মাদরাসাকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার ধারাটি খুব বেশি দিনের পুরনো নয়। কয়েকজন স্বপ্নবান তরুণ একত্রিত হয়ে একটি সাহিত্য সংগঠন করবে -এই ব্যাপারটিও খুব বেশিদিন আগে কল্পনা করা যেত না । বাংলা বই পড়া, লেখালেখির চর্চা করা, সমসাময়িক বিষয়ে জ্ঞানার্জন করা- এসব বিষয়গুলি এক যুগ আগেও এতোটা সহজ ছিলো না আমাদের কওমি অঙ্গনে ।
সিলেবাস ভিন্ন কোন বই পড়ার ‘অপরাধে’, পত্র-পত্রিকার ধারে কাছে যাওয়ার ‘অন্যায়ে’ কত তালিবুল ইলমকে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বহিস্কৃত হতে হয়েছে তার কোন হিসেব নেই। কত সম্ভাবনাময় মেধাকে আমাদের অবহেলা-অবজ্ঞার কারণে চলে যেতে হয়েছে অন্য পরিবেশে…. এগুলি এখন শুধুই অনুতাপের ইতিহাস !!
এখনকার (অধিকাংশ) মাদরাসাপড়ুয়ারা নিয়মতান্ত্রিক সাহিত্যচর্চা করছে। নিজেদের মধ্যে চিন্তা বিনিময়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে নিচ্ছে। নতুন নতুন সাহিত্য সংগঠনের জন্ম দিচ্ছে। সাহিত্য আড্ডা, লিটলম্যাগ প্রকাশ, আনন্দ ভ্রমণ -এ সময়ের স্বপ্নবান তরুনদের প্রাত্যহিক রুটিনের মতই সাধারণ বিষয়। এমনই একটি সাহিত্য সংগঠনের নাম- “নবধারা পাঠক ফোরাম”।
২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে যার আনুষ্ঠানিক শুভযাত্রা। গতিময়তার এই যুগে সবাই যখন রাতারাতি লেখক হওয়ার প্রেরণা জোগাচ্ছে তখন তেজগাঁও জামিয়া ইসলামিয়ার এই সংগঠনটি শ্লোগান দিয়ে বলছে- “আজকের পাঠক, আগামির লেখক”| অর্থাৎ ভালো মানের লেখক হওয়ার জন্য আগে সাহিত্য সারথিদের ভালো মানের পাঠক হওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে । নিয়মিত বই- পত্র পড়ার পাশাপাশি আরো যেসব কার্যক্রম এখানে চলছে-
১. শুদ্ধ ভাষায় মত বিনিময়।
২. রোজনামচা লেখার অভ্যাস ।
৩. আশপাশের ঘুমন্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করা ইত্যাদি।
ভবিষ্যতে সংগঠনটি একটি জাতীয় মানের সাময়িকী প্রকাশ করতে যাচ্ছে। নবধারা পাঠক ফোরামের উপদেষ্টা জামিয়ার শিক্ষক মাওলানা লিয়াকত আলী মাসউদ সাহেব । প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তাকমিল জামাতের আমিন মুনশি । এছাড়া দায়িত্বশীলদের মধ্যে আছেন জালালাইন জামাতের আতাউর রহমান খান, ইয়াছিন কাজী, জাহিদ আল হাসান, ইকবাল, হাবিব প্রমুখ।