বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ৯:৪৮
Home / আকাবির-আসলাফ / আসুন হালাল রুজির জন্য একে অপরকে উৎসাহ দেই

আসুন হালাল রুজির জন্য একে অপরকে উৎসাহ দেই

আব্দুল্লাহ বিন সদরদি,

আসুন একে অন্যকে হালাল রুজির জন্য উৎসাহ দিই-নিজে স্বনির্ভর হই এবং অন্য ভাইকে স্বনির্ভর হওয়ার সহায়ক বনি।

lakri kataবেদাতিদের তাওবা নসিব হয় না আর তাওবা কেনইবা করবে গোনাহকে তো গোনাহই মনে করা হয় না বরং নেক ও সওয়াবের কাজ মনে করে করা হয়। তাই তো বিজ্ঞজনেরা বলেন, যিনাখুর মদপানকারীর মনে একটা আক্ষেপ থাকে আহ আমি গোনাহ করছি পক্ষান্তরে বেদাতির মনে কোন আক্ষেপই থাকে না। যারা পাপকে নেক মনে করে করে আপনি যতই থাকে বুঝান সে হেদায়তের পথে আসবে না উল্টো আপনাকে পাগল বলবে।

ঠিক তেমনি যারা মানুষের কাছে হাত পেতে কিছু পায় আর মানুষ ও কিছু দেয় এক সময় এই ভিক্ষাবৃত্তিকে কুর-আন হাদিস দ্বারা প্রমাণ করতে চায় দীনের জন্য এই ভিক্ষাবৃত্তি উত্তম। যতই লাঞ্চনা বঞ্চনার শিকার হউক তারপর ও সে এই পথ ছাড়ে না। এমন কি নিজ হাতের উপার্জন, কর্ম করে খাওয়ার ফযিলতকে এবং ফরযিয়্যাতকে অনায়াসে অস্বীকার করে বসে। এই লাভজনক ব্যবসা থেকেই পীর পুজা মাজার পুজার রাস্তার শুরু। বাবার পর ছেলে, ছেলের পর নাতি চলছে তো চলছেই। এই সকল ভণ্ডরা হালাল রুজির জন্য চেষ্টা করার ফরযিয়্যাতকে আবার অস্বীকার করে কি চমৎকার ভাষায়, আপনি আল্লাহর হয়ে যান আল্লাহ আপনার হয়ে যাবেন। আপনি আল্লাহর কাম করেন কোথা থেকে রিযিক আসবে ভাবতেই পারবে না। এরকম আরো অনেক আয়াত ও হাদিস দ্বারা ওই সকল ভণ্ডরা দলিল দেয়। দেখেন ভণ্ডদের দলিল কথা সত্য মতলব খারাপ এই অর্থে ব্যবহৃত । ওদের শত শত শিরক ও বিদাতকে আল্লাহ প্রিয়তার মাধ্যম বলে আমাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে আর আমরা প্রতারিত হচ্ছি। এভাবে আমরা ঈমান আমল বরবাদ করছি। ওই সকল ভণ্ডরা আদর্শের ক্ষেত্রে ও ধোঁকা দিচ্ছে- বলছে অমুক বাবা তমুক বাবা আমাদের আদর্শ অথচ বাস্তবতা হল নবীজি (সা…) হলেন আমাদের একমাত্র আদর্শ আর সাহাবা (রাযি…) গণ হলেন তার নমূনা। সহজ ভাষায় নবীজি (সা…) এবং সাহাবাগণ (রাযি…) ছাড়া কেউ আমাদের সার্বজনীন আদর্শের মডেল হতে পারেন না। কেন পারেন না? কারণ উনারা কেউ ভুলের উর্ধ্বে না বা উনাদের সেরকম কোন সনদ নেই। তবে উনাদের মত তথা কুর-আন সুন্নাহর উপর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কেউ চললে নিঃসন্দেহে তিনি আদর্শের মডেল হতে পারেন, প্রেরণা হতে পারেন। দেখেন আমরা ব্যক্তি কেন্দ্রিক বাবাতে বিভক্ত হওয়ায়র কুফল- এক বাবা রাজনীতি ভাল পান না বস উনাদের মুরিদরা ও উনার তালে তালে রাজনীতিকে ভাল পাবে না। এক বাবা তাবলীগকে ভাল পান না বস উনার মুরিদরা ও তাবলীগকে ভাল পাবেন না। এই কারণেই আমাদের একমাত্র আদর্শের মডেল হবে নবীজি (সা…) এবং সাহাবাগণ (রাযি…) আর উনারa হবেন প্রেরণা ইল্লা মাশা আল্লাহ মডেল ও হতে পারেন।

