কুতায়বা আহসান :
– কুস্তুনতুনিয়ায় অবস্থান কালেই খাইরুদ্দীন বারবারুসার গোয়েন্দারা তাঁকে সংবাদ দেয় কয়েক সপ্তাহের ভেতরেই নয়া দুনিয়া থেকে সম্রাট চার্লসের কাছে সোনা রোপা ও হীরা জহরতে বোঝাই কয়েকটা জাহাজ আসছে। সংবাদটা ছিল বারবারুসার জন্য খুবই আনন্দদায়ক। খবর পাবার পরপরই তিনি তাঁর নৌবহরের বাছাই করা কয়েকটা জাহাজ আলাদা করে হাসান ক্রুসু আর কাকাদের কমান্ডে সে দিকে পাঠিয়ে দেন। তিনি তাঁদেরকে এই বলে বিদায় জানান যে, তোমরা নয়া দুনিয়া থেকে আগত জাহাজগুলোর উপর আক্রমণ চালিয়ে সেগুলোতে থাকা সবকিছু নিয়ে আসবে। নির্দেশ পাবার পর হাসান ও কাকাদ শিকারী ঈগলের ক্ষিপ্রতায় সাগরের পশ্চিম দিকে ধেয়ে চলেন।
সমুদ্র ঈগল
১৮
– সূর্য তখনো অস্ত যায়নি। মা’আয হাসান ক্রুসুর দাদা জাবির বিন মুগীছকে সন্ধ্যের খাবার খাইয়ে বাসিতকে সাথে নিয়ে তাদের বস্তীতে ফিরছিল। শালির পাহাড়ের পাদদেশ অতিক্রম কালে দেখতে পেল রাখাল মুনযির বিন যুবাইর বাড়ি ফেরার লক্ষে তাঁর ভেড়া বকরীগুলোকে একজায়গায় জড়ো করছেন।
– মা’আয তাঁর কাছে এসেই ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরলো। মা’আযের অনুসরণে বাসিতও তার ঘোড়া দাঁড় করিয়ে নিলেন।
– মা’আয মুনযির বিন যুবাইরকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলতে যাচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই মুনযির মা’আযকে সম্বোদন করে বললেন:
– “বেটি! তুমি বেশ সময় ধরে বস্তিতে ছিলে না, তোমার অনুপস্থিকালে আমাদের পল্লীতে বড় একটা ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল”।
– মুনযির বিন যুবাইরের কথা শুনে মা’আযের কপাল কুঞ্চিত হয়ে উঠল। সে ঘোড়া থেকে নেমে মুনযিরের পাশে গিয়ে চিন্তান্বিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো— “চাচা! দয়া করে একটু বিস্তারিতভাবে বলুন সেখানে কী ঘটতে যাচ্ছিল”?
– গ্রাণাডার সবচেয়ে বড় ইহতেসাবী আদালতের পক্ষ থেকে চারজন সশস্ত্র সৈন্য এসেছিল। আদালতের পক্ষ থেকে তোমার পিতা এবং আদনানী কবিলার সর্দার সা’দ বিন সালামার নামে একই মর্মে দুখানা পত্রও ছিল। পত্রে লেখা ছিল আপনাদের কবিলার কতিপয় যুবক স্পেন সম্রাট চার্লসের নির্দেশ লঙ্গন করে চলছে। চার্লসের নির্দেশ ছিল আলবাশারাত ব্যতীত স্পেনের কোথাও কেউ মুসলিম পরিচয়ে বসবাস করতে পারবে না। স্পেনে বসবাস করতে হলে নাসারা পরিচিতি নিয়েই বসবাস করতে হবে। পত্রে অভিযোগ আকারে একথা লিখিত ছিল যে, তোমাদের গোত্রদ্বয়ের কতিপয় যুবক সম্রাটের এই নির্দেশের বিপরীত কাজে জড়িত। পাদ্রীরা যেসব মুসলমানদের নাসারা বানাতে চায় এই যুবকরা তাদেরকে দেশ ত্যাগে সহায়তা যুগিয়ে থাকে। তারা দুই কবিলার চার যুবকের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা নিয়ে এসেছিল। যাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল তাদের একজন ছিল তোমার ভাই মুগীরা বিন কা’ব।
– তবে ভাগ্য ভালো দু’জন লোক তাদের আর আমাদের মাঝে পড়ে ঝামেলাটা মিটিয়ে ফেলেছে। যদি ওরা মাঝখানে না আসতো তাহলে ওদের সাথে আমাদের সংঘর্ষ বেঁধে যেত। নিশ্চয় তখন ওই সশস্ত্র চার যুবক আমাদের হাতে মারা পড়তো। আর এমন হলে গ্রাণাডার প্রতিটি গির্জার রক্তখেকো পাদ্রীদের চাপে পড়ে চার্লসকে আলবাশারাত অভিমুখে সৈন্য প্রেরণ করতে হতো। আর তেমনটি হলে আলবাশারাতের ভবিষ্যত কী যে হতো তা একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই জানেন।
