বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৩:৩৭
Home / ইতিহাস ঐতিহ্য / সমুদ্র ঈগল ২ (ক)

সমুদ্র ঈগল ২ (ক)

কুতায়বা আহসান :

– চাটানের আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকা মা‘আয দাঁড়িয়ে গেল। তার দেখাদেখি তার বড় বোন নাবিলও দাঁড়িয়ে গেলেন। মা‘আযের অভিব্যক্তি থেকে বিস্ময় ঠিকরে পড়ছিল। সে ক্রমশ নাবিলের ঘনিষ্ট হয়ে এক পর্যায়ে অনুচ্চ-কণ্ঠে বলল: আপা! ব্যাপারটা আমার কাছে মঙ্গলজনক মনে হচ্ছে না। দুই রাহিবের মুনযির চাচার কাছে আগমন, এরপর ইবনে মুনযিরের আগমনের প্রেক্ষিতে মুনযির কর্তৃক ওদেরকে নিয়ে আমাদের বস্তি অভিমুখে গমন আমার মনে কেমন যেন ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে। মনে হচ্ছে আমাদের বস্তিগুলোর উপর নতুন কোনো আপদ নেমে আসছে। নিশ্চয় এই রাহিবদ্বয় আমাদের ওখানে গিয়ে বস্তির কারো নামে মিথ্যে কোনো অপবাদ আরোপ করবে। এরপর তাকে তাদের ইহতেসাবী আদালতে শাস্তি দেয়ার জন্য ধরে নিয়ে যেতে চাইবে। আজকাল রাহিবগুলো এ কাজটা করে বড়ই আনন্দ পায়।

– আপা! চলুন আমরা প্রত্যহ যেখানে গিয়ে থাকি আজও সেখান পর্যন্ত যাই, এরপর সেখান থেকে বাড়ি ফিরে দেখি এরা আমাদের বস্তির কার নামে অভিযোগ নিয়ে এসেছে? এদের কারণে আমাদের বস্তিতে কী ধরনের পরিবর্তন আসছে।

– বড় বোন নাবিল মা‘আযের সাথে ঐক্যমত্য পোষণ করে বলল: ঠিক আছে চল। অতঃপর তারা তিনজন নিজ নিজ ঘোড়ায় পদাঘাত হেনে সামনে এগিয়ে যেতে লাগল।

– অল্পক্ষণ পর মুনযির বিন যুবাইর রাহিবদ্বয়কে নিয়ে কাহতানী সর্দার কা‘ব বিন আমিরের কেল্লাসদৃশ্য হাবেলির সদর দরজার সামনে উপস্থিত হলেন।

– সদর দরজায় কয়েকজন সশস্ত্র রক্ষী বিদ্যমাণ ছিল। মুনযির তাদের একজনকে লক্ষ করে বললেন: সর্দারদ্বয় কি হাবেলির ভেতরে আছেন?

– মুনযির যাকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলেছিলেন সে গভীরভাবে তাঁর প্রতি তাকিয়ে বলল: কবীলায় একজন লোক মুমূর্ষ অবস্থায় আছে। সর্দারদ্বয় তাকে দেখতে গেছেন। আমাদেরকে বলে গেছেন আপনার সাথে যে দুজন মেহমান আসার কথা, আমরা যেন তাদেরকে মেহমানখানায় বসিয়ে রাখি, তাঁরা শীঘ্রই চলে আসছেন।

– মুনযির রাহিবদ্বয়কে নিয়ে হাবেলিতে ঢুকে মেহমানখানায় বসে ইন্তেজার করতে লাগলেন। একটু পর মুনযির তাঁদের উভয়কে উদ্দেশ্য করে বললেন: আপনারা একটু বসুন! আমি দেখে আসি কে অসুস্থ। তাঁরা কখন আসছেন।

– ইবনে যুবাইর মেহমানখানা থেকে বেরিয়ে দরজারক্ষীদের এখানে এসে তাদের সাথে কী এক ব্যাপারে খানিক আলোচনা করতে লাগলেন। ইত্যবসরে তিনি দেখতে পেলেন সর্দারদ্বয় হাবেলির দিকে এগিয়ে আসছেন। সর্দারদ্বয় মুনযির বিন যুবাইরের কাছে এসেই তাকে গলায় মিলিয়ে নিলেন। তাঁদেরকে বড়ই প্রফুল্ল দেখাচ্ছিল। কা‘ব বিন আমির কিছুটা সাংকেতিকভাবে প্রশ্ন করলেন: যে মেহমান দুজন আসার কথা ছিল তাঁরা কি এসে গেছেন?

