মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ১১:২৫
Home / দেশ-বিদেশ / বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে বক্তারা যা বললেন…

বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে বক্তারা যা বললেন…

সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ : ভারতের রাজস্থান আজমির বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের মূল আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন ধর্ম ও মুসলমানদের নানা মসলকের পীরদের একমঞ্চে দাঁড়িয়ে ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের মধ্য দিয়ে বিশ্ব শান্তির আহ্বান।

খাজা সৈয়দ আরিফ হোসাইন চিশতি
আজমির শরীফের গদিনিশীন পীর খাজা সৈয়দ আরিফ হোসাইন চিশতি বাবা আজমির তার বক্তৃতায় বলেন, আজ আমরা গর্বিত ও আনন্দিত। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ঐতিহাসিক দিন। সর্বভারতীয় আলেমরা আজ মুসলিম হিসেবে ঐক্যবদ্ধ। কোনো মসলক-মাযহাবের দুরত্ব মুসলমানদের বিছিন্ন করে রাখতে পারে না। মুসলিম ভাই ভাই। একের জন্য অপরের জীবন উৎসর্গ করতে হবে। আজকের ঐক্যের বন্ধনকে মসলকি দৃষ্টিতে না দেখে, মুসলিম দৃষ্টিতে দেখতে হবে। দেওবন্দের আলেমরা আজমিরে এসে আজ যে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন, সেই ইতিহাসকে আমাদের ধরে রাখা উচিত। তা পৃথিবীর জন্য মডেল হোক। এই ঐক্য ভারতের ইসলামের বিজয় পতাকা উড়াবে একদিন। এভাবেই খাজার আদর্শ ও মিশন ছড়িয়ে পড়বে ভারতজুড়ে। আমরা ভাই ভাই হয়ে এদেশে শান্তির মিশন ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা আপনাদের যর্থাথ খেদমত করতে পারি নাই, এজন্য ক্ষমা প্রার্থী। গোস্তাাখি সব খাজা বাবার দিকে চেয়ে ক্ষমা করে দিবেন। আমি কথা দিলাম যতোদিন বেচে থাকি জমিয়তে উলামা হিন্দের সাথে কাজ করব। জমিয়তের ছায়া তলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাব।

203বেরলভী প্রধান তাওকীর রেজা খা
তিনি তার বক্তৃতায় যা বলেন তার সারাংশ হলো , প্রথমেই আমি আমার অন্তর থেকে ভাই মাহমূদ মাদানীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি এরকম একটা সাহসী উদ্যোগ নেয়ার জন্য। আমরা তো কেউই মুহাম্মদ সা. এর দুশমন না। তাহলে আমাদের মাঝে দূরত্ব কোথায়? আমায় তো এখানে আসতে অনেকেই বাধা দিয়েছিলো। বলছিলো এখানে কেনো যাবেন? এরা দেওবন্দি। কিন্তু আমি বললাম, আমি তো দেওবন্দ যাচ্ছি না। যাচ্ছি জমিয়তের মিটিংয়ে। যারা একাত্বতার কথা বলছে। আমি তাদের সাথে একমত না হয়ে থাকতে পারি না। এর চেয়ে উত্তম কোন কথা আর হতে পারে না। মুসলিম হিসেবে আমরা এক। জমিয়ততো মিল্লাতের ঐক্যের কথা বলছে। এখানে তো আমার যেতেই হবে। আমি ঘরে বসে থাকতে পারবো না। আমি আরো বলছি, তিন তালাকের ব্যাপারে সরকারীভাবে যা হচ্ছে তা মুসলমান কখনো সহ্য করবে না। আমি মোদীকে বলছি! আমাদের তালাকের মামলার পারসেন্ট তো ৫% ও হবে না। বিপরীতে তোমাদের তো…??
তাই সাবধান! আইন করলে তোমাদের জন্যই করো। আমাদের জড়ানোর কি আছে? আমাদের বোনেরা আযাদ ছিলো, আছে, আর থাকবে। আমি আরো বলছি! মুসলমান ধর্মীয় ব্যাপারে কোনো আঘাত সহ্য করবে না কখনো। আমরা মুহুর্তে এক হয়ে যেতে পারি। আজ তার প্রমাণ দিলাম। মুসলমানরা সন্ত্রাসী ছিলো না, আর এখনও না। অযথা চিল্লাচিল্লি করে লাভ নেই। মুসলিম তরুণদের সন্ত্রাসী বলে আর হয়রানী বন্ধ করুণ। আল্লাহ না করুন যদি (তরুণ মুসলিমরা অসহ্য হয়ে) সন্ত্রাসী হয়ে যায়….! তাইলে এ তুফান কেউ সামাল দিতে পারবে না! দেওবন্দ সম্পর্কে আমারও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছিলো। তা সত্তেও আমি তা পরীক্ষার করার জন্য দেওবন্দ গিয়েছিলাম। কিন্তু দেওবন্দ গিয়ে আমি এমন সংবর্ধনা ও সম্মান পেয়েছি যার জন্যই আজ আমার এখানে আসা। আমি মুগ্ধ, বিমুগ্ধ জমিয়তের কাজে। তাই আপনাদেরকেও বেরলবী যাওয়ার দাওয়াত দিচ্ছি। আসুন! দেখুন বেরলভীরা আপনাদের কতোটা সম্মান দেয়।

