মুহাম্মাদ নাজমুল ইসলাম :
দেওবন্দের ছাত্ররা রাসূল সা. থেকে দুধ সংগ্রাহক!
হজরত মাওলানা রফী উদ্দীন রাহ. মুহতামিম থাকাবস্থায় একটা বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। একবার এক ছাত্র মাদরাসার বোর্ডিং থেকে খাবার উঠিয়ে খানার পাত্রটি নিয়ে সোজা চলে আসলো মাওলানার রফী উদ্দীন সাহেব’র কাছে। এসে বলতে শুরু করে এই শুরবা কি খাওয়ার জন্য বানানো হয়েছে? নাকি ওজু করার জন্য।
এটা তো একদম খাবারের উপযোগীই না।
এটা একটা শুরবা হলো। শুধুই তো টাটকা পানি দেখা যাচ্ছে। এটা কেমনে খাবো? এর দ্বারা তো ওজু করা যাবে! তার এ অভিযোগ শোনার পর রফী উদ্দীন সাহেব খুব দূরদৃষ্টি দিয়ে তার চেহারার দিকে অপলক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন। তারপর বললেন, এই ব্যক্তি সত্যিকারার্থে দারুল উলূম দেওবন্দে’র রেজিস্টারভুক্ত ছাত্র না।
এরকম কথা শুনে উপস্থিত সবাই চমকে গেলো। আসলে বিষয়টা কী! হজরত কেমনে একটা ছেলেকে বিশ্বাসের সাথে মাদরাসার ছাত্রই-না বলে অস্বীকার করে বসলেন। কারণ কী?
সবাই কিছুটা উদ্যত হয়ে মাদরাসার রেজিস্টারবুকে ওর নাম খুঁজাখুঁজি শুরো করলো। কিন্তু সত্যিকারই দেখা গেলো, ও দারুল উলূমের ছাত্র না। ধোঁকাবাজি করে বোর্ডিং লিস্টে নিজের নাম লিখিয়ে খাবার খাচ্ছে।
এবার সকল ছাত্র উস্তাদ হজরতের কাছে এর রহস্য জানতে চাইলেন, কেমনে আপনি একদম বিশ্বাসের সাথে বললেন ও দারুল উলূমের ছাত্রই না।
তখন রফী উদ্দীন সাহেব বললেন, আমি যে স্বপ্নে দেখেছিলাম হুজুর সা. নিজ হাতে দুধ বিতরণ করছেন আর ছাত্ররা নিজ পাত্র দিয়ে দুধ সংগ্রহ করছে। আলহামদুলিল্লাহ! সেদিন যারাই দুধ সংগ্রহ করেছে সবার চেহারাই আমার কাছে পরিচিতি। এমনকি যারাই দারুল উলূমে ভর্তি হয় সঙ্গে সঙ্গেই আমি তাদের চেহারাগুলি চিনে ফেলি। কিন্তু খানা সম্পর্কে ওর অভিযোগ করার পর আমি যখন গভীর দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালাম মনে হলো তাকে তো সেদিন আমি রাসূল সা.’র হাত থেকে দুধ সংগ্রহ করতে দেখি নি। সুতরাং ও দারুল উলূমের ছাত্র না।
এজন্যই আমি পূর্ণ বিশ্বাসের সাথেই বলেছিলাম যে, সে প্রকৃতপক্ষে দারুল উলূমের রেজিস্টারভুক্ত ছাত্র না।
(সূত্র:মুবাশশারাতে দারুল উলূম পৃ:৪৭) চলবে।