রাফিউজ্জামান শাফি::
তাওহীদ মারা গেছে। মাদরাসার ছাত্র তাওহীদ হত্যার বিচার হয়তো হবে না। টুপি পাঞ্জাবি দেখেই হয়তো আমাদের ভেতরের অনেকেই এই শিশুটির ভবিষ্যৎকে বিশেষ একটি গোষ্ঠীর ট্যাগ লাগিয়ে দিবেন! পড়েও দেখতে চাইব না কী হয়েছিল তাওহীদের জীবনে! কী হচ্ছে তাওহীদের মতো ছেলে মেয়েদের জীবনে? তাওহীদ, বাবা মা’র স্বপ্ন ছিল ছেলেকে হাফেজ বানাবেন। ছোট্ট তাওহিদের ১৮ পাড়া পর্যন্ত কোরআন মুখস্ত।
গত ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি তাওহিদকে দেড় পাড়া কোরআন শরিফ পড়তে দেন ওমর ফারুক (রা.) হাফিজিয়া কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসার শিক্ষক, হাফেজ আমিনুল ইসলাম। তাওহীদ ৭ পৃষ্ঠা মুখস্ত শুনানোর পর বাকিটুকু আর বলতে না পারায় তাঁকে বেত দিয়ে পেটানো শুরু হয়, বাঁ হাত, পা, বুকে, পিঠে। এতে তাওহিদের বাম পা,হাত ও বুকের বাম পাশের পাঁজরের হাড় ভেঙে যায়।
ছোট বুকের ভাঙ্গা পাঁজর দিয়ে আরও তিন চারদিন তাওহিদকে ফেলে রাখা হয় মাদ্রাসায়। শেষে অবস্থা বেগতিক দেখে তাওহিদের বাবা মাকে খবর দিয়ে বলা হয় খেলতে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে সে। ঢাকা মহাখালী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর রোববার রাতে মারা যায় তাওহীদ।
শিক্ষক নির্যাতনে মারা গেল তাওহীদ। তাওহীদের জন্য আমাদের কণ্ঠে প্রতিবাদের ঝড় উঠবে না, উঠবে না বিচারের দাবী, শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব। নির্মম হলেও সত্য তাওহীদদের নিয়ে কথা বলা এ সময়ে ‘ নট এ কুল আইডিয়া’
#তাওহীদের_জন্য_আমাদের_কাছে_নেই_কোন_হ্যাশট্যাগ
দশ বছরের শিশু তাওহীদকে আল্লাহ্ বেহেস্ত নসীব করুণ।
জিয়া হাসান::
বাংলাদেশের অনেক মাদ্রাসায় ছোট ছোট শিশুদের উপরে অবর্ণনীয় অত্যাচার করা হয়। এইটা কালচার। এই পাশবিকতা বন্ধ হতে হবে। কাউকে বলার নাই। কেউ শুনবেনা। না সরকার, না রাষ্ট্র, না মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থার সিনিয়ার নেতৃবৃন্দ। জাস্ট একটা স্ট্যাটাস দিয়ে গেলাম। তেমন অনুভুতিও হয় নাই। সব মৃত্যুই এখন গা সহা হয়ে গ্যাছে যেন।
কিন্ত এই ভাবে চলতে পারেনা।
একটা রাষ্ট্রে অনিয়ম থাকবে। কিন্ত সেই অনিয়ম যখন ধরা পরবে, সেইটাকে শুধরাতে হবে। কিন্ত চোখের সামনে অনিয়ম ঘটেই যাবে কিন্ত সেইটার কোন ব্যবস্থা কেউ নিতে পারবেনা, সেইটাই যদি নিয়ম হয় তবে সেই রাষ্ট্র থাকারই দরকার নাই। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের উপরে যে অমানবিক নির্যাতন হয়, তারা প্রতিবাদ জানায় রাখলাম। যেহেতু আমি মাদ্রাস্যয় পড়িনি , তাই আমি আদার। তাই আমাদের মাদ্রাসা পড়ুয়া বন্ধুদেরকেই বলছি, আপনারা জোর গলায় আওয়াজ তুলুন। আমরা আপনাদেরকে মরাল ব্যাক দিবো। এইটা আর চলতে দেয়া যাইতে পারেনা। এই নির্যাতন এবং নির্যাতনের সংস্কৃতি বন্ধ হোক। এবং শিশু তাওহীদের হত্যাকারি শিক্ষকের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চাই।