আল্লাহ আকবর ধ্বনিতে বুকে-মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা আর মুখে শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারে নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে মুসলিম ডে প্যারেড পালিত হয়েছে। রোববার মুসলিম ডে প্যারেডের এ ৩১তম আয়োজন ছিল অন্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রম আর বেশ জনবহুল।
ম্যানহাটানের ম্যাডিসন এভিনিউর এ আয়োজনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খিজির খান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী রাজনীতিতে ডেমোক্রাট দলের বিতর্ক মঞ্চে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আক্রমণ করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। ম্যানহাটানের এ সমাবেশে ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদ বন্ধে সবাইকে শপথ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খিজির খান। সেইসঙ্গে সমাজে ইসলামের নামে যেসব বিভ্রান্তি আছে সেগুলো দূর করার জন্য মুসলিমদের অন্য ধর্মের মানুষদের সঙ্গে মেশা আর তাদের ধর্মীয় সমাবেশে বেশি বেশি যোগদানের অনুরোধ জানিয়েছেন।
নিউইয়র্কের প্রাণকেন্দ্র ম্যানহাটানের ম্যাডিসন এভিনিউয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) এর নামের গজল মুস্তাফার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ অনুষ্ঠান। আরবি ভাষায় মাইকে এমন গজল শুনে থমকে দাঁড়ান অনেকেই। কুরআন তেলাওয়াত দৃষ্টি আকর্ষণ করে নানা ধর্ম-বর্ণের নিউইয়র্কবাসীর। অনেকেই সেখানে যান এবং অংশগ্রহণ করেন। মুসলিম ফাউন্ডেশন অব আমেরিকার এ উদ্যোগে সাড়া দিতে নিউইয়র্কের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায় নানা ব্যানার আর ফেস্টুন নিয়ে হাজির হতে থাকেন সেখানে।
ম্যাডিসন এভিনিউর এ মুসলিম ডে প্যারেডের মূল আকর্ষণ ছিল সম্প্রতি আলোচনায় আসা শহীদ ক্যাপ্টেন হুমায়ুন খানের বাবা খিজির খান। বর্তমানে মুসলিম বিদ্বেষ বন্ধে সামাজিক একাত্মতা আর অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মিলনমেলায় বেশি বেশি মুসলিমদের অংশগ্রহণকেই বড় হাতিয়ার বলে উল্লেখ করেন খিজির খান। এ সময় তিনি ধর্মের নামে, ইসলামের নামে যেন আর কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড না হয় সে জন্য উপস্থিত হাজারো মুসলিমকে শপথ নিতে বলেন।
খিজির খান বলেন, বর্তমান সময়ে মুসলিম আর ইসলাম নিয়ে যত অপপ্রচার হচ্ছে সেগুলোর সঠিক জবাব দেওয়ার জন্য আপনারা প্রতিজ্ঞা করেন। আজ থেকে আপনারা সবাই একেকজন যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মগত সৌহার্দ্যের দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আপনারা অন্য ধর্মের মানুষদের সঙ্গে মিশবেন, তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাবেন, নিজের ভাবনা শেয়ার করবেন সবার সঙ্গে।
মুসলিম ডে প্যারেডের অনুষ্ঠানে সিটি কাউন্সিল স্পিকার মেলিসা মার্ক বিভেরিটোসহ অন্যান্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি মুসলিম বিদ্বেষ আর হেইট ক্রাইমের নানা ঘটনার মধ্যে এ আয়োজন নিয়ে শঙ্কা থাকলেও কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই শেষ হয়েছে মুসলিমদের এ সম্মেলন। এ সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে একজন প্ল্যাকার্ড বহনকারী দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি।
সূত্র : ভোরের কাগজ