বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সন্ধ্যা ৭:৫৬
Home / খোলা জানালা / কেমন হবেন বেফাকের মহাসচিব

কেমন হবেন বেফাকের মহাসচিব

আমিন মুনশি :

সদ্যপ্রয়াত মাওলানা আব্দুল জব্বার সাহেব দীর্ঘদিন যাবত বেফাকের মহাসচিব ছিলেন। অবহেলিত, জরাজীর্ণ একটি শিক্ষাবোর্ডকে মায়া-মমতায় আগলে রেখেছিলেন তিনি। নানা ঝড়-ঝাপ্টায় তিনিই ছিলেন বেফাকের একমাত্র অভিভাবক। খেয়ে-না খেয়ে শত প্রতিকূলতায় বেফাককে পরিচালিত করেছেন উন্নতির দিকে। মাসিক নতুন ডাক-এর এক সাক্ষাতকারে তিনি জানিয়েছিলেন বেফাককে আঁকড়ে থাকার রহস্য। মরহুম সদর সাহেব হুজুর (রহ.) একবার স্বপ্নে তাঁকে আদেশ করেছিলেন বেফাকের দায়িত্ব কাঁধে তুলে রাখতে। কোন অবস্থাতেই যেন বেফাককে ছেড়ে তিনি না যান সে কথাটিও বলেছিলেন। মাওলানা আব্দুল জব্বার (রহ.) শুধু এই কারণেই জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত বেফাকের সাথে থেকেছেন। বেফাককে জড়িয়ে থেকেছেন বিনম্র ভালোবাসায়। কতজন তাকে কটু কথা বলেছে, তুচ্ছ করেছে, সমালোচনা করেছে, সরে দাঁড়াতে বলেছে তাদের পথ থেকে; কিন্তু তিনি হাসিমুখে সবার সাথে মিশেছেন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটানোর চেষ্টা করেছেন। নিন্দুকরা তাকে সহ্য করতে পারেনি; বিভিন্নভাবে তাকে বেফাক থেকে সরিয়ে তাদের স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি দুষ্টদের চক্রান্তে সায় দেননি।

তার ইন্তেকালের পর আমরা দেখেছি বেফাকের কার্যালয় কীভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। একটি শিক্ষাবোর্ডের অফিসের গেইটে তালা ঝুলানো। স্বার্থবাজ গোষ্ঠী এখনো চাচ্ছেনা কেউ তাদের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াক। তাই নতুন মহাসচিব নির্বাচনেও শুরু হয়েছে নানা হিসাব-কিতাব। কাকে রেখে কাকে মহাসচিবের পদে বসানো হবে-এই নিয়ে চলছে দলাদলি। মতের অমিল কেউ যাতে বেফাকে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারেও চলছে প্রতারণামূলক কারসাজি।

মাওলানা আব্দুল জব্বার (রহ.) যতদিন বেফাকের মহাসচিব ছিলেন তিনি চেষ্টা করেছেন কোনভাবেই যাতে শিক্ষাবোর্ডটিতে রাজনীতির লোকজন ঢুকতে না পারে। তিনি কতটুকু সফল বা অসফল হয়েছেন সেটা পেছনের কথা। আমরা এখন সামনের দিকে এগুতে চাই। নতুন দিনের সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখতে চাই। কওমি সিলেবাসের সংস্কার এবং যুগোপযোগিকরণের দীর্ঘদিনের দাবিকে সামনে নিয়ে আসতে চাই। নানা কারণে যারা নতুন প্রজন্মকে সেকেলে রীতিতে আটকে ধরে রাখতে চান তাদের অপসারণ চাই। সময়ের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে মানসম্মত সিলেবাস গঠনে যিনি এগিয়ে আসবেন-বেফাকের নতুন মহাসচিব হিসেবে আমরা তাকেই দেখতে চাই। নিন্দুক আর দলান্ধ লোকদের যিনি দমিয়ে রাখতে পারবেন-স্বপ্নবান হাজার হাজার শিক্ষার্থী তাকেই স্বাগত জানাবে।

সদ্যপাওয়া খবরে জানা গেছে, ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবদুল কুদ্দুস সাহেব বেফাকের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, তিনি আমাদের তথা কওমির চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবেন !!

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...