আব্দুল্লাহ শাকির
সব জল্পনা কল্পনাকে ম্রান করে দিয়ে কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতির ঘোষণা আসছে। ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘোষণা দেবেন বলে জানা গেছে। দেশের শীর্ষ আলেম মুইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা আহমদ শফী ও জাতীয় বেফাকের চেয়ারম্যান, ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ সে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়াও গওহরডাঙ্গা বেফাকের চেয়ারম্যান মুফতি রুহুল আমীনসহ দেশের শীর্ষ আলেমদের উপস্থিতিতেই এ ঘোষণা আসছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছিলেন, বর্তমান সরকার উলামায়ে কেরামের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে । উলামায়ে কেরামগণ যেভাবে বলেন সেভাবে আমরা সনদের মান দিতে প্রস্তুত ।
কেউ কেউ ৬ এপ্রিলের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সম্মেলনে কওমি সনদের ঘোষণা আসতে পারে কিনা জানতে চাইলে সূত্র জানিয়েছে, ইফা সম্মেলনে এ ঘোষণা আসবে না। এ বৈঠকে আলেম-উলামা উপস্থিত থাকলেও এটি মৌলিকভাবে কওমি মাদরাসাকেন্দ্রীক কোনো সম্মেলন নয়। স্বীকৃতি ১১ এপ্রিল আলেমদেরকে ডেকেই তাদের উপস্থিতিতেই ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এর আগেও মন্ত্রী কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতি ‘আলেমরা যেভাবে বলবেন সেভাবেই সনদের স্বীকৃতি’ দেয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন।
৬ বোর্ডের অধীনেই স্বীকৃতি আসছে। সূত্র জানিয়েছে, ৬ বোর্ডের নেতৃবৃন্দও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কওমি মাদরাসা সনদের ঘোষণার সময় উপস্থিত থাকবেন। এ বোর্ডগুলো হলো, আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ ও মুফতি মুহাম্মদ আলী পরিচালিত বেফাকুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া বাংলাদেশ, মাওলানা আহমদ শফী ও মাওলানা আবদুল কুদ্দুস পরিচালিত বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ, মুফতি রুহুল আমীন ও মাওলানা শামসুল হক পরিচালিত গওহারডাঙ্গা বেফাক বোর্ড, মুফতি সুলতান যওক নদভী ও মুফতি আবদুল হালিম বুখারী পরিচালিত আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসিল আরাবিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম, মুফতি আরশাদ রাহমানী ও মাওলানা হারুনুর রশিদ পরিচালিত তানজিমুল মাদারিসিদ দ্বীনীয়া আল কওমিয়া বাংলাদেশ [উত্তরবঙ্গ], মাওলানা হোসাইন আহমদ বারকুটি ও মাওলানা আবদুল বাসেত বরকতপুরী পরিচালিত আজাদ দ্বীনী এদ্বারা সিলেট।
সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদসহ শীর্ষ আলেমদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ২৮ মার্চ মঙ্গলবার একপর্যায়ে বলেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই স্বীকৃতি বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হবে ইনশাআল্লাহ।
শিক্ষামন্ত্রীর এ আশ্বাসেরই বাস্তবায়নের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের (প্রশাসন ও উন্নয়ন) সভাপতিত্বে ২৮ মার্চ মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় উল্লিখিত ৬ বোর্ডের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের নিয়ে বৈঠক করেন। এরপরই শিক্ষামন্ত্রী হাটহাজারি মাদরাসায় গঠিত লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গেও বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী।
কওমি মাদরাসা শিক্ষাসনদ স্বীকৃতি পরিষদের সভাপতি মুফতি আবুল কাসেম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আল্লামা মাসঊদ ত্যাগের সাঁকো পার হয়েই স্বীকৃতি আসছে। এবার চল্লিশ লাখ চোখ শীতল হবে। আমরা সফল হতে চলেছি। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি।