জন্মদিনে শুভেচ্ছা
কমাশিসা :: বাংলা সাহিত্যের খ্যতিমান ইতিহাসবিদ, পুরাতত্ব গবেষক, বহু কালজয়ী গবেষণাগ্রন্থের লেখক, শিকড় সন্ধানী সাহিত্যিক, তরফরত্ন সৈয়দ আবদুল্লাহর ৭৪তম জন্ম বার্ষিকী আজ।
হবিগন্জ জেলার বাহুবল উপজেলার নিভৃত পল্লী উত্তরসুর গ্রামে আজীবন বাসকরে এই কর্মবীর মানুষটি আলো ছড়িয়েছেন জাতীয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। ইতিহাস গবেষণায় পেয়েছেন জাতীয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহু স্বীকৃতি। পেয়েছেন এশিয়া প্রেস ফাউন্ডেশনের এশিয়ার সেরা একশ পণ্ডিত মনীষার স্বীকৃতি। বিএনএসআই বৃটেন আন্তর্জাতিক স্বর্ণ পদক। বিশ্বকোষ ও ওয়াল্ড পিডিয়াতে তার জীবনী স্থান করে নিয়েছে। লিখেছেন, গবেষণালব্দ ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ ও আন্তজীবনীমূলক বিশটি গ্রন্থ।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ’র গবেষণার বড় একটা দিক মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের স্থপতি মুসলিম কবি ও আরকান রাজসভা। মহাকবি সৈয়দ সুলতান, আরকানের প্রধানমন্ত্রী কবি সৈয়দ মুসা, মহাকবি কোরাইশ মাগন ঠাকুর, কবি শেখ চান্দ, মহাকবি আলাওয়াল, সিলেটের নাগরিলিপি, হযরত শাহজালাল বিষয়ক তার গবেষণা ইতিহাস গবেষকদের কাছে ব্যাপক সমাদৃত। অনাদর অবহেলায় আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত পল্লীর নিভৃত কোনের এক পাড়া গায়ে আজীবন পড়ে থাকা আমাদের এই মনীষা কেবল নিরলস সাধনার ধারা আজ আপন মহিমায় দেশ বিদেশে খ্যাত। আধুনিক বাংলা ইসলামি সাহিত্যের তিনি বাক নির্মাতা।
৭০-৯০ দশকের জনপ্রিয় কলাম লেখক। মাসিক মদীনার সূচনাকাল থেকে তিনি ঔতোপ্রতোভে জড়িত। তার লিখিত গবেষনা গ্রন্থ “রক্তস্নাত পলাশী” উভয় বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। এক সময় সরকারি চাকুরি করতেন। পেনশের সব টাকা দিয়ে সাহিত্য পাগল এই মানুষটি বেশ কয়েকটি গবেষনা গ্রন্থ প্রকাশ করে জাতীকে চির ঋনে আবদ্ধ করে রেখেছেন। আকাবিরে দেওবন্দের মনীষাদের নিয়ে বাংলা ভাষায় সবচেয়ে বেশি লেখালেখি করেছেন। বিগত চল্লিশ বছর ধরে ইসলামি পত্রিকাতে উলামায়ে দেওবন্দ নিয়ে লিখে আসছেন। তার লিখিত গ্রন্থ “আযাদী আন্দোলনে আলেম সমাজ, ভারত পাকিস্তান, ও ইউরোপ থেকে তিন ভাষায় অনুদিত হয়েছে। চার শতাধিক আলেমদের নিয়ে তিন খণ্ডে “মুসলিম মনীষা” গ্রন্থ লিখেছেন। সাহিত্যের পাশাপাশি তিনি একজন দক্ষ সাহিত্য সংগঠক। ঐতিহ্যবাহি তরফ সাহিত্য পরিষদের তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ঢাকা সিলেটের বহু সাহিত্য গবেষনা প্রতিষ্টানের সাথে জড়িত। একসময় বাংলা একাডেমির ফলো ছিলেন। কাজ করেছেন, বিশ্বকোষ, এশায়াটিক সোসাইটির বাংলাপিডিয়ার মতো অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে।
তার জীবন কর্ম নিয়ে কাজ করেছে সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান “তরফরত্ন ফাউন্ডেশন”। বাংলা সাহিত্যের এই ক্ষণজন্মা সাহিত্যিকের জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র, প্রবন্ধ নিবন্ধ প্রকাশিত হলেও, জন্মদিনের কোন আনুষ্টানিকতা নেই। অনন্যদিনের মকোই তিনি স্বাভাবিক কার্যক্রম লেখালেখি করে দিন পার করবেন। তবে সাড়া দিন ভক্ত শুভাকাঙ্ক্ষীদের আগমন উপলক্ষে তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলে, জানিয়েছেন,তরফরত্ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাংবাদিক সোহেল আহমদ কুটি। আমরা এই গুণী মনীষার দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করছি।