রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সকাল ৬:২৫
Home / অনুসন্ধান / আকাবিরের দোহাই আর কত?

আকাবিরের দোহাই আর কত?

Abrarরেজাউল করীম আবরার ●

বাংলাদেশে ইসলামী দল সংখ্যায় অনেক। সবাই আকাবির-আসলাফদের আমানত রক্ষায় ব্যস্ত সময় পার করেন। তাদের পক্ষে-বিপক্ষে কিছু বলতে গেলে, লিখতে গেলেই সমস্যা। হয়ত বেয়াদব অথবা আকাবির বিরোধী ফতোয়া চলে আসবে। নাস্তিক, ইয়াহুদিদের দালালও হয়ে যেতে পারেন। যারা ইসলামী রাজনীতি করেন, মনে হয় তারাই আকাবিরদের ঠিকাদার! তারা যা করবেন সবই আকাবির সমর্থিত। আমরা রসগুল্লারা যাই করব, সবই আকাবিরদের উল্টো।

উনারা সবাই আকাবিরদের দোহাই দেন; কিন্তু আকাবিরদের রেখে যাওয়া দলকে নিজেদের স্বার্থে টুকরো টুকরো করতে পারেন। এখনতো মাশাআল্লাহ প্রত্যেকজনের একেকটি করে দল। সবই আকাবিরদের আমানত। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে কাদা ছুড়াছুড়ি করেন, তাতে সমস্যা নেই। বামপন্থী মিডিয়াতে একজন আরেকজনকে যাচ্ছেতাই বলেন। বইয়ে এক নেতা আরেক নেতার বিরুদ্ধে লিখেন।

গত কয়েকদিন আগেতো ঢাকার দেয়ালে পোস্টর লাগিয়ে এক দল আরেক দলকে গায়েল করার চেষ্টা করেছিল- তাতে উনাদের সমস্যা হয় নাই; হওয়ার কথাও নয়। কারণ তারা আকাবিরদের রেখে যাওয়া আমানতের সংরক্ষক! আকাবিরদের সম্মান রক্ষার্থে উনারা এগুলো বীরদর্পে করেছেন!

প্রাচীনতম একটি ইসলামী দলের কাউন্সিল সামনে। তা নিয়ে আকাবিরদের উত্তরসুরিরা যেভাবে ফতোয়া চালাচালি করতেছেন, তা দেখে আমরা লজ্জিত। এক দল আরেক দলকে যে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন, তা দেখে হয়ত শয়তানও বিজয়ের অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে। ঐদিনতো এক ভাই লিখেছেন, যারা কওমী মাদ্রাসায় পড়বে; কিন্তু তাদের দল করবে না, তারা কওমীর জারজ সন্তান। আকাবিরদের দুশমন! হযরতের লেখা পড়ে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিলাম।

আরেক দলের যিকির হল, যারা জোট করেছেন, তারা জামাতের দালাল। খালেদাকে সুন্দর দেখে তার শাড়ীর নিচে আশ্রয় নিয়েছেন! এরা ভ্রান্ত। সুতরাং আকাবিরদের পেতে হলে তাদের দলে যোগ দাও। বাংলাদেশে ইসলাম কায়েম হয়ে যাবে। অথচ তাদের অনেকেই এমন যে, যদি জিজ্ঞাসা করেন- বাংলাদেশের রাজধানী কোথায়? তাহলে এক থানা শহরের নাম বলে ফেলবে। তাদের রাজধানী আলাদা। রয়েছেন প্রেসিডেন্ট। কয়েক থানা মিলে তাদের দল। ওখানেই তাদের কেন্দ্রীয় অফিস।

আমাকে একটু বলুন, এগুলো আমাদের আকাবিরদের রেখে যাওয়া আদর্শ? আকাবিররা কি কারো বিরুদ্ধে পোস্টার সেঁটেছিলেন? একই দল দুই গ্রুপ হয়ে একে অপরের সভামঞ্চ ভেঙ্গেছিলেন? একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে নির্লজ্জ ফতোয়াবাজি করেছিলেন। জমিয়তের ছাত্রদের খেলাফতের মাদ্রাসা থেকে, খেলাফতের মাদ্রাসা থেকে জমিয়তের ছাত্রদেরকে পিটিয়ে বের করে দিয়েছিলেন? আকাবিররা কি টিভি-ক্যামেরার সামনে একে অপরকে নাস্তিক-মুরতাদদের দালাল ফতোয়া দিয়েছিলেন? আকাবিররা কি আরেক দলের সমাবেশে কখনো লাঠি নিয়ে আক্রমন করতে বের হয়েছিলেন? তাওহীদি জনতাকে গুলির সামনে রেখে বিলিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন?

এরপরও উনারা আকাবিরদের জ্বলন্ত উত্তরসুরি! ফাইজলামীরও একটি সীমা থাকা দরকার। আকাবিরদের নাম বেঁচে আর কত নিজেদের উদরপূর্তি করবেন? আকাবিরে দেওবন্দ হয়ত বাংলাদেশি আলেমদের কাছে সবচেয়ে বেশি মজলুম।

লেখক : মুফতি ও মুহাদ্দিস, জামিয়া আবু বকর সিদ্দিক রাহ., ঢাকা।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...