– ইবনে যুবাইর মুচকি হেসে বললেন: সর্দার! আপনার আন্দাযা সঠিক। তাঁরা এসে গেছেন। আমি তাঁদেরকে মেহমানখানায় বসিয়ে রেখে এসেছি। তাঁরা ওখানে বসে ব্যাকুল হয়ে আপনাদের অপেক্ষা করছেন।

– কা‘ব বিন আমির মুনযিরের হাত ধরে বললেন: আপনি আমাদের সাথে একটু এদিকে আসুন। সা‘দ বিন সালামা তাঁদের সাথে সাক্ষাতের পূর্বে আপনার কাছ তাঁদের ব্যাপারে কিছুটা জেনে নিতে চাচ্ছেন । কথাটা বলেই কা‘ব বিন আমির মুনযিরকে নিয়ে হাবেলির আরেক কামরায় ঢুকে পড়লেন। এরপর ইবনে যুবাইরকে উদ্দেশ্য করে বললেন: এবার বলো! এরা মূলত কে? কতটুকু বিশ্বাস করা যায় এদের উপর?

– ইবনে যুবাইর গলা পরিষ্কার করে বলতে লাগলেন: আপনারা উভয়ে এটুকু তো আশা করি আগে থেকেই জানেন যে, ফারদিশ নদীর কিনারে গড়ে ওঠা রাহিব পল্লীতে যে সমস্ত রাহিবরা থাকেন তারা মূলত মুসলমান। এখানকার কোনো মুসলমানকে যখন নাসারারা ধরে নিয়ে ইহতেসাবী আদালতের সামনে দাঁড় করায় তখন এ রাহিবরা সক্রিয় হয়ে উঠেন এবং কোনো না কোনোভাবে তাঁরা এদেরকে ছাড়িয়ে নিয়ে থাকেন।

– এবার শুনুন! আমার সাথে যে দুজন রাহিব এসেছেন তাঁদের মধ্যে যুবক রাহিবের নাম হচ্ছে বুট্রুস। ইনি আগে থেকেই এই পল্লীতে অবস্থান করছেন। আর তরুন যে রাহিব এসেছেন এ মূলত এক বারুদ। নাম হাসান ক্রসু। অত্যন্ত সাহসী এবং বুদ্ধিদীপ্ত ছেলে। মূলত হিস্পানিয়ার বাসিন্দা হলেও বর্তমানে তিনি খাইরুদ্দীন বারবারুসার সাথী। তাঁর উপর সফল নৌ যোদ্ধা খাইরুদ্দীন বারবারুসার অগাধ আস্থা। বয়সে তরুন হলেও কাজে পোড়খাওয়া একজন সফল কাপ্তানের মতো। খাইরুদ্দীন তাঁর দ্বারা বড় বড় কাজগুলিই নিয়ে থাকেন।

– এ তরুণ একদিকে যেমন দক্ষ তলোয়ারধারী, তেমনি পাক্কা একজন তীরন্দায। একজন সফল মাল্লা এবং অতিদক্ষ সাঁতারু। কয়েকমাস আগে যখন নাসারারা গ্রানাডা দখল করে নেয় এবং শহরের সবগুলো কুতুবখানার কিতাব একত্রে জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সেই আগুনে ফেলে মুসলমানদের হত্যা করছিল তখন ইনি তাঁর পরিবারকে নিয়ে গ্রানাডা থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। পিতা আগেই শহীদ হয়ে গিয়েছিলেন। শহরজুড়ে আতঙ্ক আর ত্রাস বিরাজ করায় যে যেভাবে পারছিল সেভাবেই পালিয়ে যাচ্ছিল। এভাবে পালিয়ে যেতে গিয়ে তাঁর মা বোন তাঁর থেকে হারিয়ে যান। তিনি কেবল তার বুড়ো দাদাকে নিয়ে কোনো ক্রমে আমাদের আল-বাশারাতে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়ে ছিলেন। তাঁর দাদা— যার নাম জাবির বিন মুগীস, এখনো সাগর তীরের জেলেপল্লীতে বসবাস করছেন। তরুন হাসান ক্রসু তার দাদাকে নিয়ে আফ্রিকা চলে যেতে চাইছিলেন, কিন্তু তাঁর দাদা বলছেন: যতদিন না তিনি তাঁর বৌমা ও নাতনির খুঁজ পাচ্ছেন ততদিন তিনি এখান থেকে সরে যাবেন না।

