মামুন আব্দুল্লাহ:
৫০ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর অভিবাবক। দেশের সর্ববৃহৎ ক্বওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার কার্যক্রম নিয়ে অনিয়ম আর অসন্তোষের অন্ত নেই।বেফাক বছরে একবার ‘ছালানা ইমতেহান’ ছাড়া আর কোন দায়-দায়িত্বের ধার ধারে না বলে অভিযোগ আছে সংশ্লিষ্ট মাদরাসা সমূহের।
খবর নিয়ে জানা যায় বোর্ডের বেশির ভাগ কর্মকর্তাই বয়সের ভারে নুজ্য। কেউ কেউ স্বাভাবিক চলা ফেরা করতে ও অক্ষম।
এদের মধ্যে শাহ আহমদ শফী, নুর হুসাইন কাসেমী সহ অনেকেই হুইল চেয়ারের সঙ্গী।
এছাড়া বোর্ডের গঠনতন্ত্র অনুসারে নিষিদ্ধ হলেও বেফাকের মজলিসের আমেলার তালিকায় দেখা গেছে, জমিয়তের সহ-সচিব মাওলনা নূর হোসেন কাসেমী বেফাকের সহ -সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস বেফাকের সহ -সভাপতি, জমিয়তের সহ -সভাপতি মোস্তফা আজাদ বেফাক সহ-সভাপতি, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মনঞ্জুরুল ইসলাম বেফাকের আমেলার সদস্য, জমিয়তের সহকারী মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী বেফাকের আমেলার সদস্য, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মাসউদুল করিম বেফাকের আমেলার সদস্য, জমিয়ত ঘরানার আলেম আব্দুল ফাতাহ মোহাম্মদ বেফাকের আমেলার সদস্য ও বেফাক সহকারী মহাসচিব। অন্যদিকে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান বেফাক সহ -সভাপতি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুযুল হক বেফাকের আমেলার সদস্য ও বেফাক সহকারী মহাসচিব। খেলাফত মজলিস সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা জুবায়ের আহমেদ চৌধুরী বেফাকের আমেলার সদস্য ও বেফাক সহকারী মহাপরিচালকের দায়িত্বে আছেন অথচ বেফাকের গঠনতন্ত্রেই কোন দলের শীর্ষ নেতাদের কেউই কখনও বেফাকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল পদে থাকার বিধান নেই। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ, প্রশাসনিক দায়িত্বেও আছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই।
এছাড়া বাকি দায়িত্বশীলদের অনেকেই বিভিন্ন মাদরাসার পরিচালনা ও শিক্ষকতায নিয়োজিত। ফলে দেখা গেছে এসব কর্তাব্যক্তিরা কখনো মাদরাসার চাঁদা কালেকশনের জন্য দেশ বিদেশ সফরে, কেউ রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত, কেউ আবার ওয়াজ মাহফিলের প্রগ্রামে ঘুরছেন। বেফাকের মজলিসে আমেলা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এসব শত জঞ্জালী, বৃদ্ধ ও কর্মক্ষম লোক থাকার ফলে দীর্ঘদিন ধরে কওমী মাদ্রাসার সিলেবাস সংস্কার, ছাত্র-বৃত্তি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ পেনশন সহ বিভিন্ন দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছেনা। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে হাজার হাজার কওমী মাদ্রাসা ও এর লাখ লাখ শিক্ষক-শিক্ষার্থী। ক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে আসলাফ ও আকাবির এবং উম্মাহর ঘামে গড়া এই দ্বীনী প্রতিষ্ঠান।