কিছু বিষয় ক্লিয়ার হওয়া দরকার
১) সর্বাত্মক চেষ্টা করে হালাল রুজগারে অক্ষম হলে মানুষের কাছে হাত পাতলে লজ্জার কিছু না।
২) কওমি মাদরাসা যে মানুষের কাছে হাত পাতে এটা ও লজ্জার না। কেননা উনারা দীনের জন্যই হাত পাতেন।

তবে………… এব্যাপারে মূল কথা হল দীন ইসলামের হেফাজতের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে আলিম উলামাদের ভরণ পোষণের ব্যয়ভার বহন করা হলে কারো কাছে হাত পাতা হারাম। যদি রাষ্ট্র তা করেনা তাহলে সকল মুসলমানের উপর ফরজ আলিম উলামাদের ব্যয়ভার বহন করা। সেচ্ছায় মুসলমানরা আলিম উলামাদের ঘরে ঘরে টাকা-পয়সা, খানা পিনা পৌঁছে দিবেন।

তবে…… এখানে একটা কথা মনে রাখা দরকার আলিম উলামা বলতে কি সবাইকে বাকী সব মুসলমানরা ঘরে ঘরে খানা পিনা পাঠাবেন? জ্বী না, সব আলিমকে না। মানে একদল জরুরত পরিমাণ ইলম শিখার পর বলা হবে তুমরা চলে যাও। হালাল পথে চলে হালাল কামাই কর। পারলে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি হও। একদলকে বলা হবে আমৃত্যু তুমরা কুর-আন হাদিস শিখ শিখাও। এছাড়া আর কোন কাজ তুমাদের নেই। ওই সকল আলিম উলামার খানা পিনার যিম্মাদার হলেন সব মুসলমান। অতএব নামে মাত্র আলিম যারা কুর-আন হাদিসের গবেষক দূরের কথা টাইটেল পাশ করে আরবীতে শুদ্ধ নাম লিখতে পারেন না তাদেরকে নিজ হাতে কামাই করে খেতে হবে। মাদরাসা খুলে দীনের নামে চাঁদা তুলে খেতে পারবেন না কারণ উনাদের মাদরাসা পরিচালনা, প্রতিষ্ঠা করারই তো অধিকার নেই। মাদরাসা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করবেন সেই সব গবেষক আলিম উলামা যাদের থাকা, খাওয়ার দায়িত্ব সকল মুসলমানের উপর তাঁরা।
দুঃখজনক হলে ও সত্য গবেষক আলিম উলামার যিম্মাদারী আমরা যথাযথ পালন না করায় উনারা আমাদের দ্বারে দ্বারে নিজ এবং পরিবারের সাথে মাদরাসার ব্যয়ভার বহনের জন্য আসেন আর আমরা উনাদেরকে অবজ্ঞা করি। লজ্জায় মরে যাওয়া উচিত আমাদের সবের। এই সুযোগে একদল চালাক চতুর যাদের ইলম কালাম জিরোতে উনারা ও জীবন পরিচালনার মাধ্যম বানিয়ে নিলেন মাদরাসাকে। তাই ইচ্ছে মত মাদরাসা গড়েন, নিজের লোককে ক্ষমতায় বসান আর যোগ্য লোকদের সারা বছর হেনেস্থা করেন এবং বছর শেষে বলেন ওকে গুড বাই।

৩) নিজে স্বাবলম্বী হওয়া জন্য বা কোন সমস্যায় বন্ধুবান্ধবের কাছে হাত পাতা, সহযোগিতা নেয়া দোষের না। তেমনি সেচ্ছায় কোন বন্ধুবান্ধব সহযোগিতা করলে ও দোষের না।

আসুন একে অন্যকে হালাল রুজির জন্য উৎসাহ দিই। নিজে স্বনির্ভর হই এবং অন্য ভাইকে স্বনির্ভর হওয়ার সহায়ক বনি। আল্লাহ আমাদেরকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।petuk

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাও পাবেন ৫% সুদের গৃহঋণ

কমাশিসা: সরকারি চাকরীজীবিদের মত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদেরও গৃহ নির্মাণে ৫ শতাংশ ...