– তরুণ হাসান ক্রুসু বেশ কিছু দিন বিভিন্ন বেশে তাঁর মা বোনকে খুঁজে বেড়ান কিন্তু তাঁদেরকে না পেয়ে নিরাশ হয়ে একসময় তিনি দাদাকে না জানিয়ে খাইরুদ্দীন বারবারুসার কাছে চলে যান। সেই থেকে তিনি এখনো তাঁর অধীনে নির্যাতীত হিস্পানীয় মুসলমানদের সহায়তায় নিজেকে নিয়োজিত করে রেখেছেন।

– তিনি শুনতে পেয়েছেন তাঁর মা আর বোন নাকি গ্রনাডার কোনো এক কালিসায় বন্দীনী রয়েছেন। তাই মূলত তাঁদেরকে উদ্ধারের লক্ষ নিয়েই তিনি আবার হিস্পানিয়ায় চলে এসেছেন। কালিসাগুলোতে খুঁজে দেখার স্বার্থে তিনি রাহিবের বেশ ধারণ করেছেন। একটা একটা করে গ্রানাডার সবগুলো গির্জার অভ্যন্তরে তিনি খুঁজ চালিয়েছেন। কিন্তু মা ও বোনকে কোথাও খুঁজে পাননি।

– মুনযির বিন যুবাইর একটু থেমে আবার বলা শুরু করলেন: আমি আপনাদের জ্ঞাতার্তে আরো বলছি বর্তমানে হিস্পানিয়ায় তরুন পাদ্রী বেশী হাসান ক্রুসুকে অত্যন্ত মর্যাদা প্রদান করা হচ্ছে। তার একটা বিশেষ কারণও রয়েছে। কারণটা হচ্ছে— দখলদার খিষ্টানরা হিস্পানিয়ায় তাদের দখল মজবুত করে নেয়ার পরপরই আফ্রিকার সাগর তীরের বিস্তর মুসলিম আবাদীও তাদের দখলে নিয়ে নিয়েছিল। সেখানেও তারা হিস্পানিয়ার মতো মুসলিম উচ্ছেদ এবং মুসলিম নির্যাতন অবাধে চালিয়ে যাচ্ছিল। সেখানকার নাসরানী শাসক ছিল অত্যন্ত মুসলিম বিদ্বেষী। হিস্পানিয়ার মতো সেখানেও তারা জবরদস্তিমূলক নাসারাকরণ প্রক্রিয়া জারি রেখেছিল। আর এ দায়িত্বটা অর্পিত ছিল লুইস নামক জনৈক বিশপের উপর। সেই বিশপের ছিল একমাত্র এক ছেলে। সেও ছিল বাপের মতো একজন পাদ্রী। বিশপ লুইসের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে কে বা কারা তাকে হত্যা করে ফেলেছিল। তার সাথে হত্যা করা হয়েছিল তার ছেলে লিসাঙ্কুকেও। কিন্তু জনগণ সেটা জানতে পারেনি। লুইস হত্যার ঘটনাটি ছিল অত্যন্ত বড় একটা ব্যাপার। তাই লিসাঙ্কু হত্যার ব্যাপারটি এর নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিল।

