সত্যি বলতে বাংলাদেশের শিয়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা এতটাই ক্ষুদ্র যে, দ্বন্দ্ব হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাই ইরাক-সিরিয়া-পাকিস্তানের মত শিয়া-সুন্নীর দ্বন্দ্ব হওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভবনা নেই এবং কখনও ছিলোও না। তাহলে কারা হোসনি দালানে এই বোমা হামলা চালালো ??
সোজা উত্তর:-
বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ হলে যাদের লাভ হবে, ইরাক-আফগানিস্তানের মত দখল করা সহজ হবে। তাই সহজ ভাষায় বলতে, অুজহাত দৃষ্টির জন্য এ হামলা করা করেছে। বাংলাদেশকে তারা প্রমাণ করতে চাইছে ইরাক-পাকিস্তান হিসেবে।
তাহলে কারা হামলা করলো?
১) মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকোট এসেই বলেছে- ‘বাংলাদেশে আইএস আছে!’ তার মানে আইএস আসলে তার উছিলা দিয়ে বাংলাদেশে কিছু একটা করতে তার সুবিধা হবে।
২) বিদেশী নাগরিক মারা যাওয়ার পর বিদেশী নাগরিক হত্যা নিয়ে বাংলাদেশকে যারা চাপে ফেলতে চেয়েছিলো। যদিও পরে ফাস হয়েছে জাপানি নাগরিক মুসলিম হয়েছিলো। তাই কথিত জঙ্গীগোষ্ঠী তাকে মারতে পারে না।
কিছুদিন পরেই ধরা পড়লো দুই ব্র্যাক কর্মকর্তা (http://goo.gl/T7M2Lc )। উল্লেখ্য, ব্র্যাক প্রধান ফজলে হাসান আবেদ হচ্ছে ব্রিটিশ কর্তৃক স্যার উপাধিপ্রাপ্ত। সুতরাং ব্র্যাক সম্রাজ্যবাদীদের কোন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাইছে তা সহজেই অনুমেয়।
৩) আজকে মতির ‘দৈনিক প্রথম আলো’র এ উপসম্পদকীয়টা (http:// goo.gl/UTU1MC) পড়ে দেখুন, বাংলাদেশকে একেবারে জোর করে জঙ্গী রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করতে চাইছে তারা।
বলাবাহুল্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিরোধী পত্রিকা হিসেবে এ পত্রিকাটি বিশেষ কুখ্যাত। এছাড়া পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্রের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত এই প্রথম আলো। তাই এ পত্রিকাটি ঐ পশ্চিমানীতি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশে মার্কিন সেনা ঢুকাতে চাইছে তাতে কোন সন্দেহ নাই।
ভুলে গেলে চলবে না, ১/১১ এর সময় এরাই দুই নেত্রীকে সরিয়ে হিলারীর বন্ধু ইউনুসকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানাতে চেয়েছিলো। সাপকে দমন না করলে সে যে বার বার ছোবল দিবে এটাই স্বাভাবিক।
৪) অনলাইন জগতে কথিত নাস্তিক বলে যারা দাবি করে, তারাও কিন্তু শিয়াদের উপর বোমা হামলাকে পূজি করে প্রচার করছে ‘বাংলাদেশে জঙ্গী আছে’। উল্লেখ্য বাংলাদেশে অনলাইনে নাস্তিক্যবাদী কমিউনিটিগুলোকে সাধারণত পরিচালনা করে পশ্চিমাভিত্তিক বিভিন্ন এনজিও। এরা বুভুক্ষ ছাত্র-যুব সমাজকে তিন বেলা খানা আর পাকা পায়খানার লোভ দেখিয়ে নাস্তিক বানায়, ধর্ম বিদ্বেষী লেখা ছড়ায়।যেমন, ঢাকাস্থ শ্যামলীতে ‘আর্টিকেল-১৯’ নামক একটি এনজিও দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র-যুব সমাজকে ইউরোপে যাওয়ার লোভ দেখিয়ে নাস্তিক বানাচ্ছে (‘আর্টিকেল-১৯’ নামক এনজিওটি ব্রিটিশ সরকারের অর্থায়নে চলে)। যেহেতু নাস্তিকদের পকেটে পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের টাকা পড়েছে, তাই তারা পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের পক্ষে কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক।
সবশেষে বলতে হয়, বাংলাদেশ সরকার ও প্রশাসনকে বলবো- আপনাদের কখনই উচিত হবে না পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের বিভিন্ন অন্যায় দাবি মেনে নেওয়া। তারা নিজেরাই বিভিন্ন সংস্থার দ্বারা (যেমন জাপানি হত্যাকাণ্ডে ব্র্যাক) এই অপকর্মগুলো ঘটিয়ে বাংলাদেশকে জঙ্গীবাদী রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করতে চাইবে। তাই ‘বাংলাদেশে জঙ্গী-সন্ত্রাসী নেই’, এটাই শেষ কথা। জঙ্গী-সন্ত্রাসী যদি থেকে থাকে তবে আমেরিকায় আছে, ইউরোপে আছে, ভারতে আছে। আমেরিকাতে প্রতিদিন স্কুলগুলোকে গুলাগুলি করে ১০০ জন করে হতাহত হয়। ভারতে প্রতিদিন উগ্র ও বর্ণবাদী হিন্দুরা মানুষকে পুড়িয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। এরাই আসল সন্ত্রাসী। আগে নিজের ঘরের সন্ত্রাসী দমন করো এরপর পরের ঘরে নাক গলাও, এর আগে না।
লেখক : প্রাবন্ধিক, অনলাইন এক্টিভিস্ট