কমাশিসা : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ বাদ দেয়া নিয়ে ক্যাম্পাসে নানা জল্পনা কল্পনার ঝড় বইতে শুরু করেছে। বর্তমান ক্যাম্পাস প্রশাসনের অগ্রযাত্রায় ইর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল প্রশাসনকে বিতর্কিত করতেই এমন হীন চক্রান্তে মেতেছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। তাই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশের ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’ নামক একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ মুছনকারীর মতো জঘন্য তকমা লাগিয়ে দিতে চায় বর্তমান প্রশাসনের গায়ে। বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাধিক সিনিয়র নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমারা কোথায় বাস করছি। আজ ‘মুসলিম’ শব্দ কি না বিড়ম্বনার কারণ! প্রকৃত প্রগতিশীলতার পথে ইসলাম কোন বাধা নয়। এতে দেশের মানুষের কাছে বর্তমান সরকারও বিতর্কিত হবে বলে আমরা মনে করি।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষা ও প্রচলিত সাধরণ শিক্ষার সমন্বয় সাধনের মহান উদ্দেশ্য নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলনের পথ পেরিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। অতিমাত্রায় প্রগতিশীলতা আর প্রগতিশীলতার নামে ইসলাম বিদ্বেষী চক্রান্তের শিকার হয়ে উদ্দেশ্য ভ্রষ্ট হতে বসেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। এরই ধারাবাহিকতায় একটি বিভাগের নাম থেকে “মুসলিম” শব্দ উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ইতোমধ্যে আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগের নাম ফলক থেকে ‘মুসিলম বিধান’ শব্দটি বাদ দিয়ে শুধু আইন বিভাগ লেখা হয়েছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাক্ট বিরোধী।
জানা গেছে, বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির ২১১তম সভায় ‘মুসলিম বিধান’ শব্দটি বাদ দিয়ে শুধু আইন বিভাগ নাম করনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সদস্যরা। তবে অভিযোগ রয়েছে সভায় বিভাগের নাম সংশোধনের বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে অনুমোদন করে অনুষদীয় সভায় বিবেচনার জন্য প্রেরণ করে।
নিয়মানুসারে অনুষদীয় অ্যাকাডেমিক কমিটির সভার আলোচ্যসূচি কমিটির সদস্যদের হাতে সভার ৩দিন আগেই দেওয়ার কথা। কিন্তু নিয়ম উপেক্ষা করে সভা শুরু হবার পর নাম পরিবর্তনের আলোচ্যসূচি সদস্যদের হাতে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে ৫২ তম অনুষদীয় সভার বিষয়টি টেবিল এজেন্ডা হিসেবে উত্থাপিত হয়। সভায় বিভাগের নাম থেকে ‘মুসলিম বিধান’ শব্দ বাদ দিয়ে আইন বিভাগ নামে নাম করনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
আগামি ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি উত্থাপিত হবে বলে জানা গেছে। সেখানে ওই নাম পাশ হলে পরবর্তি সিন্ডিকেটে তা অনুমোদনের জন্য আলোচ্যসূচির অংশ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রগতিশীলতার ধ্বজাধারীরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য উদ্দেশ্যকে ভূলন্ঠিত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। মুসলমান সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশে ইসলাম বা মুসলিম শব্দ নিয়ে এমন পরিস্থিতি মোটেও শোভনীয় নয়। এটা মূলত নিজের নামকেই অস্বীকার করার শামিল। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রশাসনকে আরো ভাবতে হবে। এতে দেশের মানুষের কাছে সরকারও বিতর্কিত হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রশাসনের সফলতায় একটি মহল ক্রোধান্বীত। তারা বর্তমান ভিসি ড. রাশিদ আসকারীসহ প্রশাসনকে দেশবাসীর কাছে বিতর্কিত করতেই এমন হীন চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। আমি মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি বিচক্ষণতার সাথে বিবেচনা করবে।