– তরুন হাসান ক্রুসু এখানে সেই লিসাঙ্কুর পরিচয়ে প্রবেশ করেছেন। যেহেতু লুইস কেবল আফ্রিকায় নয় তার কর্মদক্ষতায় পুরো নাসরানীজগতে আলোচিত ব্যক্তিতে পরিণত হয়ে উঠেছিলেন এবং সর্বস্থরের নাসারাদের কাছে ছিলেন সম্মানের পাত্র, তাই তার পুত্র লিসাঙ্কুর বেশে হাসান ক্রুসুর উপস্থিতি তাকে এখানে মর্যাদার আসনে তুলে দিয়েছে। এখানকার জনগণ এবং সরকারের সর্বস্থরে তাঁকে বিশেষ সম্মানের নজরে দেখা হচ্ছে। হিস্পানিয়ায় প্রবেশের পর তিনি যেখানে গিয়েছেন সেখানেই তাকে সীমাহীন সম্মান দেখানো হয়েছে। গির্জাগুলোতে তাকে আলাদা মর্যাদা দেয়া হয়েছে। বুট্রুস নামক যে রাহিবের কথা বলেছি, ইনি পূর্ব থেকেই তাঁর পরিচিত। হিস্পানিয়ায় প্রবেশের পর থেকে তিনি হাসান ক্রুসুকে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন। সর্বত্রেই তাঁর ছায়াসঙ্গী হয়ে ঘুরছেন। এরা হিস্পানিয়ার প্রতিটি অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন কিন্তু কোথাও হাসান ক্রুসুর মা ও বোনের সন্ধান পাননি।

– হাসান ক্রুসুর আরেকটা দুর্ভাগ্য হচ্ছে— তিনি জেলেপল্লীতে অবস্থানরত তাঁর দাদার সাথেও সাক্ষাত করতে পারছেন না। তাঁর দাদা তাঁকে বলে রেখেছেন, “যতদিন তিনি তাঁর মা ও বোনকে খুঁজে বের করতে না পারছেন ততদিন যেন তিনি তাঁর সাথে সাক্ষাত না করেন। নতুবা তিনি লোহার শিক গরম করে তাঁকে দাগিয়ে দেবেন”। আমি যতটুকু জানি তিনি আর মাত্র দুদিন ফারদিশ নদীর কিনারে রাহিব পল্লীতে থাকবেন এরপর খাইরুদ্দীন বারবারুসার সাথে মিলিত হবার জন্য সাগরে নেমে যাবেন।

– হাসান ক্রুসু মূলত দুটি উদ্দেশ্য নিয়ে হিস্পানিয়ায় প্রবেশ করেছেন। প্রথম উদ্দেশ্যে তিনি কামিয়াব হতে পারেননি। আমার যা ধারণা— গত বছর তুর্ক আর বারবারদের যে জাহাজগুলো এখান থেকে নির্যাতিত মুসলমানদের উঠিয়ে নিয়ে গেছে ওঁর মা ও বোনরা বোধ সে সব জাহাজের কোনো একটিতে ছিলেন। শুনেছি তুর্করা এদেরকে উদ্ধার করে বলকান এলাকার বসনিয়া হারজেগোভিনা, রুমানিয়া ও বুলগেরিয়ায় আবাসিত করেছেন। আমার ধারণাটা যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে হাসান ক্রুসুর জন্যে তাঁর মা ও বোনকে খুঁজে বের করা সত্যিই মুশকিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। সে হবে অনেক দীর্ঘ পথপরিক্রমার ব্যাপার। অথচ ততদিন পর্যন্ত হাসান ক্রুসু তাঁর বুড়ো দাদার সাথে সাক্ষাত করতে পারছেন না।

– দ্বিতীয় যে উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি এখানে এসেছেন সেটা তিনি নিজেই আপনাদের কাছে খুলে বলবেন। আমার মনে হচ্ছে এবার আমাদের তার কাছে যাওয়া দরকার। কা‘ব বিন আমির এবং সা‘দ বিন সালামা উভয়ই মুনযিরের কথায় সায় দিয়ে উঠে দাড়ালেন এবং মেহমানখানার দিকে হাটা ধরলেন।

