শামসীর হারুনুর রশীদ:
পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ হল বাংলাদেশ । এদেশের 85% মানুষ মুসলমান । দেশের রাষ্ট্রধর্ম হল ইসলাম । অন্য ধর্মের লোকেরা স্বীয় ধর্ম পালনে সমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছে । সকল ধর্মীয় লোকের সাথে আছে মুসলিমদের চমৎকার সম্পর্ক। মাঝে মাঝে রাজনৈতিক কূমতলবী দাঙ্গা ছাড়া নাই সাম্প্রদায়িক কোন দাঙ্গা । কেউ কারো সাথে অন্যায় করলে বিচার ব্যবস্থাও চমৎকার । কিন্তু ছোট এই দেশের ভেতর তার শত্রু ও ভিনদেশি দালালের সংখ্যা এত বেশি যে, আমার মনে হয়না পৃথিবীর অন্য কোন দেশে তার শত্রু সংখ্যা বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যাবে? দেশের সংসদ থেকে নিয়ে অফিস-আদালত-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-প্রশাসন-মিডিয়ায় রাত পুহালেই দেখতে পাওয়া যায় দালাল আর দালাল! সর্বক্ষেত্রে শত্রু এবং শত্রু । সুতরাং দেশ ও ইসলামের স্বার্থ বিরোধী কোন কাজ বা দুয়ের সাথে বিদ্রুহ-বিদ্রূপ কিংবা দুটোর-ই ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ কেউ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া অথবা কথা বলার দায়িত্ব কার? বিষয় দুটি আইনের দৃষ্টিতে কেমন? মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রে ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় বা কথা বলায় রাষ্ট্রদ্রোহি হয়না কেন? শুধু ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে অবস্থানের নাম কি রাষ্ট্রদ্রোহিতা? এব্যাপারে সংবিধানে কিছু বলা আছে কি না? মসলিম দেশে ইসলামি শিক্ষা-সংস্কৃতি-সভ্যতার বিরুদ্ধে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নানা কাজ হয় কিভাবে? মুসলিমদের সার্থবিরোধী কাজ ও অবস্থান কারিরা রাষ্ট্রীয় কর্মচারী হয় কেমনে? ধর্মের বিরুদ্ধে বারবার উস্কানি মূলক কথা বলে যাঁরা দেশকে অস্থিতিশীল করতে আগ্রহী, তাদের শাস্তির ব্যাপারে এখনও কোন আইন হয়নি কেন? রাষ্ট্র ও আদালত এসব অপরাধী ও শত্রুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না কেন? বিষয়টির চূড়ান্ত ফয়সালা নিয়ে সরকার ও আলেমদের স্থায়ী চিন্তাভাবনার খুব দরকার । আমি মনে করি সবগুলো ইসলামি দল মিলে আরব বিশ্বের মতো সরকারের সাথে একটা সমঝোতা করে নেয় দরকার ধর্মমীয় বিষয়ে যে, রাষ্ট্র তাঁরা চালাক আর ধর্মমন্ত্রনালয় এবং আদালতের প্রত্যেকটি সেক্টর থেকে ধর্ম বিরোধী কোন রায় যাতে না আসে, সেখানে মুফতি নিয়োগসহ আরো কিছু বিষয় আমাদের দিয়ে দিক । এবং ধর্মের উপর আঘাত আসে এমন কোন সিদ্ধান্ত কোন সরকার বা আদালত কখনও নিতে পারবেনা, এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনীতি থেকে কিছু দিনের জন্য আলেমরা সরে আসুক। অন্তত দশ বছরের জন্য এমন একটা চুক্তি করে যোগ্য মানুষ তৈরিতে মনোযোগ দিয়ে দেখুন না পচনশীল দূর্গন্ধ যুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজে ইসলামি আদর্শ বাস্তবায়নে কতখানি দিন লাগে? আমদের এই ছোট ভূখণ্ডে ঘাপটি মেরে বসে আছে এমন কিছু অপদার্থ ঈতারেরা, যারা আমাদের শিশুমনিদের ঐশির মতো করে সৃষ্টি করতে মরিয়া! ঐশিতো তাঁর বাপ-মার গলায় ছুরি লাগিয়েছে! আর তাঁরা আমাদের ধর্ম-বিশ্বাসের গলা ছুরি লাগাতে রাতদিন পার করছে বুদ্ধিব্যবসায়! আমাদের বাপ-দাদা পূর্ব পুরুষের হাজার বছরের পরীক্ষিত প্রাচীন ধর্মীয় চিন্তা-চেতনা-ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং পারিবারিক ও সামাজিক শৃঙ্খলা বিষয়কে জলাঞ্জলি দিয়ে পশ্চিমা ও ওপারি নষ্ট সংস্কৃতির এজেন্সি খোলে বসে আছে! হর মূহুর্তে কোন না কোনোভাবে আঘাত হানচ্ছে আমাদের ধর্ম-কর্ম-দেশ ও দেশাচারের উপর । তাদের কাজ-ই মুসলিম এই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, তারা একাজগুলো করছে, করে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। অথচ সরকার নিরব-নির্বিকার! এই দালাল চক্রটি আমাদের অন্য-বস্ত্র-শিক্ষা-চিকিৎষা-বাসস্থান সর্বক্ষেত্র পশ্চিমা আদলে গড়ে তুলতে চাইছে! তারা আমাদের জাতীয় দুটো আইডেনটিটি পলিটিক্যাল ও কালচার আত্নসমর্পণের দিকে নিয়ে যাচ্ছে! জাতি আমরা পরনির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছি! দেশের সার্থবিসর্জন কারি এই মনস্তাত্ত্বিক গোলামদের লাগাম এখনই টেনে ধরার সময় । আশারাখি সকল পক্ষ বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাববেন । পরিশেষে কবি ফররুখের একটি কবিতা উদ্ধৃত করছি- ‘আল্লাহ্ ছাড়া কারো কাছে জায়েয নায়রে চাওয়া সময় থাকতে তোরা সবাই নিজের পায়ে দাড়া’ ।
লেখক পরিচিতি: চিন্তক, সাংবাদিক, গবেষক।