলেন না, তারা বিদ্যার অধিকারী ছিলেন। যে ব্যক্তি তা গ্রহণ করেছে, সে বড় অংশ নিয়েছে। (-তিরমিজি, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)
ইসলামী জ্ঞান অর্জিত হয় সুশিক্ষার শিক্ষার মাধ্যমে। সুশিক্ষার অন্যতম পাঠশালা হচ্ছে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা। বাংলাদেশে দু’ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। এক. ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থা। দুই. জাগতিক শিক্ষা ব্যবস্থা। জাগতিক শিক্ষা বলতে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির শিক্ষাকে বুঝায়। ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা আবার দু’ধরণের। এক. কওমি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা। দুই. সরকারি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা।
ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসার আদলে ১৮০০ সালের শেষের দিকে এ দেশে কওমি মাদ্রাসার গোড়াপত্তন হয়। (চলবে)

লেখক: সাংবাদিক, কলাম লেখক ও তরুণ আলেম

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...