সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ : গতকাল থেকে কওমী মাদরাসা সরকারী স্বীকৃতি নিয়ে ফেসবুক পাড়া উত্তাল । সেলিব্রিটি আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্ট্যটাস আর কমেন্টে আমার চোখে পরা উল্লেখযোগ্য কিছু মতামত। এর বাহিরে কি আর কোন কথা আছে? আমার জানা নেই।
সাইমুম সাদী : কোন সিস্টেমে, কারিকুলাম কি হবে এইসব বিষয়ে ফেসবুকে আলোচনা করা কঠিন। তবে আমরা যা চাই তা হল স্বকীয়তা অক্ষুন্ন রেখে স্বীকৃতি। আওয়ামীলীগ নাকি বিএনপি দিল তা বড় কথা নয়। আপনি চাচ্ছেন একটি রাস্তা যা দিয়ে হেটে আপনি হাইওয়েতে উঠতে পারেন। এখন এই রাস্তা কে দিল ছলিমুদ্দিন নাকি কলিমুদ্দিন এটা দেখা কি খুব জরুরী?
জিয়া রাহমান : কওমি মাদরাসার উপর খবরদারি করতে চাইলে সরকার এমনিতেই করতে সক্ষম৷ সরকারের সেই ক্ষমতা আছে এবং সুন্দর প্রসেসও জানা আছে৷ তাই স্বীকৃতি আনতে খবরদারির ভয় করে লাভ নেই৷ বরং সুনির্দিষ্ট শর্তের উপর স্বীকৃতি গ্রহণ হবে কওমিওয়ালাদের জন্যে বাড়তি পাওয়া৷ অন্তত লুকিয়ে-ছাপিয়ে রিফিউজিদের মতো ভাসমান অবস্থায় আলিয়ায় পরীক্ষা দেওয়ার মানবেতর পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে৷
রাশিদ জামিল : বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ কওমি সন্তানের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পছন্দ করা কওমি মাদরাসা কেন্দ্রীক বাণিজ্যিক বোর্ডগুলোর মধ্যে সবচে’ প্রভাবশালী বোর্ডের নাম ‘বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যা’। অবশ্য তাদের মাদরাসাগুলো থেকে ১০% ছাত্রও আরবিতে ব্যুৎপত্তি অর্জন করে বেরোয়; এমন অভিযোগ বেফাকের দুশমনও করতে পারবে না!! তাহলে নামের সাথে কামের যোগসূত্র কই?
বেফাকের নাম থেকে ‘আরাবিয়্যা’ বাদ দেয়া হোক আর না হয় স্ট্যাটিস্টিক্যাল বাস্তবতা আমলে নিয়ে নামকরণ করা হোক ‘বেফাকুল মাদারিসিল উরদুউয়্যা’!
অন্যান্য বোর্ডগুলোর আওতায় থাকা মাদরাসাগুলোতে আরবিয়্যাতের অবস্থা বেফাকেরচে’ ব্যতিক্রম, কেউ যেনো আবার এই ধোঁকা না খেয়ে বসেন! রসুন একটাই। যার যার তরকারির জন্য ভেঙে কোষ কোষ করা হয়েছে।
স্বীকৃতি চান না বেফাক মহাসচিব! এতদিন তিনি কোন গ্রহে বাস করছিলেন, কে জানে! আমরা স্বীকৃতি চাই। কেনো চাই সেটার ব্যাখ্যা করে আসছি ১৯ বছর থেকে। তিনি স্বীকৃতি চান না! কেনো চান না, মহাসচিব মহোদয় কি দয়া করে একটু ব্যাখ্যা করবেন? অথবা মহাসচিবের হয়ে বোর্ডের কেউ?
মাওলানা লাবীব আব্দুল্লাহ : শিক্ষাবোর্ডের জেলা কমিটি হয়! শিক্ষাবোর্ড কি রাজনৈতিক দল? শিক্ষাবোর্ডের আবার মহাসচিবও! স্কুল কলেজের বোর্ডের কি এই জাতীয় পদ ও জেলা কমিটি থাকে?
