কমাশিসা ঢাকা ডেস্ক:
সিলেট আজাদ দ্বীনী এদারার সম্মানিত সেক্রেটারি জেনারেল, আল্লামা আব্দুল বাসিত বরকতপুরি দামাত বারাকাতুহুমকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো যে, ্আপনারা কেন বেফাকের সাথে একীভূত হন না? প্রতিউত্তরে তিনি বললেন যে, বেফাকের কী এমন আহামরি বৈশিষ্ট্য আছে যাতে আমাদের একীভূত হতে হবে? আমরা ‘বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড’র নামে নতুন বোর্ডের অধীনে সংস্কার ও স্বীকৃতির পক্ষে। বেফাকের এগুঁয়েমী আর দাদাগীরিতে নই। বেফাকের সদিচ্ছা নেই। ছোট বোর্ডগুলোকে বেফাক গোলাম হিসাবে দেখতে চায়! আজপর্যন্ত সহীহ নিয়তে আমাদের তারা আহব্বান করেনি। বড় বোর্ড হিসাবে তাদের অহমিকা যেমন তেমন কিন্তু কাজের বেলায় অদুরদর্শিতার অভাব। কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি এবং সংস্কারের পক্ষে অক্ষুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করে তিনি বলেন- আমরা প্রজন্মদের স্বার্থে যুগচাহিদা মোতাবিক কওমি মাদরাসাকে ঢেলে সাজাতে বদ্ধপরিকর।
সিলেটের আজাদ দ্বীনী এদারা, চট্টগ্রামের তানজিমুল মাদারিস, গওহরডাঙ্গার বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া, উত্তর বঙ্গের কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড সহ ডজনের কাছা কাছি কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডগুলো স্বীকৃতির পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রায় শতাধিক বেফাক সদস্যভুক্ত টাইটেল মাদরাসার সম্মানিত মুহতামিমগণ স্বীকৃতির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তারা বলেন বেফাককে আমরা কোন দাসখত দেইনি যে বেরুতে পারবোনা। স্রোতের বিপরীতমূখী চলে বেফাক ভুল করছে। অদূর ভবিষ্যতে তাদের আফসোস ছাড়া করার কিছু থাকবেনা।
বেফাক কেন সংস্কার স্বীকৃতির বিপক্ষে?
মূলতঃ বেফাক এখন অলস এক জলহস্তিতে রূপান্তরীত হয়েছে। হাঙ্গর মার্কা খানি আর ঘুমানিই সার। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণের নামে সদস্যদের ফীস, গরীব ছাত্রদের কাছ হতে পরীক্ষা ফীস গ্রহন করতে করতে ইহা তাদের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তাদের সামনে কেবল ফীস বেতন বতনের চর্বি বর্ধন ছাড়া অন্য কিছু মাথায় ঢুকেনা। হেফাজতের ভুত বেফাকের মাথায় বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। জামাত বিএনপির বিটিমের কিছু লোক বেফাক কর্তৃপক্ষকে প্রভাবিত করে। বেফাক ২০ দলীয় রাজনীতির ঘেড়াকলে আটকে গেছে বলে অভিজ্ঞ মহলের আশংকা। বেফাকের অধিকাংশ অফিসিয়াল লোক যারা তারা সংস্কার বিরোধী। কারণ মেধা তালিকায় মকবুল কোনমতে জাইয়েদদের আধিক্য। পারিপার্শ্বিক বিষয় সম্পর্কে সম্পুর্ণ অনভিজ্ঞ। হজরত আহমদ শফী ও আব্দুল জববার জাহানাবাদী দামাত বারাকাতুহুম সহ আরো বুজুর্গ যারা আছেন তারা কেবল সাইনবোর্ড সর্বস্ব। অশীতিপর বৃদ্ধ্য এই মুখলিস ওলীদের নাম ভাংগিয়ে শেষ জীবনে তাদের বিতর্কের মাঝে ফেলে দিয়ে স্বার্থবাদীরা নিজেদের আখের ঘোচাতে ব্যস্ত।
জুড়াতালির চেয়ে নতুন করে পথচলা উত্তম!
বেফাক চায় বেহুদা গডফাদার হতে। ছোট ছোট বোর্ডগুলোকে একত্রে জুড়াতালি অসম্ভব।তাই ‘বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড’ নামে নতুন বোর্ড স্থাপিত হউক। বেফাক ঘুমতে থাকুক তার ময়দানে তীহে। ক্ষয়িষ্ঞু কওমি মাদরাসা গুলোকে বাঁচাতে হলে এবং তার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হলে সংস্কার স্বীকৃতির বিকল্প নেই।
আমাদের তরুণদের করণীয়
বুঝতে হবে সংস্কার আর স্বীকৃতি আমাদের বেঁচে থাকার সর্বশেষ সম্বল। স্বাধীন এই দেশে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে কওমির প্রজন্মরা অংশগ্রহন করলে দেশও জাতি অচিন্তনীয় উপকৃত হবে। ধর্মহীনতা থেকে যেমন জাতি বাঁচবে তেমনি বাঁচবে গোটা জাতির আদর্শ আখলাক ও সুস্থ সংস্কৃতি। সারা জনম ওয়াজ করে যে কাজ হচ্ছেনা কলমের এক খুচায় তা সম্ভব। তাই সংস্কার মানে নিজেকে উপযুক্ত করা। আর স্বীকৃতি মানে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহেনর বৈধপত্র বা সুযোগ প্রদান। প্রথম কাজ হবে তরুণদের মাঝে অনলাইন অফলাইন ঐক্যের আবহ তৈরি। কোন প্রকার স্বার্থের মোহে না পড়ে যোগ্য মেধাবী বিচক্ষণদের আগাইয়া আসতে দিন। সংস্কার স্বীকৃতির পক্ষে জোরালো আওয়াজ উঠাতে হবে। সংস্কার স্বীকৃতি নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের সহযোগিতা প্রদান। হাতে পায়ে ধরে হলেও কিছু মুরব্বি যারা বিরুধীতা করছেন তাদের বুঝানোর চেষ্টা করা। গালাগালি দোষারোপ কোনক্রমেই কাম্য নয়। হ্যাঁ যৌক্তিক কোন বিষয় বা ভুল সিদ্ধান্তের কথা আদবের সাথে সামনে নিয়ে আসতে হবে।