শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ৪:০৪
Home / অনুসন্ধান / এ কেমন অসত্য প্রচার? (২য় পর্ব)

এ কেমন অসত্য প্রচার? (২য় পর্ব)

ইবনে হিব্বানের নামে এ কেমন মিথ্যাচার?

sahih-ibn-hibbanরেজাউল করীম আবরার ::

মুযাফফার বিন মুহসিন। আহলে হাদীসদের শায়খ।স্কলার। ওনার বই পড়ে আহলে হাদীসরা লাফালাফি করেন! অথচ তিনি একজন জালিয়াতিকারী। নিপুনভাবে দক্ষ হাতে জালিয়াতি করেছেন। ওনার সমর্থকরাতো বাংলা বই পড়ে আহলে হাদীস। এজন্য তিনি বাটপারী এবং দাগাবাজির চূড়ান্ত পরাকাষ্টা প্রদর্শন করেছেন! অথচ তিনি এখন আহলে হাদীসদের মাথার তাজ!

আপনি অবাক হয়ে যাবেন, হানাফীদের দলীল জাল প্রমাণিত করার জন্য তিনি কি পরিমাণ নিচু কাজ করেছেন।এ রকম একটি ঘৃণিত কাজের উদাহরণ দেখুন, তিনি লিখেন- “যায়েদ বিন সাবেত বলেন, যে ইমামের পিছনে কিছু পড়বে তার সালাত হবে না।মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৩৮০৯, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হা/৮০২, মুওয়াত্ত্বা মুহাম্মাদ, হা/১২৮।
এরপর বলেন, বর্ণনাটি জাল। এর সনদে আহমদ ইবনু আলী ইবনু সালমান মারুযী নামে একজন রাবী রয়েছে। সে হাদীস জাল করত। ইবনু হিব্বান বলেছেন, এই হাদীসের কোন ভিত্তি নেই। (জাল হাদীসের কবলে রাসূলুল্লাহর সালাত, ২৩৪, আছ ছিরাত প্রকাশনি।)

আপনি অবাক হয়ে যাবেন। উনি যে তিন কিতাবের হাওয়ালা দিয়েছেন, সেই তিন কিতাবের বর্ণনায় আহমদ ইবনু আলী ইবনু সালমান মারুযী নামে কোন বর্ণনাকারী নেই।নিজের পক্ষ থেকে হাদীসটিকে জাল প্রমাণিত করার জন্য একজন মিথ্যুক রাবীর নাম যোগ করেছেন। তাও আবার ইবনে হিব্বানের নামে! কি পরিমাণ খারাপ হলে এ ধরণের ঘৃণিত এবং ধিকৃত কাজ করা সম্ভব!
এবার দেখুন মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বার হাদীস-

حدثنا وكيع عن عمر بن محمد عن موسى بن سعد عن زيد بن ثابت قال : من قرأ خلف الامام فلا صلاة له

অর্থাৎ, হাদীসটি আবু বকর ইবনে আবি শায়বা বর্ণনা করেছেন ওয়াকী’ থেকে। তিনি উমর বিন মুহাম্মাদ থেকে। তিনি মুসা বিন সাদ থেকে,তিনি যায়েদ বিন সাবেত রা. থেকে।
আপনি বলুন, এখানে কি আহমদ ইবনু আলী ইবনু সালমান মারুযী নামের কোন বর্ণনাকারী আছে?
মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাকের বর্ণনা হল-

عبد الرزاق عن داود بن قيس قال : أخبرني عمر بن محمد بن زيد بن عمر بن الخطاب قال : حدثني موسى بن سعيد عن زيد بن ثابت قال: من قرأ مع الامام فلا صلاة له

আব্দুর রাজ্জাক বর্ণনা করেন দাউদ বিন কায়স থেকে। তিনি উমর বিন মুহাম্মাদ বিন যায়দ থেকে, তিনি মুসা বিন সাইদ থেকে, তিনি যায়দ বিন সাবিত থেকে বর্ণনা করেন।
আপনি বলুন, এখানে কি আহমদ ইবনু আলী ইবনু সালমান মারুযী নামের কোন বর্ণনাকারী আছে? শয়তান এসে মনে হয় মুযাফফার সাহেবদের বলে যায়? নতুবা উনারা কোথায় পায়??

মুয়াত্ত্বা মালেকের বর্ণনা হল-

قال محمد : أخبرنا داود بن سعد بن قيس حدثنا عمرو بن محمد بن زيد عن موسى بن سعد بن زيد بن ثابت يحدثه عن جده أنه قال : من قرأ خلف الإمام فلا صلاة له

ইমাম মুহাম্মাদ বর্ণনা করেন দাউদ বিন কায়স থেকে, তিনি সা’দ বিন কায়স থেকে,তিনি আমর বিন মুহাম্মাদ থেকে, তিনি মুসা বিন সা’দ থেকে, তিনি যায়দ বিন সাবেত থেকে।

দেখুন, তিন কিতাবের কোন কিতাবে আহমদ ইবনু আলী ইবনু সালমান মারুযী নামের কোন বর্ণনাকারী নেই! কিন্তু মুযাফফার সাহেব তার পকেট থেকে যোগ করে ফেলেছেন।পরে নাম নিয়েছেন ইমাম ইবনে হিব্বানের! কি পরিমাণ ইতর প্রাণী হলে এয়ছা কাম করতা হ্যায়? এদের শয়তানী দেখে হয়ত শয়তান ও আঁতকে উঠে! শায়খ, স্কলার আরো কত কিছু তোমরা!এ ধরণের মিথ্যুকদের বই পড়ে কত পাগলদের দেখি লাফালাফি করে! (চলবে)

লেখক : মুফতি ও মুহাদ্দিস, আবু বকর সিদ্দক রা., ঢাকা।

১৪.১.১৪৩৭ হিজরি

আরও পড়ুন : ১ম পর্ব- এ কেমন অসত্য প্রচার?

About Abul Kalam Azad

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...