এহসান বিন মুজাহির : আমাদের হাজার হাজার ছেলে চুরি করে আলীয়া মাদরাসায় পরিক্ষা দেয়। গোপনে পড়ালেখা করে। বহিস্কারের ভয়। ফলে তাদের অনেকের উভয় কূল ই হারাচ্ছে। না হচ্ছে কওমীতে পড়া না আলীয়ায়। তাদের বাঁচাতে স্বীকৃতির বিকল্প নেই। ভারত পাকিস্তানের কওমী শিক্ষার সরকারী স্বীকৃতি থাকলে আমাদের থাকতে বাঁধা কোথায়।
নোমান আহমদ : রাজপথে শায়খুল হাদীস অন্নেষন করলেন। বিএনপির কেউ চারদিনের ভেতর দেখতে এলো না। প্রহসনের ঘোষনা দিল ভোটের রাজনীতির জন্য। তাদের ঘারে জামাত ছিল। তারা চায় না কওমীর স্বীকৃতি। তাহলে আলীয়াতে তাদের প্রডাকশন বন্ধ হয়ে যাবার ভয়ে। আর আওমীলীগ, কমিশন করেছে, মন্ত্রী সভায় তুলেছে। বিল পাশ করেছে। কিন্তু আমরা এখন নিতে চাই না। কারন বেফাকের ঘারে ১৮ দলের ভুত চেপে বসেছে।
ইকবাল মাহমুদ : একজন ফরীদ উদ্দীন মাসউদ আওয়ামী লীগকে বুঝিয়ে, প্রভাব সৃষ্টি করে কওমী স্বীকৃতির ব্যাপারে যতটুকো করতে পারছেন, কয়েকশ জোট নেতা বিএনপির গোলামী, চামচমী আর দরবারে একযুগ ঘুর ঘুর করেও সে প্রভাব আর পরিবেশ তৈরি করতে পারেন নি। ব্যর্থ হয়েছেন মোনাফেকদের কাছে চরম পর্যায়ে। এখন সরকারি পক্রিয়া শেষের পথে তাই সিদ্ধান্ত সময় থাকতে নিতে হবে। বিএনপির কাছ থেকে স্বীকৃতি নিব! সেই স্বপ্ন আপনাদের স্বপ্নই থেকে যাবে, বাস্তব হবে না কখনো।
রুহুল আমিন নাগরি : আমরা স্বকীয়তা বজায় রেখে স্বীকৃতি চাই। কে দিল এটা দেখার বিষয় নয়। বিএনপি না আওয়ামীলীগ। আমাদের কাছে দুটিই সমান। আলেমদের বিষয়টা বুঝা উচিত।
লিয়াকত আলী মাসউদ : স্বীকৃতির মাঝে যদি এতই খারাবী থাকে তাহলে বিগত সরকারের আমলে আমাদেরকে প্রলুব্ধ করেছিলেন কেন ? আপনার পদ পদবির কথা ভাবছেন ? অসংখ্য অগণিত তালিবে ইলমদের পদ পদবির আসন সুগম করার লক্ষ্যে আপনারটা না হয় হারালেনই ৷ আপনি ত্যাগের মহিমায় চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন…………
মোস্তফা কামাল : কেউ কেউ বলছেন,খুনীর হাত থেকে স্বীকৃতি চাই না। এটা হবে শাপলার শহীদদের সাথে বেঈমানী। কিন্তু হাসিনার কাছ থেকে শাপলা ক্রাকডাউনের পর বিলিয়ন টাকার রেলের জমি মাদরাসার জন্য বরাদ্দ নিলে সেটা হয় দরকারি। কিন্তু লাখ লাখ কওমী মাদরাসার ছাত্রের প্রযোজনীয় বিষয়টি দরকারি হয় না। তাদের উন্নায়নের জন্য যে কথা বলেন, সে তখন দরবারি হয়ে যান। তুমি করলে হালাল আর আমি করলে হারাম।