কমাশিসা : ছাতকে ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে ৪ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশসহ দু’শতাধিক আহত, একজন নিহত ও একজন নিখোঁজ রয়েছেন। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কমপক্ষে ১০ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসও ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এঘটনায় মাহফিলের প্যান্ডেল, মঞ্চ ও চেয়ার ভাংচুর করা হয়। গুরুতর আহত ইমরান (২৮), সাজুর (১৪), ফজলু মিয়া (৪০), মোস্তফা কামাল (২০), এসআই সুহেল রানা (৩৩), লাহিন (৪০) সহ ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহত যুবলীগ নেতা বাবুল (৪০) শহরের বাগবাড়ি (ইটখলা) এলাকার আব্দুল জব্বারের পুত্র ও সুরমা নদীতে নিখোঁজ রুবেল (৩৪) গনেশপুর গ্রামের আজাদ মিয়ার পুত্র। অন্যান্য আহতদের ছাতক ও কৈতক হাসপাতালসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়।
জানা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় ছাতক খাদিমুল ইসলাম পরিষদের উদ্যোগে শহরের মহসিন ফিল্ডে (হাইস্কুল মাঠ) ২৬ ফেব্রুয়ারি রোববার থেকে ৩ দিনব্যাপী তাফসিরুল ক্বোরআন মাহফিল চলছিল। প্রথম দিনের ওয়াজ চলাকালে উপজেলার জাউয়া এলাকায় কওমিপন্থী আলিমদের ওয়াজ মাহফিলে একটি ব্যানার দেয় আলিয়া মাদরাসার আলিমরা। এতে বাঁধা দিলে অপর পক্ষ ছাতকের মহসিন ফিল্ডের তাফসির মাহফিলে বাধাঁ দেয়।
এনিয়ে রোববার রাতেই উপজেলা চেয়ারম্যান ছাতক জালালিয়া আলিম মাদরাসায় উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেন। এর জের ধরেই সোমবার দুপুরে তালামীযে ইসলামিয়ার ব্যানারে শহরে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি জালালিয়া মাদরাসায় প্রবেশকালে মাদরাসার সামনের মাঠে খাদিমুল ইসলাম পরিষদের মাহফিল লক্ষ্য করে মিছিল থেকে কয়েকটি ঢিল ছুঁড়া হয়। এ নিয়ে ইট-পাটকেল, রড ও পাইপসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। পরে মাহফিলের প্যান্ডেল, মঞ্চ ও চেয়ার ভাংচুর করা হয়।
মাহফিলের পক্ষে গনেশপুর ও অপরপক্ষে বাগবাড়ি এবং মুক্তিরগাঁওসহ বিভিন্ন গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে অংশ নেয়। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আশেক সুজা মামুন জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ জানান ছাতকের সংঘর্ষ পুলিশ নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং পরবর্তীতে যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান ও ছাতক এসিল্যান্ড শেখ হাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা চলছিল বলে জানা গেছে।
![](https://komashisha.com/files/asset/uploads/2017/02/16996255_1309794149081191_4932377502749583586_n.jpg)