ধর্ম ও মানবতা পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তবে মানব ধর্মই যে সবার ওপরে সে কথাই আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিলেন ভারতের থানের মুম্ব্রা এলাকার একদল মুসলিম তরুণ।
মুম্ব্রার ওমান কদম (৬৫)। পেশায় নিরাপত্তা প্রহরী। গত রোববার রাতে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেয়ার জন্য তার দুই ছেলে ও স্বজনদেরকে ডাকেন স্ত্রী ভিতভা। কিন্তু তাদের কাছে থেকে কোনো সহায়তা পাননি তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে তার। পরে কয়েকজন মুসলিম তরুণ এগিয়ে আসেন। এগিয়ে দেন সহায়তার হাত। তাদের সহায়তায় ওমান কদমকে নেয়া হয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
পরে থানের বদলাপুর ও পাশের আরেকটি শহরে থাকা দুই সন্তানকে বাবার মৃত্যুর খবর দেয়া হয়। কিন্তু তারা রাতে আসতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। রাত গভীর হওয়ায় তার দুই সন্তান ও স্বজনরা মরদেহ পোড়ানোর ডাকে সাড়া দেয়নি।
পরে প্রতিবেশি মুসলিম তরুণ খলিল পাউনে, ফাহাদ দবির, নওয়াজ দবিরসহ আরো কয়েকজনের কাছে সহায়তা চান ওমান কদমের স্ত্রী। ওই মুসলিম তরুণদের সহায়তায় রাত ৩ টার দিকে মরদেহ পোড়ানো হয়। শুধু তাই নয়, অন্তেষ্টিক্রিয়ার পর চিকিৎসকের কাছে থেকে মৃত্যু সনদ এনে দেন এই মুসলিম তরুণরা।
স্ত্রী ভিতভা বলেন, ‘আমার স্বামী কখনো কল্পনা করেননি যে, তার শেষ যাত্রার এত সম্মানের সঙ্গে হবে। তার শেষকৃত্যে অন্তত ৪০ মুসিলম তরুণ অংশ নিয়েছিল’। শেষকৃত্যে অংশ নেয়া এক মুসলিম তরুণ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমি কদম চাচাকে চিনতাম। সব সময় আমরা তাদের বাড়িতে যেতাম, চাচী অনেক সময় আমাদেরকে নাস্তা ও মিষ্টি খেতে দিতেন। ধর্ম কখনই প্রতিতবন্ধকতা তৈরি করেনি’।
পরদিন সকালে কদমের দুই সন্তান ও স্বজনরা বাড়িতে আসেন। কিন্তু তার আগেই মুসলিম তরুণদের সহায়তায় শেষ হয়েছে কদমের মরদেহ পোড়ানোর কাজ। এ ছাড়া ওই বিধবার ভরণ-পোষণের দায়িত্বও নিয়েছেন মুম্ব্রার মুসলিম তরুণরা।
সৌজন্যে : জাগো নিউজ