– মেহমানখানায় বসে লিসাঙ্কু বেশী হাসান ক্রুসু তাঁর সাথী বুট্রুসের সাথে কী এক ব্যাপারে আলাপ করছিলেন। ইতোমধ্যে ওরা সবাই সেখানে গিয়ে পৌঁছালে বুট্রুস এবং হাসান ক্রুসু তাঁদের সম্মানে দাঁড়িয়ে যান। কা‘ব বিন আমির এবং সা‘দ বিন সালামা এগিয়ে গিয়ে অত্যন্ত আগ্রহের সাথে তাদের সাথে মোসাফাহা করে সবাই নিজ নিজ আসনে বসে পড়লেন। সবাই বসে যাবার পর কা‘ব বিন আমির হাসান ক্রুসুকে লক্ষ করে বলেন:
– প্রিয় হাসান! তোমাকে দেখতে আমার ছেলে মুগীরার বয়সী লাগছে। তাই তুমি বলেই সম্বোদন করলাম, আশা করি এতে ক্ষুন্ন হবে না। তবে তোমার ব্যাপারে ইবনে যুবাইর আমাদেরকে যা শুনিয়েছেন তাতে অবশ্যই তুমি আমাদের কাছে সম্মানীয়। গ্রানাডা থেকে তোমার মা ও বোন তোমার কাছ থেকে হারিয়ে যাওয়ার কথা শুনে আমরাও দীলে সদমা অনুভব করছি। আমরা আরো সদমা অনুভব করছি এ জন্যে যে, তোমার দাদা তোমার মা বোনকে খুঁজে বের করার আগ পর্যন্ত সাক্ষাত করতে অস্বীকার করেছেন।

– তবে তোমার জীবনের তৃতীয় ব্যাপারটি জেনে আমরা আনন্দিত যে, গ্রানাডার পতনের পর তুমি তোমার দাদার কাছে অবস্থান না করে জাতির সমস্যার বিষয়টিকে জীবনের মূল মাকসাদ বানিয়ে নিয়েছ। তুমি অকর্মার জীবন পরিত্যাগ করে খাইরুদ্দীন বারবারুসার সঙ্গী হয়ে জাতির জন্য নিজের জীবনটাকে উৎসর্গ করে দিয়েছ।

– খায়রুদ্দীন বারবারুসার নাম আমরা শুনেছি। তবে তাঁর কাজের বিস্তারিত কিছু জানি না। তাঁর উদ্দেশ্য সম্পর্কেও আমরা পুরোপুরি অবহিত নই। তুমি আমাদেরকে তাঁর কাজের ধরন এবং এর পিছনে তাঁর উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত কর। আমরা জানতে চাই তিনি সাগরে কোন বিপ্লব আনতে চান। তোমার থেকে বিস্তারিত জানলে কেবল আমরা নই এখানকার হতাশায় নিমজ্জমান মুসলিম জনতা অন্তরে অন্তরে না হয় কিছুটা প্রশান্তি খুঁজে পাবে। তারা ভাববে স্থলে না হলেও জলে অন্তত আমাদের একটা জাতীয় শক্তি শত্রুর মোকাবেলায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।

– কা‘ব বিন আমির খানিকটা বিরতী নিয়ে তাঁর কথার ধারা অব্যাহত রেখে বলতে লাগলেন: অতীতে একটা মুসলিম নৌশক্তি হিস্পানীয় দেশত্যাগী মুসলমানদের সহায়তা করে গেছে। তার নাম ছিল আমীর বাহরে কামাল। তিনি উসমানীয় সুলতান বায়েজিদ ইলদারামের নির্দেশে নির্যাতীত মুসলমানদের উদ্ধার করে নিয়ে যেতেন এবং আফ্রিকায় তাদের পুনর্বাসিত করতেন। বাবা হাসান! তুমি যেহেতু তেমনি এক এডমিরাল আমীর খাইরুদ্দীন বারবারুসার অধীনে কাজ করছো তাই আমরা তাঁর ব্যাপারে তোমার কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে উদগ্রীব। আশা করি তুমি আমাদেরকে এ ব্যাপারে নিরাশ করবে না। চলবে…

আরও পড়ুন : সমুদ্র ঈগল : ১ (খ)

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...