– মা মা’আয! হিস্পানিয়ায় কেবল আমাদের আলবাশারাত ওয়াদিটাই নামকা ওয়াস্তের স্বাধীনতা নিয়ে হলেও টিকে আছে। পুরো স্পেনের মতো এখনও ওখানে জোরপূর্বক নাসারাকরণ কার্য জারি হয়নি। তবে তুমি বিশ্বাস করো যে সব মুসলমানদের ওরা জোরপূর্বক নাসারা বানিয়ে নিচ্ছে বিশ্বাসে ওরা প্রত্যেকেই খালেস এক একজন মুসলমান। অবস্থার চাপে পড়ে ওরা কেবল বাহ্যিকভাবে নিজেদের পরিচিতির চাদরটাই বদলাচ্ছে। আর যারা এটুকুও করতে রাজি হচ্ছে না, তারা বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন মুসলিম দেশে হিজরত করছে।
– মুনযির বিন যুবাইর তাঁর কথাগুলো বলে একটুখানি থামতেই মা’আয তাকে লক্ষ করে বলল: “চাচা! আপনি বলছিলেন একটি লোক যদি মধ্যখানে না আসতো তাহলে ঘটনা অনেক দূর গড়িয়ে যেতো। কিন্তু লোকটির নাম তো বললেন না? লোকটাতো আমাদের উভয় কবিলার জন্য বড় একজন মুহসিন। আমি কি আমাদের কবিলাদ্বয়ের সেই মহান মুহসিনের নামটা জানতে পারি”?
– মুনযির বিন যুবাইর খানিক্ষণ তার দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে বললেন: “মা! যে লোকটি মাঝখানে পড়ে ঘটনাটিকে বড় হতে দেয়নি তুমি তাকে মোটেও পছন্দ করো না। একবার তুমি তোমাদের বাড়ির সদর দরজায় তাকে প্রচণ্ড অপমান করেছো। সে লোকটি হচ্ছে ফারদিশ নদীর কিনারে গড়ে ওঠা রাহিব পল্লীতে বসবাসকারী পাদ্রী লিসাঙ্কু”।
– চাচা সে ঘটনার পর অনেকগুলো মাস কেটে গেছে। আমি তাঁকে আর কখনো দেখতে পাইনি। আমি ঘটনাটি ভুলে গিয়েছিলাম। তার প্রতি আমার না-পছন্দির ব্যাপারটাও ভুলে গিয়েছিলাম। আজ আপনার কথায় ঘটনাটি স্মরণ হলো। সে যা-ই হোক, তাঁর কারণে যদি আসাদের কবিলাদ্বয়ের ফায়দা হয়ে থাকে, তাঁর ভূমিকার জন্য আমার ভাই মুগীরা বিন কা’ব বিপদ থেকে উদ্ধার হয়ে থাকেন তাহলে আমি তাঁকে সালাম জানাবার জন্য প্রস্তুত। অতীতে তাঁর সাথে কৃত আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতেও মোটেও দ্বিধান্বিত হবো না।
– মা’আয আরো বললো: চাচা আমি ঘটনাটা ভুলে গিয়েছিলাম। এখন যখন স্মরণ হয়েছে এবং প্রতিয়মাণ হয়েছে সত্যিই তিনি আমাদের কবিলার মুহসিন তখন কেউ না বললেও আমি তাঁর সাথে আমার অতীত আচরণের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থী হবো। চাচা আপনি কি জানেন তিনি এখন তাঁর খানকায় আছেন কি না? জানলে বলুন, আমি এখনই তাঁর খানকায় চলে যাব।
– না মা! আমার যতদূর বিশ্বাস এই মুহূর্তে তিনি বোধহয় তোমাদের হাবেলিতে অবস্থান করছেন।
– মা’আয কথাটা শুনে তার ঘোড়ার দিকে যেতে যেতে বলল: তাহলে ভালোই হলো! আমি আব্বার সম্মুখেই তাঁকে অপমান করেছিলাম এবার আব্বার সামনেই তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁর শুকরিয়া আদায় করবো।
– মা’আয ঘোড়ায় চড়ে বসছিল। রেকাবে পা থাকতেই মুনযির বিন যুবাইর তাকে লক্ষ করে বললেন: বেটি! তোমার জন্য আরেকটা বিরাট খুশখবরি রয়েছে।
– ঘোড়ার উপর বসতে বসতে মা’আয বলল: কী খুশখবরি চাচা?