202হিন্দু ধর্মীয় গুরু চখস্পতি পণ্ডিত
উলামায়ে হিন্দ ব্যতিত মিল্লাতের শান্তি ও ঐক্য সম্ভব নয়। তারা যুগ যুগ ধরে ঐশী শান্তির বাহক। আজ শান্তি সম্মেলন সব মুসলমানদের এক টেবিলে এনে পাশাপাশি স্বামী গুরু মহারাজ ঠাকুরসহ আমাদের এখানে নিমন্ত্রণ করে মাহমুদ মাদানী হিন্দে এক ইতিহাস রচনা করলেন। তার ডাকে কেউ সাড়া না দিয়ে কি পারে? মাহমূদ মাদানী হলেন ইনসানিয়্যাতের এক ফেরেশতা। ভগবানের এই শতাব্দির শ্রেষ্ঠ দান। তার চিন্তা-দর্শনকে যদি আমরা ফলো করি সকল ধর্মের মানুষের মাঝে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। আমি বিশ্বাস করি মাহমূদ সাহেব কুরআনের সার বুঝেছেন। মানুষকে জুড়তেই শিখেছেন। মানুষকে দূরে টেলে দেয়ার মাঝে কোন শান্তি নেই, কামিয়াবি নেই, সুখ নেই। যে সবাইকে বুকে টেনে আপন করতে পারে সেই সত্যিকারের মানুষ।

স্বামী গুরু মহারাজ ঠাকুর
ভারতের সনাতনি সর্বোচ্চ এই ধর্মীয় গুরু তার বক্তব্যে বলেন, জমিনে এটা একটা ইতিহাস। আপনারা মুসলমানরা এক হোন। এমন কোনো শক্তি নেই যে আপনাদের পৃথক করার। আপনাদের ভয়েরও কোনো প্রয়োজন নেই। এই একতা এমন একটা শক্তি, যা ভারতের আকৃতি পাল্টে দেবে। এবং সবার মাঝে ঐক্য সৃষ্টি করে সবাইকে একটা সুন্দর ভারত উপহার দেবে। তিনশত বছরের ইতিহাসে এই প্রথম আপনারা ভাই ভাই হয়ে ঐক্যের শীশাঢালা প্রাচীর হলেন। পৃথিবীর কোন দুশমনের ক্ষমতা নেই আপনাদের গায়ে টুনকো দেয়ার- যদি আপনারা এই ঐক্য ধরে রাখতে পারেন। এই শান্তির মিশনকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন।

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...