আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষিত মুসলিম ছাত্র সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়ার (সিমি) আট ছাত্রনেতা এনকাউন্টারে নিহত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় চলছে।
এ কারণে ওই ছাত্রনেতাদের জেল পালানো এবং এনকাউন্টারে নিহত হওয়ার পুরো ঘটনাকে ‘সাজানো’ বলেও অভিযোগ করছেন কেউ কেউ।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মৃতপ্রায় এক ছাত্র নেতার উপর বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ করছেন ভারতীয় কমান্ডোরা। যেখানে ছাত্র নেতাদের লাশগুলো পড়ে রয়েছে, সেখানে কোনও অস্ত্রশস্ত্র নেই। সাদা পোশাকে থাকা এক নিরাপত্তা কর্মী প্লাস্টিকে মোড়া একটি নতুন ছুরি নিহত এক ছাত্রনেতার প্যান্টের পকেট থেকে বের করেন।
অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, নিহত হওয়ার আগে ছাত্রনেতারা আত্মসমর্পণ করতে চাওয়ার কথা বলছেন। কিন্তু এরপরও তাদের গুলি করে মেরে ফেলা হয়।
এদিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর বরাতে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছিল, রোববার রাত ২টার দিকে ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভোপাল হাইসিকিউরিট জেলের নিরাপত্তারক্ষীকে গলাকেটে পালিয়েছিলেন সিমির আট ছাত্র নেতা।
তারা হলেন মেহবুব গুড্ডু ওরফে মল্লিক, মোহাম্মদ খালিদ আহমাদ, আমজাদ খান, মুজিব শেখ, মোহাম্মদ আকিল খিলজি, জাকির হোসেন সাদিক, মোহাম্মদ সালিক সাল্লু এবং আবদুল মজিদ।
জেল থেকে পালানোর আট ঘণ্টা পর সোমবার সকালে ভোপাল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে এন্তেখেড়ি গ্রামের কাছে পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম গ্রুপের (সিটিজি) এনকাউন্টারে তারা মারা যান।
অভিযানে অংশ নেয়া আইজি যোগেশ চৌধুরী জানান, গানডা পুলিশ ফাঁড়ির নিকটবর্তী মানিখেদা এলাকায় তাদেরকে স্থানীয়রা ডাকাত ভেবে পুলিশে খবর দেয়। এ সময় পলাতক বন্দিরা স্থানীয়দের লক্ষ্য করে ইট-পাথরও ছুড়ে মারে।
পরে পুলিশ গিয়ে তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানালে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে বন্দিরা নিহত হয়। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছে বলে জানান জোগেশ চৌধুরী।
নিহতরা সশস্ত্র ছিল বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করলেও মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ বলেছেন অন্যকথা। তিনি জানান, নিহতদের হাতে জেলের চামচে দিয়ে তৈরি ছুরি ছিল।
ভূপেন্দ্রের এই বক্তব্যের পর প্রশ্ন ওঠে ছুরি দিয়ে কিভাবে গুলি করা সম্ভব? আর চামচ-ছুরি হাতে থাকা আট জনকে আটক না করে গুলি করে মেরে ফেলতে হবে কেন?
আট ছাত্রনেতাকে জঙ্গি অভিহিত করে সংবাদ প্রচার নিয়েও প্রশ্ন করেন ভারতের প্রগতিশীল রাজনীতিকরা। নিখিল ভারত প্রগতিশীল নারী সংঘ-এআইপিডব্লিউএ’র সভাপতি কবিতা কৃষ্ণা বলেন, ভোপালে নিহত আটজন বিচারাধীন ছিলেন। কোনও আদালতে তারা দণ্ডিত ছিলেন না। সুতরাং তাদের সন্ত্রাসী বলা বন্ধ করুন।
এদিকে বিরোধী দলের নেতারা এনকাউন্টারের ঘটনাকে ভুয়া বলে অভিযোগ করেছেন। কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ, কমল নাথ, এআইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন।