সাইমুম সাদী :
আপনি একজন আলেমে দ্বীন। নায়েবে নবী। মসজিদের ইমাম। মাদ্রাসার সম্মানিত শিক্ষক। মানুষ আপনার পেছনে নামাজ পড়ে। তালিবে ইলমরা আপনার কাছ থেকে দ্বীন শিখে। আপনি একজন ওয়ায়েজ। সারা বছর দ্বীনের পবিত্র বাণী মানুষের কাছে পৌছিয়ে দেন। আপনার বক্তব্য শুনে মানুষ হেদায়েত প্রাপ্ত হয়। আপনি একজন পীরে কামেল। তরীকতের লাইনে মেহনত করে থাকেন। আপনার অসংখ্য মুরীদান রয়েছে সারাদেশ জুড়ে।
আপনি একজন ইসলামী স্যাটেলাইট ব্যাক্তিত্ব। আপনি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দ্বীনের পবিত্র বাণী প্রচার করে থাকেন। মানুষ আপনার বক্তব্য শুনে প্রাণভরে। আপনার জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা, চমৎকার উপস্থাপনা, নির্ভুল উচ্চারণ দর্শক শ্রোতাদেরকে চুম্বকের মত আকর্ষণ করে থাকে। আপনি একজন লেখক। অজস্র ইসলামী বই পুস্তক আপনি লিখেছেন ও লিখছেন। আপনার ক্ষুরধার লিখনি মানুষকে মোহাবিষ্ট করে। উজ্জীবিত করে। ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরে। ইসলামের যৌক্তিকতা প্রমাণ করে। ইসলাম যে একটি স্বভাবজাত ধর্ম, আল্লাহর মনোনীত ধর্ম তা আপনার লেখায় ফুটে উঠে সুন্দরভাবে।
আপনি একজন শিল্পী। ইসলামী গান গেয়ে মানুষকে সুস্থ ও সুন্দরের দিকে আকৃষ্ট করেন। হামদ ও নাত গেয়ে ইশকে হাকীকির দিকে মানুষের মনকে ধাবিত করেন। আপনি একজন দায়ী ইলাল্লাহ। আল্লাহর পথে মানুষকে দাওয়াত দেন। দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে ঘুরে বেড়ান দেশ থেকে দেশান্তরে। আপনার দাওয়াতের কারণে হেদায়েতপ্রাপ্ত হয় অজস্র মানুষ।
আপনাদের সকলকে বলছি আপনাদের কাজগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উম্মাহর জন্য খুবই প্রয়োজনীয় সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন। অর্পিত দ্বীনি দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছ্রন। সামাজিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
আপনাদের আশেপাশে কিছু লোকজন ইসলামী রাজনীতি করে থাকেন। ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পর্যায়ে বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এজন্য তারা অনেক ত্যাগও স্বীকার করে যাচ্ছেন। জেল-জুলুম, কারাগার, শারিরীক ও আর্থিক ক্ষতি তারা হাসিমুখে বরণ করে যাচ্ছেন। এই লোকগুলোকে, এদের তৎপরতাকে আপনার সমর্থন জানানো দরকার। সহযোগিতা করা দরকার।
আপনি আপনার কাজেই ব্যস্ত থাকুন। কিন্তু ওদেরকে সমর্থন করুন। সমর্থন করার কথা আপনার বন্ধুকে, কলিগকে, পরিবারের সদস্যদেরকে বলুন। কেন এই কাজ করবেন? করবেন এজন্য যে সমাজ ও রাস্ট্রে ইসলামকে সকল আদইয়ানে বাতিলার বিজয়ী করার এই কাজটা নবী রাসুলদের আ.’র কাজ। যারা ইসলামী রাজনীতি করেন তারা কেউই ফেরেশতা নন। আমাদের মতই মানুষ। তাদের ভুলত্রুটি হতে পারে। এরা কেউ কেউ লোভের দাড়াশ হয়ে, অর্থ, বিত্ত, খ্যাতি ও প্রতিপত্তির মোহে শয়তানের কাছে নিজেদের আত্মাকে বিক্রিয় করে দিতে পারে। কিন্তু সেজন্য। ইসলামী রাজনীতির প্রতি সামান্যতম বিদ্বেষ কিংবা বিদ্রুপ মনে মনে পোষণ করাও গোনাহর কাজ।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দ্বীন কায়েম না থাকলে অন্যান্য ইসলামী খেদমতও বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়। এমনকি আপনি যে কাজটি করছেন তাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই আসুন সবাই সকলের খেদমতকে স্বীকৃতি দেই। এবং দ্বীনকে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠার এ মহতি প্রচেষ্টাকে সমর্থন, সহযোগিতা ও একাত্মতা পোষণ করি।
লেখক : কথাসাহিত্যিক