বাগদাদ শহরের এক মসজিদের ইমামের স্ত্রী ছিলো অত্যন্ত সুন্দরী, রূপসী এবং সু-নয়না। স্থানীয় এক মাস্তান যুবক হঠাৎ একদিন তাকে দেখে ভীষণ আসক্ত হয়ে পড়ে এবং রীতিমতো বিরক্ত করতে শুরু করে। একদিন ইমাম সাহেবের বাড়িতে প্রবেশ করে যুবক বললো, হে সুন্দরী মহিলা! আমি ইতোমধ্যে তোমার প্রতি খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছি। তাই আমার কামনা চরিতার্থ করার জন্য প্রস্তাব দিচ্ছি। তুমি কি আমার প্রস্তাবে রাজি? মাস্তান যুবকের প্রস্তাব শুনে মহিলা ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে গেলেন।
রাতে ইমাম সাহেব ঘরে ফিরলে তিনি তার কাছে যুবকের কথা বর্ণনা করলেন। ইমাম সাহেব বললেন, তুমি রাজি হয়ে যাও! তবে একটি শর্তে! শর্তটি হলো, যদি যুবক একটানা চল্লিশ দিন প্রথম তাকবীরের সাথে জামাতে নামায আদায় করতে পারে।
পর দিন যুবক এসে ইমামের স্ত্রীর কাছে তার প্রস্তাবের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বললেন, যদি একটি শর্ত পূরণ করতে পারো তাহলে আমি রাজি। আর শর্তটি হচ্ছে, বিরতি ছাড়া একটানা চল্লিশ দিন প্রথম তাকবীরের সাথে নামায আদায় করতে হবে। যুবক বললো, এটাতো সহজ শর্ত। এরচেয়ে কঠিন শর্ত দিলেও আমি রাজি হতাম।
যুবক পরদিন ওযু করে সুন্দর পোশাক পরে সালাত আদায় করতে আসলো। ইমাম সাহেব নামাযের পর মুনাজাত করে বললেন, হে আল্লাহ! এক পথহারা যুবককে তোমার দরবারে এনেছি, এখন পথ প্রদর্শনের মালিক তুমি। যুবক শর্ত মোতাবেক জামাতের সাথে সালাত আদায় করে যাচ্ছে, ফজরের পর জোহরের জন্য অপেক্ষা করে, জোহরের পর আসর, এরপর মাগরিব, এরপর এশা, কোনো বিরতি নেই।
অতঃপর এভাবে যেদিন একটানা চল্লিশ দিন পার হলো, সেদিন যুবক ইমাম সাহেবকে জড়িয়ে কেঁদে উঠলো এবং বললো, আমাকে ক্ষমা করে দিন, আমি অন্ধকারে ছিলাম।আল্লাহপাক আমাকে আলোর পথ দান করেছেন। আল্লাহ আমাকে হেদায়েত দান করেছেন। আমার ভুল হয়ে গেছে, আমাকে ক্ষমা করে দিন। তখন ইমাম সাহেব যুবককে সাথে নিয়ে আল্লাহর কাছে হাত তুলে দোয়া করলেন-
হে আমাদের পালনকর্তা! (দয়াময় আল্লাহ!) সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে আর কঠিন করে দিও না এবং তুমি আমাদের করুণা দান করো। তুমিই মহাদাতা অসীম করুনার আধাঁর। সূরাঃ আলে ইমরান; আয়াত- ০৮।
‘তোমরা যথাযথভাবে নামায আদায় করো, নিশ্চযই় নামায অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর যিকিরই সর্বশেষ্ঠ। তোমরা যা করো তা আল্লাহ অবগত।’ সূরাঃ আনকাবুত; আয়াত- ৪৫।