– বেটি! তুমি তো প্রায় প্রতিদিনই আমাকে জিজ্ঞেস করতে আলমে ইসলামের আযীম মুহসিন খাইরুদ্দীন বারবারুসার প্রিয়তম সাথী সমুদ্র ঈগল হাসান ক্রুসু কবে আমাদের ওয়াদিতে এসে পৌছাবেন। মা মা’আয! আমি তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছি তিনি কিছুক্ষণ আগে আমাদের আলবাশারাতে এসে পৌঁছেছেন এবং খুব সম্ভব তিনি আর পাদ্রী লিসাঙ্কু এখন তোমাদের হাবেলিতে অবস্থান করছেন।
– হাসান ক্রুসুর নাম শুনামাত্র মা’আযের চেহারায় যেন শালিরের সবগুলো গোলাপ একযোগে হেসে উঠল। নিঃসীম আনন্দে তার অন্তরটা যেন নেচে উঠল। কিন্তু পরক্ষণেই চিন্তান্বিত চেহারায় প্রশ্ন করলো চাচা! আমাদের হাবেলিতো একটা খোলা জায়গা। হাসান ক্রুসু তো স্পেনিশদের চক্ষু শূল। জানি না আমাদের এখানে অবস্থান তাঁর জন্য কোনো ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায় কি না। স্পেন সরকারের কোনো টিকটিকি যদি সংবাদটা জানতে পারে তাহলে যে কোনো মূল্যে তাঁকে হাতছাড়া হতে দেবে না।
– বেটি মা’আয! এ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। তিনি তাঁর নিরাপত্তার ব্যাপারে পূর্ণ সজাগ অবস্থায়ই তোমাদের হাবেলিতে আছেন। তাঁর সাথে সাক্ষাত করতে হলে দ্রুত বাড়ি যাও।
– মা’আয আনন্দে উড়ে যাবে না দৌড়ে যাবে দিশা করতে পারছিল না। বাসিতকে কিছু না বলেই সে তার প্রিয় ঘোড়াটিকে যেন হাওয়ায় ভাসিয়ে দিয়ে বাড়ি অভিমুখে উড়ে চলল।
– মুনযির বিন যুবাইর মা’আযের অবস্থা দেখে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলেন।
– বাড়ি থেকে কিছু দূরে থাকতেই মা’আয হঠাৎ করে পূর্ণ শক্তিতে তাঁর ঘোড়ার বাগ টেনে ধরলো। সে দেখতে পাচ্ছিল রাহিব লিসাঙ্কু এদিকে এগিয়ে আসছেন।
– মা’আয তখনো জানতো না, আসলে পাদ্রী বেশী লিসাঙ্কুই হচ্ছেন তাঁর স্বপ্নপুরুষ হাসান ক্রুসু। সে মূলত হাসান ক্রুসুকেই অপমান করেছিল।
– সামন থেকে লিসাঙ্কুকে আসতে দেখে মা’আযের মাথা নত হয়ে পড়ছিল। সে কীভাবে কথা শুরু করবে সেটা নিয়ে ভাবছিল।
– মা’আয ভাবছিল সে পিছিয়ে গিয়ে মুনযির বিন যুবাইরের উপস্থিতিতে লিসাঙ্কুর সাথে কথা বলবে। কিন্তু সামনের দিকে তাকিয়ে প্রচণ্ডভাবে থমকে গেল। সে দেখতে পাচ্ছিল গলায় ক্রুশ লটকানো চার সশস্ত্র নাসরানী সৈন্য (সম্ভবত মুনযির বিন যুবাইরের কাছ থেকে শুনা সেই চার সৈন্য) পাদ্রী লিসাঙ্কুর দিকে ধেয়ে আসছে।
– তাদের একজন কর্কশ কন্ঠে লিসাঙ্কুকে দাঁড়াবার নির্দেশ করছিল।
– লিসাঙ্কু তখন মা’আয এবং বাসিতের প্রায় কাছে চলে এসেছিলেন। ওদিক থেকে মুনযির বিন যুবাইরও তাঁর পশুপাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মা’আযদের পাশে চলে এসেছিলেন। তারা সকলেই লিসাঙ্কুকে উদ্দেশ্য করে সৈন্যটির কর্কশ কন্ঠের নির্দেশ শুনতে পেয়েছিলেন।
