আবরার আবদুল্লাহ : বায়তুল জান্নাত মসজিদ কমপ্লেক্স। মুহাম্মদপুরের সাতমসজিদ হাউজিংয়ের অবস্থিত। ১৯৯২ যাত্রা শুরু করে মসজিদ কমপ্লেক্সটি। কমপ্লেক্সের অধীনে বর্তমানে একটি মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানা পরিচালিত হচ্ছে। সম্প্রতি মসজিদ কমপ্লেক্সের দখলে থাকা জায়গা একটি মিউজিক ইনিস্টিটিউটকে বরাদ্দ দেয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
আওয়ার ইসলামের অনুসন্ধানে জানা গেছে, খ্যাতিমান রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রতিষ্ঠিত ‘সুরের ধারা’ নামক সংগঠনকে এ ভূমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সুরের ধারা সেখানে ‘কলেজ অব মিউজিক’ নামে একটি সংগীতালয় প্রতিষ্ঠা করবে।
উল্লেখ্য কলেজ অব মিউজিক বর্তমানে ঢাকার লালমাটিয়ায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে মসজিদের ইমাম হাফেজ আবু ইউসুফ আওয়ার ইসলামকে জানান, গত সপ্তাহে একজন ম্যাজিস্ট্রেট এসে মসজিদ কর্তৃপক্ষকে জায়গা খালি করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পরবর্তীতে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এ জায়গা একটি সংগীত সংস্থা বরাদ্দ পেয়েছে।
অন্যদিকে মসজিদ মাদরাসা কমপ্লেক্সের জায়গায় সংগীতালয় করার সংবাদে এলাকার মুসল্লিদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে এলাকার সাধারণ মুসল্লিগণ এর প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিলও করেছে।
হাফেজ আবু ইউসুফ আরও জানান, ‘মসজিদের যে জায়গাটুকু ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে তার মসজিদেরই অংশ। সেখানে একটি হেফজখানা রয়েছে। শিশুরা সেখানে কুরআন শিক্ষা করে। মুসল্লিরা জুমা ও ঈদের নামাজ আদায় করে। জানাযার নামাজও এখানে পড়া হয়।
বায়তুল জান্নাত কমপ্লেক্সের সভাপতি হাজি ইয়াসিন হাওলাদের ভাষ্য অনুযায়ী কমপ্লেক্সের অধীনে ৩১ শতাংশ জায়গা রয়েছে। যার ৬০ ভাগেরই বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। বাকি ১২ শতাংশ ভূমির বরাদ্দ চেয়ে ২০১০ সালে আইন মেনে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু মসজিদকে বরাদ্দ না দিয়ে মসজিদের অধীনে থাকা জমি কীভাবে সংগীতালয়কে বরাদ্দ দেয়ায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, মসজিদ কমপ্লেক্সর যে জায়গাটুকু ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে তার পেছনে মসজিদের কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। জমি ভরাট ও অবকাঠামো নির্মাণ করতে এ অর্থ ব্যয় হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে মসজিদের খতিব মুফতি ওমর ফারুক আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘আমরা স্থানীয় কমিশনার তারেকুজ্জামান রাজিব ও স্থানীয় এমপি জাহাঙ্গির কবির নানকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছেন, নিশ্চয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে এ বরাদ্দ নেয়া হয়েছে। আমরা বরাদ্দ বাতিলের ব্যাপারে উচ্চতর পর্যায়ে কথা বলবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ বরাদ্দ বাতিলের জন্য জন্য আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করবো। এজন্য প্রস্তুতি চলছে।’
বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে নিয়মিত নামাজ পড়েন স্কুল শিক্ষক আবু হানিফ মোল্লা। সংগীলয় হওয়ার ব্যাপারে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘সাধারণ মুসল্লিদের টাকায় যে জায়গা ভরাট করা হয়েছে সেটা মসজিদকে না দিয়ে একটি নাট্যশালাকে দেয়ার কোনো যুক্তি নেই। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করি।’
অন্য একজন মুসল্লি দাউদুর রহমান বলেন, ‘মসজিদ আর সংগীত পাশাপাশি চলতে পারে না। মাদরাসা মসজিদ উচ্ছেদ করে নাটকের জায়গা দেয়া আমরা মানি না।
এ ব্যাপারে সুরের ধারার ওয়েব সাইটে দেয়া টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে জনৈক দীপক পালের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। কিন্তু বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে দীপক পালের নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। আওয়ার ইসলামের সৌজন্যে