এহসান বিন মুজাহির: শ্রীমঙ্গল ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণির মেধাবি ছাত্র ইসমাইল হোসাইন দুরারোগ্যে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে অক্ষম হয়ে পড়েছে তার পরিবার। ইসমাইলকে বাঁচাতে দশ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হবে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
ইসমাইলের পিতা ইয়াকুব মিয়া তার পরিবারে তিন বেলা খাবারসহ অন্যান্য খরচাদি চালাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। অর্থসম্পদহীন পরিবারের প্রধান কর্তা বাবা ইয়াকুবের পক্ষে ইসমাইলের প্রচুর ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না বিধায় তিনি ছেলেকে বাঁচাতে বিত্তবানদের সাহায্যে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে গত কয়েকদিন আগে ভিক্টোরিয়া স্কুলের শিক্ষক মনসুর ইকবাল স্যার তার ফেসবুকে মেধাবী ছাত্র ইসমাঈলকে বাঁচাতে সামর্থ্যবানদের প্রতি সহযোগিতা হাত প্রসারিত করার আহবান জানালে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী, শাহজালাল লতিফিয়া সমাজকল্যাণ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা সেলিম আহমদ অসহায় পরিবারের মেধাবী ইসমাইলের সাহায্যে এগিয়ে আসেন।
রোগাক্রান্ত ছাত্র ইসমাইলের উন্নতমানের সুচিকিৎসা করার নিমিত্তে সোমবার (১৪ নভেম্বর) রাত ৮টায়, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে হজরত শাহজালাল লতিফিয়িা সমাজকল্যাণ ফাউন্ডেশনের ব্যানারে আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। সাংবাদিক সৈয়দ ছায়েদ আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন- শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি এম ইদ্রিস আলী, দৈনিক আমাদের সময়ের আবু হানিফ, শ্রীমঙ্গল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি নোমান আহমদ সিদ্দিকি, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য কাউসার ইকবাল, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সহসম্পাদক মামুন আহম্মেদ, ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মনসুর ইকবাল, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সৈয়দ ছয়েদ আহমদ, বাংলাট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, শাহজালাল লতিফিয়া সমাজকল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন জসিম, দৈনিক দিনকালের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি মো: রুবেল আহমদ, সাংবাদিক আবুজার বাবলা, সাংবাদিক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট এহসান বিন মুজাহির। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ, আব্দুর শুকুর, মোঃ আলম, সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।
কে সেই ইসমাইল! ইসমাইল হোসেন ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তার ক্লাস রোল নং -বিজ্ঞান ০২। ইসমাইল হোসেন এবং ইসরাইল হোসেনা সহোদর। দু’জনেই মেধাবী ছাত্র। তারা ৫ম এবং ৮ম উভয় শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়েছে। তারা ২০১৭ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। তাদের বাবা মোঃ ইয়াকুব আলী একজন বাবুর্চি। ভিক্টোরিরয়া স্কুলের শিক্ষকসহ শির্ক্ষাথীদের প্রত্যাশা তারা এতো মেধাবী আশা করা যায় আগামী এএসসি পরীক্ষায়ও এ-প্লাস পাবে।
রাজধানীর গ্রীনলাইফ হাসপাতালের ডাক্তার, বিখ্যাত অর্থোপেডিক্স অধ্যাপক আর আর কৈরির তত্ত্বাবধানে ঈসমাইলের প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলেছেন ইসমাইলের হার্ট এবং মেরদন্ডে দুটি অপারেশন করতে হবে। তার বাম চোখেও প্রচুর সমস্যা ধরা পড়েছে। খ্যাতিমান অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কৈরি ইসমাইলের চিকিৎসার ব্যাপারে বলেন-বাংলাদেশে এই অপারেশন সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সাকসেসফুল অপারেশন করতে হলে তাকে চেন্নাই নিয়ে যেতে হবে। ১০ লাখের মতো খরচ হবে। আপাত ৩ মাসের ওষুধ দিয়েছেন তিনি। ভিক্টোরিয়া স্কুলের শিক্ষক মনসুর ইকবাল জানান ডাঃ শাহ আলম একমাত্র বাংলাদেশি ডাক্তার যিনি এই অপারেশন করতে পারেন। কিন্তু অপারেশনে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা পঞ্চাশ শতাংশ। তাই আমরা আপাততঃ অপারেশন করাবো কি না এই নিয়ে দ্বিধাদ্বন্ধে আছি। এছাড়া অপারেশন করাতে প্রচুর অর্থেও প্রচুর। যেখানে ১০ লক্ষ টাকার দরকার সেখানে মাত্র ২ লক্ষ ২১ হাজার টাকা জমা হয়েছে। আরো ৮ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে ভারতে যেতে হবে। ছেলেটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানসহ সকল শ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন পিতা ইয়াকুব মিয়া। ইসমাইলকে সাাহায্য পাঠানোর ঠিকানা, ভিক্টোরিয়া স্কুলের শিক্ষক, মোঃ মনসুর ইকবাল, অ্যাকাউন্ট নং, টি-১৬৬০, জনতা ব্যাংক, শ্রীমঙ্গল শাখা। বিকাশ নাম্বার ০১৭১১-৩১৭২১৬।