বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ৯:২৯
Home / দারস / দোয়া কেন কবুল হয় না?

দোয়া কেন কবুল হয় না?

মাওলানা আবুল হুসাইন আলেগাজী :
প্রথমে বলে রাখা উচিত যে, আল্লাহর কাছে কারো দোয়া কবূল হওয়ার জন্য লোকটি মুমিন হতে হবে- এমন কোনো শর্ত নেই। কুরআন শরীফের একাধিক জায়গায় দেখা যায়, আল্লাহ ইবলীস ও কাফিরের দোয়া কবূল করেছেন তথা তাদের প্রার্থিত কামনা, বাসনা ও চাহিদা পূরণ করেছেন।

কাফির, মুনাফিক, ফাসিক ও খারেজীসহ সকল প্রকারের মানুষের সব দোয়া যেমন আল্লাহ কবূল করেন না, তেমনি খাঁটি মুমিনদেরও। তবে তিক্ত হলেও সত্য হচ্ছে, দুনিয়ার ভোগ-দখল ও সুখবিলাস সম্পর্কিত মুমিনের দোয়াগুলো আল্লাহ খুব কমই কবূল করেন। কারণ, আল্লাহর একটি অলঙ্ঘনীয় সিদ্ধান্ত হলো, যারা দুনিয়াতে যত বেশি সুখবিলাস করবে, আখেরাতে তারা ততবেশি বঞ্চিত হবে। আল্লাহ যেহেতু মুমিনদেরকে আখেরাতের সুখ-সম্মান থেকে বঞ্চিত করতে চান না, তাই তিনি তাদেরকে দুনিয়ার সুখ-সম্মানে ডুবিয়ে রাখতে চান না।

কাফিরদের দোয়া কবূল করে দুনিয়াটাকে দুঃখ-কষ্ট মুক্ত করা যেমন আল্লাহর জন্য কঠিন নয়, তেমনি মুমিনদের দোয়া কবূল করে সারা দুনিয়ায় ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়াও আল্লাহর জন্য কঠিন নয়। কিন্তু আল্লাহ চান উভয় দলকে দৌড়ের মধ্যে রাখতে। কেউ সুখবিলাসের জাহান্নামমুখী দৌড়ে জীবন শেষ করবে এবং আর কেউ সত্য ও সততার জান্নাতমুখী দৌড়ে জীন শেষ করবে।

আপনি মুমিন। আপনি নির্লোভ ও নিরীহ। আপনার যোগ্যতা ও সততা প্রশ্নাতীত। তাই বলে আল্লাহ আপনার সব দোয়া কবূল তথা আপনার সত্য ও সুন্দর কামনা, বাসনা ও চাহিদাগুলোর সবটিই আপনি চাহিবামাত্র পূরণ করে দিবেন- এমন কোনো গ্যারান্টি আল্লাহ কাউকে দেননি। আপনার কৃত দোয়া কবূল না হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমনঃ
০১. আপনার দোয়া তথা প্রার্থিত বিষয়টির জন্য আপনি অনুপযুক্ত।
০২. অথবা আপনার প্রার্থিত বিষয়টি বা তার কোনো উত্তম বিকল্প আপনার লাভ করার বয়স/সময় আপনার এখনো হয়নি।
০৩. অথবা আপনার প্রার্থিত বিষয়টি বা তার উত্তম বিকল্প আপনাকে দেওয়া হবে শুধুমাত্র আখেরাতে।

মনে রাখবেন, আপনি মুমিনের দোয়া কবূলে তথা আপনার ভালো/সুন্দর কামনা, বাসনা ও চাহিদাগুলো পূরণে আল্লাহ মোটেই অক্ষম নন এবং কৃপনও নন। আপনি প্রকৃত মুমিন বা দীনদার হলে আপনাকে আল্লাহর নিয়মের سنة الله প্রতি খেয়াল রেখে পথ চলতে হবে এবং আপনার দৃষ্টিতে ইতিবাচক/নেতিবাচক তাঁর সকল সিদ্ধান্তের প্রতি আপনাকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তবেই আপনি প্রশান্ত হ্রদয়ের মুমিন হতে পারবেন। এরকম হলে নির্দ্দিষ্ট সময়ে মৃত্যুর ফেরেশতারা আপনাকে দুনিয়া নামক এ কারাগার থেকে সসম্মানে মুক্ত করে আল্লাহর কাছে নিয়ে যাবে। মৃত্যুর সময় তিনি (আল্লাহ) আপনাকে ডাক দিয়ে বলবেন, يا أيتها النفس المطمئنة ارجعي إلى ربك راضية مرضية فادخلي في عبادي وادخلي جنتي. “হে প্রশান্ত মন/হ্রদয়! তুমি সন্তুষ্ট ও সন্তোষপ্রাপ্ত হয়ে তোমার প্রভুর কাছে ফিরে এসো। অতঃপর আমার (অনুগত) বান্দাদের কাতারে প্রবেশ করো এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ করো।” [সূরা আলফজরঃ ২৭-৩০]।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর প্রতি স্তুনষ্ট থাকার তৌফীক দান করুন।

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

ইসলামের উত্তরাধিকার আইন : একটি বিভ্রান্তির নিরসন

মুহাম্মদ আফসার মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়ার সম্পদের কুরআনিক বণ্টনরীতিকে শরয়ী পরিভাষায়- “ফারায়েয” বলে। “ফারায়েজ” বান্দার ...