– লিসাঙ্কু তাঁর অবস্থানেই দাঁড়িয়ে গেলেন। ওরা দ্রুত তাঁর কাছে চলে আসলো। ওদের মধ্যকার নেতাগোছের লোকটি আগের চেয়েও কর্কশ কন্ঠে বলে উঠলো: পাদ্রী লিসাঙ্কু! জানি স্পেনে আপনি একজন সম্মানিত অতিথি। আপনাকে সবাই সম্মান করে। আমরাও আপনাকে সম্মান করি। তবে আমরা চাই আপনি আলজেরিয়ায় যা-ই করুন না কেন এখানকার রাজনৈতিক ব্যাপারে নাক গলাবেন না। আপনি শুনে রাখুন আমরা কাহতানি ও আদনানী কবিলাদ্বয়ের যে চার যুবককে ধরে নিয়ে যেতে এসেছিলাম তা কারো নির্দেশের ভিত্তিতে নয়। বরং এ তালিকাটা আমরাই করেছিলাম। আমাদের ইচ্ছে ছিল যখন সরকার ও আদালতের দোহাই পেরে আমরা ওদেরকে ধরে নিয়ে যাবো তখন ওরা ওদেরকে ছাড়িয়ে নেবার জন্য বড় অংকের অর্থের প্রস্তাব দেবে, আর আমরা অর্থ নিয়ে ওদেরকে ছেড়ে যাব। কিন্তু আপনি খামাখাই আমাদের পথে কাটা হয়ে দাঁড়ালেন।
– ওদের কথা শুনে পাদ্রী লিসাঙ্কু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন আমার সামনে এভাবে ঘোড়ায় বসে আমার সাথে আলাপ করাটাকে জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে শুমার করছি। আমি তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি— কিছু বলতে হলে ঘোড়া থেকে নেমে বলো।
– মুনযির বিন যুবাইর আর মা’আযরাও লিসাঙ্কুর কথা শুনতে পাচ্ছিল। লিসাঙ্কুর ভাষা ছিল কর্তৃত্বসূলভ। সেখানে কোনো আবেদন ছিল না, ছিল সুস্পষ্ট নির্দেশ।
– ওরা সবাই যার যার ঘোড়া থেকে নেমে পড়ল। এবার লিসাঙ্কু গর্জন দিয়ে বললেন:
– তোমরা মাত্র কয়েকটা মুদ্রার জন্য মনুষত্য নিয়ে সওদা করতে নেমেছো। একটু ভেবে দেখেছো কি কোনো মুসলিম রাষ্ট্রে যদি তোমাদের কোনো নাসরানী ভাই এমন বিপদে পড়ে তাহলে তোমাদের অন্তরে কেমন ছদমা লাগবে?
– লিসাঙ্কুর একথার জবাবে এক যুবক কিছুটা এগিয়ে এসে বলল: আমাদের অন্তরে কোনো সদমা অনুভূত হবে না। আমরা ইসলাম আর নাসরানিয়াত কিছুই বুঝি না, বুঝতে চাইও না। আমরা চাই অর্থ।
– জনাব পাদ্রী! আপনার সম্মান বজায় রেখেই বলছি আমরা পুনরায় একদিন আমাদের উদ্দেশ্য নিয়ে এ ওয়াদিতে আসবো। আজকের মতো সেদিনও যদি আপনি আমাদের উদ্দেশ্যের পথে আড়াল হয়ে দাঁড়ান তাহলে আপনি যতবড় সম্মানি ব্যক্তিই হোন না কেন আমরা আপনাকে বরদাশত করবো না। আপনার উপর হাত তুলতে এতটুকু ইতস্ততা করব না।
– লোকটার কথা লিসাঙ্কু বেশী হাসান ক্রুসুর শিরায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। তিনি কিছুক্ষণ নীরবে নিজেকে সামলে নিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলতে লাগলেন:
– “তোমরা তাহলে আমার উপরও হাত তুলার দুঃসাহস দেখাবে”?
– ওদের মধ্য থেকে যে লোকটা এ কথা বলেছিল সে বে-পরওয়ার মতো বলে উঠলো অবশ্যি।
– কথাটা শুনে পাদ্রী লিসাঙ্কুর অবস্থা আমূল বদলে গেল। তাঁর চেহারাটা আগুণের ভাটার মতো লাল হয়ে উঠলো। আর সেই লাল আগুন থেকে যেন রাগের স্ফুলিঙ্গ উড়তে লাগলো।