শাইখুল হাদীস কাজি মুহাম্মাদ হানীফ:
যারা বলেন কওমি মাদরাসায় সংস্কার হচ্ছে না তাদের কথা কি ঠিক? আমি তো দেখছি কওমি মাদরাসায় প্রতিনিয়ত সংস্কার হচ্ছে। শুধু একটি ক্ষেত্র ছাড়া আর সব ক্ষেত্রেই সংস্কারের ধারা চলমান। দেখুন, টিনের ঘর সংস্কার হয়ে বিল্ডিং হচ্ছে।অফিসে ও শিক্ষকদের কামরায় গদি-ডেস্কের পরিবর্তে চেয়ার টেবিল শোভা পাচ্ছে। সনাতনি টালি খাতার পরিবর্তে কমপিউটারে হিসাব সংরক্ষন করা হচ্ছে। লো-কমোডের জায়গায় হাই কমোড বসছে। শিক্ষকদের জন্য ফি বছর ইনক্রিমেন্ট ও বার্ষিক বোনাসের নিয়ম চালু হচ্ছে। কালেকশনের জন্য দেশ বিদেশে সফর হচ্ছে। মাদরাসার ওয়াজের এক কালারের পোস্টার চার কালার হচ্ছে। অফিসে এসি সংযুক্ত হচ্ছে। কোনো কোনো জায়গায় মুহতামিম সাহেব ও মাদরাসার প্রয়োজনে গাড়ি কেনা হচ্ছে। এ গুলো কি সংস্কার নয়? পারিপার্শিক পরিস্থিতির কারণে, দীনের স্বার্থে ও মাদরাসার প্রয়োজনে আবশ্যকভাবে এসব সংস্কার হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। এসব ক্ষেত্রে আকাবিরদের ১০০% অনুসরণ কাম্য নয়। তবে যে ক্ষেত্রে আকাবিরদের ১১০% অনুসরণ করতে হবে এবং যেখানে সংস্কারের ছোঁয়াও লাগতে পারবে না তা হলো কিতাবপত্র ‘শিক্ষাক্রম ও সিলেবাস’।
তিনশ বছর আগের কলমি নুসখার আকসি কিতাব। জ্যামিতিক ডিজাইনের হাশিয়া। নিম্ন মানের কাগজ । এক কালার ছাপা। অনুশীলনহীন পাঠ্যপুস্তক। এগুলোতে কোনো পরিবর্তন ও সংস্কার চলবে না।
প্রচলিত নাহু সরফের কিতাবগুলোর মাধ্যমে ৮০ ভাগ ছাত্র নাহু সরফ না বুঝলেও এ নিয়ে বিকল্প কোনো চিন্তা নেই। কেন বুঝতে সক্ষম হচ্ছে না? বুঝানোর সমকালিন কোনো পদ্ধতি আছে কিনা এ নিয়ে সমন্বিত ও প্রাতিষ্ঠানিক কোনো গবেষণা নেই। নাহুর প্রাথমিক নিয়মনীতিগুলোর প্রায়োগিক যোগ্যতা যাদের নেই তাদেরকে গেলানো হচ্ছে কাফিয়ার ‘হাওয়ায়ি’ তাকরির কিংবা শরহেজামির গূঢ়গম্ভীর ও তাত্ত্বিক আলোচনার দিল্লী কা লাড্ডু। এ কেমন আজব মানসিকতা আমাদের? আসুন একটু ভাবি।