কলবের ইযতিরাব এবং হৃদয়ের অস্থিরতার কারণে এখানে আরেকটি কথা বলতে চাই, কাওমী নেছাবের সরকারী স্বীকৃতির যে আওয়াজ চারদিকে আজ উঠেছে, সবার সদিচ্ছার প্রতি আস্থা থাকা সত্ত্বেও আমার মনে হয়, এটা আত্মঘাতি চিন্তা।
অধিকার ও স্বীকৃতি আবদার করে নয়, (হযরত আলী নাদাবীর ভাষায়) যোগ্যতার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। আর স্বীকার করতেই হবে, যুগের বিচারে আমাদের নেছাবে তা’লীমে এখন যোগ্যতার বড় অভাব। আর যোগ্যতার অভাব থেকেই স্বীকৃতির প্রয়োজন অনুভব করা হয়। সুতরাং আমাদের সময় ও চিন্তা এবং শ্রম ও মেধা এখন স্বীকৃতি অর্জনের পরিবর্তে যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রেই নিয়োজিত হওয়া উচিত।
আমাদের নেছাবে তালীম এমন হতে হবে,যাতে শিক্ষার্থীরা বহুমুখী যোগ্যতার অধিকারী হয়ে যুগের মোকাবেলা করতে পারে এবং জীবনসংগ্রামে সফলভাবে উত্তীর্ণ হতে পারে।
দ্বিতীয় কথা, যে উদ্দেশ্যে আমরা সরকারী স্বীকৃতি লাভ করতে চাই,আমার আশংকা এই যে, তা তো অর্জিত হবেই না, বরং যুগ যুগ ধরে সরকার এবং বহিঃশক্তি যা চেয়ে আসছে,তখন সেটাই ঘটবে। অর্থাৎ আমাদের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণেরর বজ্রআটুনি চেপে বসবে। তখন অনুতাপের অশ্রু ঝরানো ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না।
কওমী মাদারেসের মহলে ‘স্বীকৃতি-চিন্তার’ স্রোত এখন প্রবল। আর আমি জানি, স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কেটে তীরের নাগাল পাওয়া যায় না, তবু নিজের কাছে সান্ত্বনা এবং আগামী প্রজন্মের কাছে কৈফিয়ত থাকবে যে, আমি আমার কথা বলেছিলাম, অন্তত বলতে চেষ্টা করেছিলাম।
(এসো কুরআন শিখি, ২য় খণ্ডের ভূমিকা থেকে নেয়া)